বুয়েটের মেধাবী ছাত্র আবরারের নির্মম হত্যাকান্ড নিয়ে এখন শুধু দেশে নয় আন্তর্জাতিক মিডিয়ায়ও জোরেশোরে আলোচনা হচ্ছে। জাতিসংঘ এবং যুক্তরাজ্য ঘটনার নিন্দা জানিয়ে এবং সুষ্ঠু বিচার প্রত্যাশা করে বিবৃতি দিয়েছে। আন্তর্জাতিক অনেক মানবাধিকার সংস্থা বাংলাদেশের মানবাধিকার এবং বাক-স্বাধীনতা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে।
ঘটনাটি স্রেফ তুচ্ছ রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে সংঘটিত হয়নি। তাই ঘটনাটির গভীরতা নিয়ে দেশপ্রেমিক সচেতন মহলকে গভীরভাবে ভাবতে হবে।
ছাত্রলীগ সাধারণত যেসব কারণে প্রতিপক্ষের উপর চড়াও হয়, আবরার এর মাধ্যমে কি তেমন কিছু সংঘটিত হয়েছে? আবরার ফেসবুকে যে স্ট্যাটাস দিয়েছে, তাতে কি ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগ, প্রধানমন্ত্রী বা সরকারকে তীব্রভাবে কোন আক্রমণ করেছে? বুয়েটে ছাত্রলীগের আধিপত্য বিস্তারে আবরার কি কোন অন্তরায় ছিল?
আবরারের কি কোন ছাত্রলীগ নেতার সাথে বিরোধ ছিল? আসলে আবরারের উপর উত্তেজিত হওয়ার মতো তেমন কোনো উল্লেখযোগ্য কারণই ছিল না, যে কারণে আবরারকে ছাত্রলীগ প্রহার করতে পারে।
তাহলে কেণ, ছাত্রলীগ আবরারকে নির্মমভাবে প্রহার করে মেরে ফেললো? আবরারের ফেসবুকের যে স্ট্যাটাসের কথা আলোচিত হচ্ছে, সেখানে কারো প্রতি কোন আক্রম বা বিদ্বেষ নেই। সেখানে রয়েছে গভীর দেশ প্রেম এবং প্রবল যুক্তি।
তাহলে কি দেশপ্রেমিক তারুণ্যের কণ্ঠ স্তব্ধ করার জন্যে এবং দেশপ্রেমিকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ানোর জন্যে ছাত্রলীগকে ব্যবহার করে আবরার কে কেউ হত্যা করিয়েছে? যদি তাই হয়ে থাকে, তাহলে আবরার হত্যাকাণ্ডটি সাধারণ কোন হত্যাকান্ড নয়, বরং আমাদের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে হত্যা করার পূর্বাভাস। অতএব, শুধু কয়েকজন ভারাটিয়া খুনিকে শাস্তি দিলেই আবরার এর প্রতি সুবিচার হবে বলে মনে করার কোন কারণ নেই।
বরং আবরারকে খুনের পেছনে যে আধিপত্যবাদী শক্তির হাত রয়েছে, সেই আধিপত্যবাদী শক্তির বিরুদ্ধে যদি আমরা কার্যকর প্রতিরোধ গড়ে তুলতে না পারি, তাহলে আবরারের মতো আমাদের স্বাধীনতারও জানাজা হবে।