ওলামা কণ্ঠ ডেস্ক:
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাট পৌর ভবনের সামনে দরিদ্রদের মধ্যে অসহায় ঈদুল আজহা উপলক্ষেশাড়ি ও লুঙ্গি বিতরণকালে এক বৃদ্ধকে ঘুষি মারেন সেতুমন্ত্রীর ছোট ভাই আবদুল কাদের মির্জা।
আজ ১৬ জুলাই শুক্রবার সকালে হতদরিদ্র বৃদ্ধকে ঘুষি মেরে আবারও আলোচনায় নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা। শাড়ি ও লুঙ্গি বিতরণকালে এ ঘটনা ঘটে। এরপর ওই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।
কাদের মির্জার শাড়ি ও লুঙ্গি বিতরণের অনুষ্ঠানটি সরাসরি তাঁর ফেসবুকে লাইভ করা হয়। তাতে দেখা যায়, সারিবদ্ধভাবে দাঁড়ানো নারী-পুরুষের মধ্যে শাড়ি ও লুঙ্গি এবং নগদ টাকা বিতরণ করছেন কাদের মির্জা। ২০ মিনিট ৫৮ সেকেন্ড ওই লাইভটি প্রচার করা হয়। ওই অনুষ্ঠান লাইভের ১৭ মিনিট ৩১ সেকেন্ডের সময় ষাটোর্ধ্ব এক বৃদ্ধ কাদের মির্জার সামনে এলে তাঁকে একটি শাড়ি দেওয়া হয়। ওই বৃদ্ধ হাতে নেওয়ার পর পাঁচ-ছয় সেকেন্ডের মাথায় সেটির পরিবর্তে আরেকটি শাড়ি নেওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় কাদের মির্জা বৃদ্ধের বুকে ঘুষি দিয়ে তাঁকে সরিয়ে দেন।
এ ঘটনার প্রায় ৩৫ সেকেন্ডের পর পাশের কেউ একজন এ বিষয়ে কাদের মির্জাকে কিছু বলেন। এ সময় একটি শাড়ি হাতে নিয়ে ওই ব্যক্তির দিকে ছুড়ে মারেন কাদের মির্জা। লাইভ থেকে কেটে নেওয়া ৬ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। একজন বৃদ্ধকে এভাবে প্রকাশ্যে অপদস্থ করার ঘটনায় কোম্পানীগঞ্জসহ গোটা নোয়াখালীর মানুষ ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও এ নিয়ে নানা সমালোচনামূলক মন্তব্য দেখা যায়।
ওই বৃদ্ধের বুকে ঘুষি মারার ঘটনার বিষয়ে জানতে শুক্রবার রাত সোয়া আটটায় বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জার মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও তা ব্যস্ত পাওয়া যায়। এরপর পৌরসভার ল্যান্ডফোনে কল করা হলেও তিনি ধরেননি। পরে এ বিষয়ে কাদের মির্জার ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ইস্কান্দার হায়দার চৌধুরীর সঙ্গে কথা হয়। তিনি ঘটনাটি শোনেননি। তাঁর ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার কথা ছিল। তিনি এসব অনুষ্ঠানে যান না।’
কাদের মির্জার ফেসবুকের ওই লাইভে শুক্রবার রাত আটটা পর্যন্ত ২০৪ জন নানা মন্তব্য করেছেন। এমডি রুবেল হাজারী নামের একজন লেখেন ‘একটা অসহায় লোকের বুকে আঘাত করা ঠিক হয়নি।’ আলাউদ্দিন মোল্লা নামে একজন মন্তব্য করেছেন, ‘বিতরণ করেন ভালো কথা, কিন্তু গরিবের গায়ে হাত দেন কেন?’
এই বিষয়ে কাদের মির্জার প্রতিপক্ষ ও ভাগনে উপজেলা আওয়ামী লীগের মুখপাত্র মাহবুবুর রশিদ বলেন মানুষকে অপমান করা, বেইজ্জতি করা এটা কাদের মির্জার কাছে নতুন কিছু না। তিনি ত্রাণ দেওয়ার নামে চাঁদাবাজি করছেন। আবার ত্রাণ বিতরণের নামে মানুষকে অপমান–অপদস্থ করছেন।’