শিরোনাম

আল্লাহর গজব করোনা: মাওলানা সাইফুদ্দিন  (পর্ব-০১)

 

যুগে যুগে এমন অনেক আল্লাহ প্রদত্ত গজব নাযিল হয়েছে বিভিন্ন জাতির উপরে। পরিপূর্ণ ভাবে তাদেরকে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে, নিশ্চিহ্ন করে দেয়া হয়েছে পৃথিবীর মানচিত্র থেকে।
নিশ্চয়ই তুমি, আমাদেরকে তাদের দলে অন্তর্ভুক্ত করো না, যাদের উপর থেকে তুমি রহমত তুলে নিয়েছো, যাদেরকে তুমি ধ্বংস করে দিয়েছো। নিশ্চয়ই তুমি, আমাদেরকে ক্ষমা করবে, আমরা তোমার রহমতের আশায়, তোমার করুণা ভিক্ষার আশায় অসহায়ের মত দিনাতিপাত করছি।

একে একে সকল মসজিদ গুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, দ্বীনের দাওয়াত বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, মক্কা-মদিনায় মুসলমানদের প্রবেশ নিষিদ্ধ হয়ে যাচ্ছে, ওমরাহ, হজ্জ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। তুমিতো সকল কিছুর মালিক, নিয়ন্ত্রণকারী। নিশ্চয়ই, নোবেল করোনা ভাইরাস তোমার আদেশেই এসেছে এবং তোমার আদেশেই ফিরে যাবে। আমরা সেই শুভ দিনের প্রত্যাশায় তোমার মুখ চেয়ে বসে আছি, করুণা করো প্রভু।
করোনা ভাইরাস -এই জাতীয় মহামারি কেন আসে?
{فَكُلًّا أَخَذْنَا بِذَنْبِهِ فَمِنْهُمْ مَنْ أَرْسَلْنَا عَلَيْهِ حَاصِبًا وَمِنْهُمْ مَنْ أَخَذَتْهُ الصَّيْحَةُ وَمِنْهُمْ مَنْ خَسَفْنَا بِهِ الْأَرْضَ وَمِنْهُمْ مَنْ أَغْرَقْنَا وَمَا كَانَ اللَّهُ لِيَظْلِمَهُمْ وَلَكِنْ كَانُوا أَنْفُسَهُمْ يَظْلِمُونَ (40)} [العنكبوت: 40]

আমি প্রত্যেককেই তার অপরাধের কারণে পাকড়াও করেছি। তাদের কারও প্রতি প্রেরণ করেছি প্রস্তরসহ প্রচন্ড বাতাস, কাউকে পেয়েছে বজ্রপাত, কাউকে আমি বিলীন করেছি ভূগর্ভে এবং কাউকে করেছি নিমজ্জত। আল্লাহ তাদের প্রতি যুলুম করার ছিলেন না; কিন্তু তারা নিজেরাই নিজেদের প্রতি যুলুম করেছে। [সুরা আনকাবুত: ৪০]

ভাল মানুষ থাকার পরও আল্লাহ কেন গজব দেন।
قَالَتْ زَيْنَبُ بِنْتُ جَحْشٍ فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَنَهْلِكُ وَفِينَا الصَّالِحُونَ قَالَ نَعَمْ إِذَا كَثُرَ الْخَبَثُ
যায়নাব বিনতে জাহাশ (রাঃ) বলেন, তখন আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমাদের মধ্যে পুণ্যবান লোকজন থাকা সত্ত্বেও কি আমরা ধ্বংস হয়ে যাব? তিনি বলেন, হ্যাঁ যখন পাপকাজ অতি মাত্রায় বেড়ে যাবে। সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৩৩৪৬((বুখারীঃ ৩৩৪৬)

অশ্লীলতা যতছড়াবে মহামারি ততবাড়বে।
4019 – عن عبد الله بن عمر قال أقبل علينا رسول الله صلى الله عليه و سلم . فقال
Y (لم تظهر الفاحشة في قوم قط . حتى يعلنوا بها إلا فشا فيهم الطاعون والأوجاع التي لم تكن مضت في أسلافهم الذين مضو
যখন কোন জাতির মধ্যে প্রকাশ্যে অশ্লীলতা ছড়িয়ে পড়ে তখন সেখানে মহামারী আকারে প্লেগরোগের প্রাদুর্ভাব হয়। তাছাড়া এমন সব ব্যাধির উদ্ভব হয়, যা পূর্বেকার লোকদের মধ্যে কখনো দেখা যায়নি।
[৩৩৫১](ইবনে মাজাহঃ৪০১৯)

