এম.কলিম উল্লাহ, কক্সবাজারঃ
কক্সবাজারের উখিয়ার জালিয়াপালং ইউনিয়নের সোনাইছড়ি এলাকায় ছেলেকে গ্রেফতার করায় মায়ের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।নগতকাল ৩ মার্চ (শুক্রবার) বিকালে গত ২৯শে মার্চ সন্ধ্যায় ক্রিকেট টুর্নামেন্টকে কেন্দ্র করে সংগঠিত হামলায় ৩ যুবক আহতের ঘটনায় উখিয়া থানায় দায়েরকৃত মামলা নং ৪৫, তারিখ ৩১/৩/২০২০, ধারা- ১৪৩/ ৩৪১/ ৩২৩/ ৩২৫/ ৩২৬/ ৩০৭/ ৫০৬/ ৩৪।
উক্ত মামলায় তালিকা ভুক্ত আসামীদের গ্রেফতার করতে ইনানী পুলিশ ফাঁড়ীর সদস্যরা অভিযান চালিয়ে আহমদ শরীফকে আটক করে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, ঘটনার সাথে জড়িত জালিয়াপালং ইউনিয়নের সোনাইছড়ি গ্রামের আলী হোসেনের স্ত্রী ও আহমেদ শরীফের মা নুর নাহার বেগম ছেলেকে আটকের খবর পেয়ে স্ট্রোক করেন।
পরে হাসপাতালে নেওয়ার পথে মৃত্যুবরণ করেন।
উখিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে’র ভারপ্রাপ্ত আরএমও ডাঃ মেরাজ হোসেন চয়ন বলেন, মৃত অবস্থায় রোগী নিয়ে কোটবাজার অরিজিন হাসপাতালে আসেন। লাশের শরীরে আঘাতের কোন চিহ্ন পাওয়া যায়নি এবং হৃদক্রিয়া বন্ধ হয়ে রোগির মৃত্যু হয় বলে ধারনা করেন।
এদিকে আসামী আটক পরবর্তীতে উখিয়ার সোনাইছড়ি গ্রামের ইসলাম মিয়ার ছেলে শামসুল আলম সোহাগ ও বজল আহমদের পুত্র সানা উল্লাহ সহ আসামি পক্ষের সাথে বাদীপক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসময় উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে বলে স্থানীয় এবং পুলিশ সুত্রে জানা গেছে। সংঘর্ষ চলাকালে ৪ জনকে আটক করে পুলিশ। আটককৃতরা হলো, ইসলাম মিয়ার ছেলে জাফর আলম (৪৮), আলী আহমদের ছেলে মমতাজ মিয়া, মৌলভী ইসলামের ছেলে সিরাজ উল্লাহ (২৮), বদিউল আলমের ছেলে হাকিম আলী।
এতে আহতরা হলো, সোনাইছড়ি গ্রামের আমির হোসেনের ছেলে আবদুস কুদ্দুস (৪৫), আমির হোসেনের ছেলে ফরিদুল আলম (৪৭ হোসেন (২৫), মোঃ রনি (২১), মোহাম্মদ রাসেল (২২), সানা উল্লাহ (৪০), তার ভাই ও জাফর আলম। বাকীদের পরিচয় তাৎক্ষনিক পাওয়া যায়নি। আহতদের স্থানীয়রা উদ্ধার করে হাসপাতালে প্রেরণ করা হয় বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে ইনানী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিদ্ধার্থ সাহা বলেন, নিয়মিত মামলার এক আসামীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরে দুপক্ষের সংঘর্ষ শুরু হলে আরো ৪জনকে আটক করা হয়। তিনি আরো জানায়, ছেলে আটকের খবর পেয়ে আহমেদ শরীফের মায়ের হৃদক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। বিষয়টি মানবিক বিবেচনার জন্য তাৎক্ষনিক জেলা পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্টদের জানানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে জালিয়াপালং ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল আমিন চৌধুরী মারামারির ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আলী হোসেনের স্ত্রী নুর নাহারকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। তবে মহিলাটি কেন মারা গেছে তা আমি জানি না।
এ ব্যাপারে উখিয়া থানার ওসি (তদন্ত) নুরুল ইসলাম মজুমদার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ছেলে আটকের খবর পেয়ে মায়ের মুত্যুর বিষয়টি দু:খজনক। আসামীপক্ষের কেউ আসলে মানবিক দিক বিবেচনা করা হবে বলে তিনি জানান।