পবিত্র ঈদুল আযহা মানে কোরবানির ঈদ, সাধারণত আমরা (মুসলমানরা) আরবী জিলহাজ্ব মাসের ১০ তারিখে কোরবানির ঈদ উদযাপন করে থাকি। এটি মুসলমানদের জন্য আল্লাহর নৈকট্য লাভের একটি অপূর্ব সুযোগ। এই দিন মহান আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় যে যার সাধ্যমত গরু, ছাগল, ভেড়া, মহিষ ও দুম্বা কোরবানি করে থাকেন।
এই কোরবানির বিষয়ে মহান আল্লাহ তা’য়ালা বলেন, “তোমরা হালাল পশু দ্বারা কোরবানি করো আর কোরবানি করা পশুর মাংস তিনভাগে ভাগ করে সঠিকভাবে গরীব মিসকিনদের মাঝে বন্টন করে দাও। এক ভাগ তোমরা তোমাদের নিজেদের জন্য, এক ভাগ তোমাদের আত্মীয় স্বজনদের মধ্যে গরীব থাকলে তাদের মাঝে, এক ভাগ গরীব মিসকিনদের মাঝে বিলিয়ে দাও।
কিন্তু বর্তমানে দেখা যায় অধিকাংশ মানুষ (আমরা) কোরবানি করি শুধুমাত্র লোক দেখানোর জন্য, আমাদের সমাজে এমন কিছু লোক আছে যারা কোরবানির উদ্দেশ্যে ক্রয় করা পশু দিয়ে লড়াই এর জুয়ার আসর বসায় যা সম্পূর্ণ ইসলাম ও শরিয়তের পরিপন্থী কাজ।
মহান আল্লাহ তা’য়ালা বলেন, “তোমরা মোটা তাজা, সুন্দর দেখে কোরবানির পশু ক্রয় করবে এবং ক্রয় করা পশু কে খুবই যত্নসহকারে লালন-পালন করো।”
অথচ আমরা কোরবানির ক্রয় করা পশু দিয়ে বিভিন্ন সময় লড়াই দিতে গিয়ে শিং ও গায়ের মাংস ছিড়ে ফেলি, এই কর্মকাণ্ডে কোরবানির পশুর খুবই কষ্ট হয় এবং মহান আল্লাহ তা’য়ালাও অসন্তুষ্টি হয়। এবং মহান আল্লাহর দরবারে কোরবানি কবুল হয় না। আমরা অধিকাংশ মানুষরাই কোরবানি করে গরীব মিসকিনদের না দিয়ে কোরবানির মাংস ফ্রিজে রেখে এবছরের মাংস আগামী বছর পর্যন্ত খেয়ে থাকি, যা কোরবানির পরিপন্থী কাজ।
অথচ আমাদের সমাজে এমনও কিছু লোক রয়েছে যারা বছরে একদিনই মাংস খাওয়ার সুযোগ হয় আর সেই দিন হলো কোরবানির ঈদের দিন এবং কিছু গরীব লোক রয়েছে তারা কোরবানি করা বাড়িতে বাড়িতে এক টুকরো মাংস পাওয়ার আশায় ছুটে বেড়ায়। আর আমরা তাদের থলিতে এক টুকরো মাংস না দিয়ে ফ্রিজে ভরে রাখি আর এটাই হলো বাস্তবতা।
তাই আসুন সকলে মিলে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে কোরবানি করি। আল্লাহ তা’য়ালা যেন আমাদের কোরবানির সঠিক মর্যাদা বুঝার, মানার ও পালন করার তাওফিক দান করেন। (আমিন)
লেখক: মোহাম্মদ আলী
প্রতিষ্ঠাতা ও মহাসচিব, বঞ্চিত শিশু অধিকার ফাউন্ডেশন