ইখতিয়ার উদ্দীন আজাদ:
পবিত্র কোরআনে বর্ণিত “আবাবিল পাখি” যেভাবে আব্রাহার হস্তী বাহিনীকে ধ্বংস করেছিল মক্কা নগরীতে অবস্থিত কাবা শরীফের ধর্মীয় ভাবগম্ভীর্য ও পবিত্রতায় মুগ্ধ হয়ে মানুষ যখন দলে দলে কাবা ঘরের দিকে আসতে থাকে, তখন ইয়েমেনের রাজা আব্রাহা ঈর্ষাণিত হয়ে কাবা ঘর ধ্বংস করার পরিকল্পনা করেন (নাউজুবিল্লাহ)। আব্রাহা এই উদ্দেশ্যে ৬০ হাজার সৈন্য ও কয়েক হাজার হাতি নিয়ে মক্কার দিকে রওয়ানা হন।
সে সময় মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর দাদা আব্দুল মুত্তালিব ছিলেন মক্কার সবচেয়ে বড় সর্দার। তিনি বলেন, আবরাহার সাথে যুদ্ধ করার শক্তি আমাদের নেই। এটা আল্লাহর ঘর, তিনি চাইলে তাঁর ঘর রক্ষা করবেন। যখন আব্রাহার হস্তী বাহিনী নিয়ে মসজিদুল হারাম শরীফের কাছাকাছি পৌছান তখন আল্লাহ হাজার হাজার আবাবিল পাখি প্রেরণ করেন।
পাখিগুলো আল্লাহর নির্দেশে পায়ের তালুতে ২ টি ও মুখের মধ্যে ১ টি করে পাথর নিয়ে আব্রাহারের হাতি বাহিনীর উপর নিক্ষেপ করতে থাকে এবং তাদের পুরোপুরি ধ্বংস করে দেয়। হযরত ইবনে আব্বাসের বর্ণনা মতে, যার ওপরই পাথরের কণা পড়তো তার সারা গায়ে ভীষণ চুলকানি শুরু হতো এবং চুলকাতে চুলকাতে চামড়া ছিঁড়ে গোস্তো ঝরে পড়তে থাকতো।
গোস্তো ও রক্ত পানির মতো ঝরে পড়তো এবং হাড় বেরিয়ে পড়তো। এবং সেই জালিম আবরাহার অবস্থা ও একই রকম হয়ে পড়ে। এই ঘটনার কথা আল্লাহ পবিত্র কোরআনে সূরা আল ফীলে বর্ণনা করেছেন। পবিত্র কাবা শরীফে এখনও এই আবাবিল পাখি দেখা যায়। রাত গভীর হলে যখন চারদিকে নিস্তব্ধ হয়ে পড়ে তখন এই আবাবিল পাখির ডাক শুনা যায়। মসজিদের ছাঁদে ও মসজিদে হেরেমের মধ্যে এদের সুন্দর বাসা সকলের নজরে আসে।
প্রকৃতপক্ষে আবাবীল পাখির মতো ঝাঁকে ঝাঁকে বিশালাকার শিলাবৃষ্টির আঘাতে তারা ধ্বংস হয়েছে। যা সহজ সরল ও প্রাকৃতিক কথিত হয়, যে আবাবীল পাখি চড়ুই পাখির চেয়েও অনেক ক্ষুদ্র। তার দু পায়ে ও ঠোঁটে যে নুড়িপাথর বহন করতে পারে , তার আঘাতে মানুষ বা হাতির মৃত্যু এমনকি ঘাঁসের সাথে মিশে যাওয়া অবাস্তব কল্পনা মাত্র। আল্লাহর অসীম ক্ষমতা থাকতে স্ব প্রকৃতি বিরোধী কাজ করেন।