শিরোনাম

অবশেষে সেই সায়েমের আশ্রয় হলো শিশু পরিবারে 

ওসমান গণি, লক্ষিপুরঃ

ছোট্ট বেলায় মা মরি গেছে। আব্বা আবার বিয়া করছে। -মা (সৎ মা) আমারে শুধু মা রে। বালা খাওন দেয় না। আব্বাও কিছু কয় না। দেখেন আমার শরীরে দাগ লাগি আছে। আমি পুলিশের সাথে থাকুম। পুলিশের চাকরি করুম। আর বাড়ি যামু না। আবার আমারে মারবো এ বলে বুক ফুলিয়ে কাঁদতে কাঁদতে আদালতে চলে গেছে শিশু সায়েম।” গত ৬ দিন পুলিশ হেফাজতে থাকার পর বুধবার সকালে (৫ আগষ্ট)  সায়েমকে আদালতে সোপর্দ করা হয়। পিতা না আসায় বিচারক  সায়েমকে শিশু পরিবারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

প্রসঙ্গত- গত শনিবার (১ আগষ্ট) ঈদের দিন বিকালে ৪টার সময় থেকে লক্ষ্মীপুরের রায়পুর থানার ওসি তার পরিবারের কাছে রেখেছিলেন। অসহায় শিশু সায়েম জেলার সদর উপজেলার পালেরহাটের মুক্তারামপুর গ্রামের কালু মিয়া ও মৃত কুলসুমার ছেলে। তার সৎ মা স্বপ্না বেগম।।।

 

পুলিশ জানান, প্রায় দেড় বছর বয়সে শিশু সায়েম তার মা’কে হারান। তার কয় মাস পর সায়েমের বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করেন। সৎ মা শিশু সায়েমকে সহ্য করতে না পেরে মানুষিক ও শারিরিক নির্যাতন করে। এছাড়াও অনাহারেও থাকতে হয় শিশুটিকে। দিনমজুর বাবা এসব দেখেও কিছুই বলার সাহস পায়নি।

অবশেষে নিরুপায় সায়েম ৪ বছর বয়সে বাবার ঘর ছেড়ে বিভিস্থানে ঘুরে বেড়াচ্ছে। গত বুধবার রাতে সায়েম থানা মসজিদের সিঁড়ির সামনে ঘুমিয়ে ছিলো। মসজিদের কয়েকজন মুসুল্লি সায়েমকে দেখে থানায় নিয়ে আসেন। রায়পুর থানার ওসি সদর থানার ওসি’র মাধ্যমে সায়েমকে নিয়ে যেতে তার বাবাকে সংবাদ দিলে সে আসেনি। কিন্তু সায়েম গত ৩ দিন পুলিশের আশ্রয় রয়েছেন ও ভালোবাসায় মগ্ধ।

শিশু সায়েম বলেন, “আমি থানা থাইক্কা কোনানো যামু না। পুলিশের কাছে থাকুম। আমিও বড় হয়ে পুলিশ হমু। স্যারেরা আমারে অনেক আদর করছে। বালা খাওন দিছে। বাড়ীতে গেলে আবার আমারে মারবো ‘মা’ (সৎ মা)। আব্বা কিছু কয় না। আর বাড়ীতে যামু না।”

রায়পুর থানার ওসি আব্দুল জলিল বলেন, মা হারা নয় বছরের শিশু সায়েম গত ৬ দিন আমার কাছে ছিলো। তার বাবাকে সংবাদ দিলেও সে আসে নাই। সৎ মা’র অত্যাচারে শিশুটি চার বছর থেকে রাস্তায় রাস্তায়-ঘুরছে। আদালতের মাধ্যমে সায়েমকে জেলা শিশু পরিবারে পাঠানো হয়েছে। শিশুটির জন্য কষ্ট লাগছে। সে আমাদের ছেড়ে যেতেই চাচ্ছে না।-বাবা থেকেও নাই। কত নিষ্ঠুর তারা।।

নিউজটি শেয়ার করুন :