মহামারি থেকে বাচার জন্য কিকি দুআপড়বেন।
اللَّهُمَّ إني أعُوذُ بِكَ مِنَ البَرَصِ وَالجُنُونِ وَالجُذَامِ، وَسَيِّءِ الأسْقامِ
“হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে আশ্রয় চাই শ্বেত, উন্মাদনা, কুষ্ঠ এবং সমস্ত দুরারোগ্য ব্যাধি হতে।
” সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ১৫৫৪হাদিসের মান: সহিহ হাদিস (আবুদাউদঃ১৫৫৪)

اللَّهُمَّ إني أعُوذُ بِكَ مِنَ الهَدْمِ، وأعُوذُ بِكَ مِنَ التَّرَدِّي، وأعُوذُ بِكَ مِنَ الغَرَقِ وَالحَرَقِ وَالهَرَمِ، وَأعُوذُ بِكَ أن يَتَخَبَّطَنِي الشَّيْطانُ عِنْدَ المَوْتِ؛ وأعُوذُ بِكَ أنْ أمُوتَ فِي سَبِيلِكَ مُدْبِراً، وأعُوذُ بِكَ أن أمُوتَ لَديغاً
“হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে চাপা পড়ে মৃত্যুবরণ হতে আশ্রয় চাই, আশ্রয় চাই গহ্বরে পতিত হয়ে মৃত্যুবরণ হতে, আমি আপনার নিকট হতে আশ্রয় চাই পানিতে ডুবে ও আগুনে পুড়ে মৃত্যুবরণ হতে এবং অতি বার্ধক্য হতে। আমি আপনার নিকট আশ্রয় চাই মৃত্যুকালে শাইত্বানের প্রভাব হতে, আমি আশ্রয় চাই আপনার পথে জিহাদ থেকে পলায়নপর অবস্থায় মৃত্যুবরণ করা হতে এবং আমি আপনার কাছে আশ্রয় চাই বিষাক্ত প্রানীর দংশনে মৃত্যুবরণ হতে।  ” সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ১৫৫২হাদিসের মান: সহিহ হাদিস

মহামারী রোগ কেনো আসে?
মানুষের কৃত পাপের কারণে, বিশেষ করে শিরক, কুফর, অশ্লীলতার মতো কবীরাহ গুনাহর কারণে দুনিয়াতে আল্লাহ আযাব-গজব নাযিল করেন।
মহান আল্লাহ বলেন,
ظَہَرَ الۡفَسَادُ فِی الۡبَرِّ وَ الۡبَحۡرِ بِمَا کَسَبَتۡ اَیۡدِی النَّاسِ لِیُذِیۡقَہُمۡ بَعۡضَ الَّذِیۡ عَمِلُوۡا لَعَلَّہُمۡ یَرۡجِعُوۡنَ ﴿۴۱﴾
অর্থঃ মানুষের কৃতকর্মের কারণে জলে স্থলে বিপর্যয় দেখা দিয়েছে, যাতে তিনি তাদেরকে তাদের কোন কোন কাজের শাস্তি আস্বাদন করান, যাতে তারা (অসৎ পথ হতে) ফিরে আসে। সুরা আর-রুমঃ ৪১।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “যখন কোন জাতির মধ্যে প্রকাশ্যে অশ্লীলতা ছড়িয়ে পড়ে তখন সেখানে মহামারী আকারে প্লেগ রোগের প্রাদুর্ভাব হয়। তাছাড়া এমন সব রোগ-ব্যাধির উদ্ভব হয়, যা পূর্বেকার লোকেদের মধ্যে কখনো দেখা যায়নি।” সুনানে ইবনে মাজাহঃ ৪০১৯, শায়খ আলবানী রহি’মাহুল্লাহ হাদীসটিকে হাসান বলেছেন।

বলতে পারেন মহামারীতে কি খাঁটি মুমিন মারা যায়?দেখুন বিস্তারিত।প্রশ্নের অবসান ঘটবে।
ইসলামে প্রসিদ্ধ প্লেগ মহামারী ৭ বার হয়েছে।
প্লেগ হিজরতের ছয় বছর পরে রাসূল(সাঃ)
এর যুগে মাদায়েনে হয়েছে।তাকে শাইরুরা
বলা হয়।

১৮ হিজরীতে হযরত ওমর(রাঃ)এর সময় শামদেশে হয়েছে।তাতে ২৫হাজার মানুষ মৃত্যু
বরণ করেছে।হযরত আবূ উবায়দা ইবনুল-
জাররাহ,মা’আজ ইবনে জাবাল তাদের স্ত্রী ও
সন্তান তাতে মৃত্যু বরণ করেন।তাকে মহামারী-
আমওয়াস বলা হয়।আমওয়াস একটি গ্রামের-
নাম,যা বায়তুল মুকাদ্দাস ও রমলার মধ্যখানে
অবস্থিত।

নিউজটি শেয়ার করুন :