ডেস্ক রিপোর্ট: মাস্ক না পরার অপরাধে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পিতৃতুল্য বুদ্ধাকে কান ধরে দাঁড় করিয়ে মোবাইলে ছবি তোলা এটা কোন ধরনের শিক্ষার বহিঃপ্রকাশ তা জাতী জানতে চায়।
আজ (২৭ মার্চ ২০ ইং) শুক্রবার বিকেলে যশোরের মনিরামপুরে ম্যাজিস্ট্রেট সাইয়েমা হাসানের ভ্রাম্যমাণ আদালত এ সাজা দেয়। শুধু তাই নয়, কান ধরিয়ে দাঁড় করিয়ে রাখার পর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিজে ওই চিত্র তার মোবাইলে ধারণ করেন। রাতে এ ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে সামলোচনার ঝড় ওঠে।
জানা যায়, করোনাভাইরাস মোকাবেলায় লোকসমাগম না করতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাইয়েমা হাসানের নেতৃত্বে শুক্রবার বিকেল থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালত উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করেন। বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে চিনাটোলা বাজারে অভিযানের সময় ভ্রাম্যমাণ আদালতের সামনে পড়েন প্রথমে দুই বৃদ্ধ। এর মধ্যে, একজন বাইসাইকেল চালিয়ে আসছিলেন। অপরজন রাস্তার পাশে বসে কাঁচা তরকারি বিক্রি করছিলেন। কিন্তু তাদের মুখে মাস্ক ছিল না।
এ সময়, পুলিশ ওই দুই বৃদ্ধকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে হাজির করলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শাস্তি হিসেবে তাদেরকে কান ধরে দাঁড় করিয়ে রাখেন। তিনি নিজে আবার মোবাইল ফোনে এ চিত্র ধারণ করেন। এরপর, একজন বৃদ্ধ ভ্যান চালককেও অনুরূপভাবে কান ধরে দাঁড়িয়ে থাকার সাজা দেন। এ ছবি দ্রুতই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। অনেকেই বয়স্ক নাগরিকদের এভাবে সাজা দেয়াটাকে মেনে নিতে পারেননি। ভ্রাম্যমাণ আদালতের এমন দণ্ড প্রদানকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন।
জনমতের প্রশ্ন একজন বিচারক বা প্রশাসক’র এমন আচরণ কি করে হয়। এটা হীনমন্যতার পরিচায়ক ও ক্ষমতার বড়াই। মানুষকে এতটা নিচু মানসিকতায় নিয়ে যেতে পারে এটা ভাবতেও অবাক লাগে। বয়োবৃদ্ধ এই মানুষগুলো এদেশেরই নাগরিক। কোন কারণে হয়তোবা তারা ভুল করেছেন। আইন লঙ্ঘন করেছেন। তাই বলে এমন শাস্তি গ্রহণযোগ্য নয়।
ক্যামেরাধারী কর্মকর্তার মনে রাখা উচিত তিনি একজন প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী। এই খেটে খাওয়া মানুষগুলোর ট্যাক্সের পয়সায় তারা আজ অফিসার হয়েছেন। দামী গাড়ী হাকিয়ে চলেন, বিলাসবহুল ফ্ল্যাটে বসবাস করেন, এসি রুমে অফিস করেন। এটা কোন মানুষের আচরণ হতে পারেনা, বরংস অমানুশেষর আচারন!
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে দেশবাসীর প্রানের দাবী এই অমানুষকে উচিৎ শিক্ষা দিয়ে আইনের আওতায় এনে দেশের অভিভাবক হিসেবে আপনার কাছে ন্যায্য বিচারের প্রত্যাশায় রইলো।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। বয়স্ক নাগরিকদের এভাবে কান ধরিয়ে দাঁড় করার বিষয়টি দুঃখজনক বলে উল্লেখ করেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার আহসান উল্লাহ শরিফী। তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন বলে জানান।