কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি: কাশ্মীরে ভারতীয় আগ্রাসনের প্রতিবাদে ৯ আগষ্ট শুক্রবার কিশোরগঞ্জে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। জুমার নামাযের পর ঐতিহাসিক শহীদি মসজিদ চত্ত্বর হতে মাওলানা আলমগীর হোসাইন এর নেতৃত্বে মিছিলটি গৌরাঙ্গ বাজার হয়ে কালীবাড়ী, আখড়াবাজার হয়ে আবার শহীদি মসজিদ চত্ত্বরে সমাবেশ করে।
সমাবেশে সভাপতি হাফেজ মাওলানা আলমগীর হোসাইন তালুকদার বলেন কাশ্মীরের চলমান পরিস্থিতি সম্পর্কে জেনে কোন মুসলমান নিশ্চুপ থাকতে পারেনা। সে পৃথিবীর যে প্রান্তের অধিবাসীই হোক না কেন পরাধীনতার যে কি যাতনা তা আমরা জানি। আগ্রাসী শক্তির অত্যাচারের বেদনা আমরা বুঝি। ‘৭১ পূর্ব হানাদার বাহিনী কর্তৃক হত্যা, ধর্ষণের শিকার আমরা হয়েছি। সেখান থেকেই আমরা পৃথিবীর সকল নিপীড়ন-নিষ্পেষনের বিরোধীতা করি। ‘৭১এর চেতনাই আমাদেরকে কাশ্মিরীদের পাশে দাড়াতে উদ্ভুব্ধ করেন। সেই চেতনা থেকেই আমরা কাশ্মীরের স্বাধীনতা চেয়ে রাজপথে বিক্ষোভ করছি। আমরা আজকের বিক্ষোভ থেকে কাশ্মীরের স্বাধীনতার জন্য সাধ্যানুযায়ী সহযোগীতা করার জন্য প্রস্তুত থাকার ঘোষণা করছি। পাশাপাশি ভারতের মোদি সরকারের এহেন অসাংবিধানিক হটকারী সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমরা প্রতিবাদের ভাষা হিসেবে বাংলাদেশ থেকে ভারতীয় সকল ধরণের পণ্য বর্জন করার জন্য দেশের সর্বস্তরের সচেতন নাগরিকদের প্রতি আহবান জানাই।
সমাবেশ ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কিশোরগঞ্জ জেলা শাখার সাংগঠনীক সম্পাদক মাওলানা নোমান আহমেদ বলেন ভারতবর্ষ যখন স্বাধীন হয় তখন বৃটিশ সরকার নিয়ম করে দিয়েছিল কাশ্মীর একটি স্বতন্ত্র রাষ্ট্র, এখানকার জনগণ সর্বদিক থেকে স্বাধীন। এমনকি এখানে কেউ জমিজমা ক্রয়, বহিরাগতরা নাগরিকত্বও নিতে পারবে না।
কিন্তু মোদি সরকার ৩৭০ ধারা পরিবর্তন করে নতুন করে সঙ্কট সৃষ্টি করেছে। কিন্তু ভারতের সংবিধানের ২-এর ক-খ ধারায় উল্লেখ আছে, কোন দেশকে কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে নিতে হলে প্রেসিডেন্ট অর্ডিনেন্স জারি করবে, এবং কাশ্মীরের জনগণের মতামত নিবে। কিন্তু এখানে তা করা হয়নি। সম্পূর্ণ অবৈধভাবে তাদের মৌলিক অধিকার কেড়ে নিয়েছে। বক্তারা বলেন, কাশ্মীর সঙ্কট শুধু কাশ্মীরেরই নয়, এ সঙ্কট বাংলাদেশেরও।
এজন্য বাংলাদেশের জনগণকে প্রতিবাদমুখর হতে হবে। তিনি বলেন, পাকিস্তানীরা যেভাবে আমাদের অধিকার কেড়ে নিয়েছিল, অনুরূপভাবে কাশ্মীরীদের অধিকারও মোদি সরকার কেড়ে নিয়েছে। সেখানে ১৪৪ ধারা জারি করেছে, স্কুল-কলেজ বন্ধ এমনকি ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়ে কাশ্মীরের মুসলিম রাজনৈতিক নেতাদের গ্রেফতার, গৃহবন্দি, সৈন্য সমাবেশের মাধ্যমে এক ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করে রেখেছে। সেখানে মানবাধিকার চরমভাবে লঙ্ঘিত হচ্ছে। এ ব্যাপারে বিশ্বনেতাদের উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন।
এছাড়াও সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেলা জয়েন্ট সেক্রেটারী মো: রুকন উদ্দিন, ইশা ছাত্র আন্দোলন কিশোরগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি এমদাদুল্লাহ, ইসলামী যুব আন্দোলন কিশোরগঞ্জ জেলা শাখার সেক্রেটারী মাওলানা জাকির হোসাইন, সাবেক ছাত্র নেতা মাওলানা নাজিমুদ্দিন। উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কিশোরগঞ্জ জেলা নেতৃবৃন্দসহ সকল অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীগণ।
উল্লেখ্য যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর আমীর পীর সাহেব চরমোনাই আহ্বানে কেন্দ্রীয় ঘোষিত কর্মসূচী হিসেবে সারাদেশ সংগঠনটি বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দেয় এবং এর ধারবাহিকতায় কিশোরগঞ্জে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে।