শিরোনাম

কুতুবদিয়ায় অমজাখালীসহ অমাবশ্যার জোয়ারে প্লাবিত ৩০টি গ্রাম

 

সিদ্দিক আহমদ আতিক, কক্সবাজার: কুতুবদিয়ায় অমজাখালীসহ অমাবশ্যার জোয়ারে বিলীন হয়ে গেছে প্রায় ৩০ টি গ্রামের বেড়িবাঁধ।

মাত্র ৫০০ মিটার বেড়িবাঁধ দিয়ে জোয়ারের পানি প্রবেশ করে দক্ষিণ মুরালিয়া, আজমকলনী, দক্ষিণ অমজাখালী, পূর্ব মুরালিয়া, কালাইয়া পাড়া, রোমাই পাড়া, কুমিড়া ছড়া, কালুয়ার ডেইল, ঘোনার মোড়, ঝাইতলা পাড়া প্রভৃতি এলাকায়।

এতে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো গত ৪ দিন ধরে দিন-রাতে দু‘বার জোয়ারে নি:স্ব হলেও ত্রান বা সহায়তা পায়নি কেউ। পরিবার গুলো অভিযোগ করেন, ত্রান আসলেও আমরা পাই না স্থানীয় প্রতিনিধিরা ত্রান বিক্রি করে ফেলে।

দক্ষিণ অমজাখালী ৪নং ওয়ার্ডে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায় একাধিক পয়েন্টে বেড়িবাঁধ নেই। অমাবশ্যার স্বাভাবিক জোয়ারের পানি মুহুর্তেই লোকালয়ে প্রবেশ করছে।

আরো ২ দিন জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করেন এলাকার সচেতন মহল।

আলী আকবর ডেইল (২,৩,৪,৫,৬,৭) নং ওয়ার্ডের এবং ১নং ওয়ার্ড়ের আংশিক যথাক্রমে তাবালের চর, আনিছের ডেইল, ঘাটকুল পাড়া, বায়ুবিদ্যুৎ, হায়দার পাড়া, পন্ডিতপাড়া, কাহারপাড়া, কাজীর পাড়া, সাইটপাড়া, জেলে পাড়া, কিদার পাড়া, সন্ধোপী পাড়া ব্যাপক এলাকা প্লাবিত হয়ে শত শত কাঁচা ঘর বাড়ি, শত শত হেক্টর ফসলি জমি এবং মৎস্য ঘের তলিয়ে গিয়ে ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে।

এই ব্যাপারে আলীআকবর ডেইলের চেয়ারম্যান নুরুচ ছাফা বি কম জানান, “বিশেষ করে বেশি ক্ষতি গ্রস্ত হয়েছে এই তিন এলাকা আলী আকবর ডেইল, বড়ঘোপ, উওর ধুরুং। আগে থেকে খোলা ছিল আলীআকবর ডেইলের বেড়িবাঁধ যেখানে ঠিকাদার পালিয়ে গেছে সেখানে আমরা কি করতে পারি। এখন আমরাও অসহায়। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে আমরা যতটুকু পারি ত্রান সামগ্রী বিতরণ করতেছি।”

তিনি বলেন, “যারা ত্রান বিক্রি করে ফেলার অভিযোগ করতেছেন তাদের অনুরোধ করব দয়াকরে কেউ গুজব সৃষ্টি করবেন না।”

এছাড়াও উত্তর ধুরুং কাইছার পাড়া, নয়াপাড়া, আকবরবলী ঘাট, ফয়জানি পাড়া, কালারমারপাড়া, কৈয়ারবিল ইউনিয়নের মলমচর, ঘিলাছড়ি, সিকদার পাড়া, মফজল পাড়া, সাইট পাড়া, লেমশীখালী ইউনিয়নের পেয়ারাকাঁটা এবং ৯নং ওয়াড়ের্র বেশ কিছু এলাকাসহ কয়েকটি স্থানে জোয়ারের পানি প্রবেশ করছে।

এলাকার স্থানীয় লোকজন জানান, “দক্ষিণ অমজাখালীসহ যেসব এলাকায় জোয়ারের পানি প্রবেশ করেছে নব নির্বাচিত বড়ঘোপ ইউপি চেয়ারম্যান আ.না.ম. শহীদ উদ্দিন ছোটন পরিদর্শন করেন।”

এই ব্যাপারে কুতুবদিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান এড.ফরিদুল ইসলাম চৌধুরীর কাছে ফোন দিলে রিসিব না করায় বক্তব্য নেওয়া যাই নাই।

এই ব্যাপারে এলাকার লোকজন দাবি করেন, যদি বর্ষের আগে বেড়িবাঁধ মেরামত করা না হয় তাহলে আমাদের বেঁচে থাকা কষ্ট কর হয়ে যাবে।

এই ব্যাপারে ধুরুং ইউপি চেয়ারম্যান শাহারিয়া বলেন, “কি বলব আর বেড়িবাঁধ সম্পর্কে যেখানে ঠিকাদার পালিয়ে যায়। কুতুবদিয়া জোয়ারের পানিতে বিলীন হয়ে গেছে চার-দিকে কমপক্ষে ৫০০ পরিবার হুমকিতে আছে। এখন বেড়িবাঁধে কাজ বন্ধ রয়েছে।”

এই ব্যাপারে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান টিটু জানান, নিজস্ব তহবিল থেকে আপাতত বস্তা ব্যবস্থা ও কুতুবদিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান এড.ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী, আলীআকবর ডেইলের ইউপি চেয়ারম্যান নূরুচ ছাফা বি.কম. নব নির্বাচিত বড়ঘোপ ইউপি চেয়ারম্যান আ.না.ম শহীদ উদ্দিন ছোটন, এবং বড়ঘোপ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যৌথ উদ্যোগে পানি না ডুকরের মত একটি বেড়িবাঁধ দেওয়ার কাজ হাতে নিয়েছি কয়েক দিনের মধ্যে কাজ শুরু হবে।

এই ব্যাপারে দক্ষিন অমজাখালী ৪নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য নাছির উদ্দীন বলেন, “অমাবশ্যার জোয়ারে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় দক্ষিণ অমজাখালী বেড়িবাঁধের ৩ পয়েন্টে দিয়ে জোয়ারের পানি ডুকেছে। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আমরা এখন কোন ব্যবস্থা নিতে পারছি না।”

বড়ঘোপ এলাকার দক্ষিণ অমজাখালীর অসহায় হালিমা, পরভিন, গিয়াস উদ্দিন, হাসিনা, বলেন, “যদি কয়েকদিনের মধ্যে বেড়িবাঁধ মেরামত করা না হয় আমাদের ঘরবাড়ি হারিয়ে রাস্তায় দাড়াতে হবে।
প্রশাসনের কাছে একটাই অনুরোধ রিলিপ চাই না বেড়িবাঁধ চাই।”

নিউজটি শেয়ার করুন :