শিরোনাম

খুলনায় ঘূর্ণিঝড় বুলবুলে’র প্রভাবে বৃষ্টি, প্রস্তুত সাইক্লোন সেন্টার

 

শেখ নাসির উদ্দিন, খুলনা প্রতিনিধিঃ বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ এর প্রভাবে উপকূলীয় জেলা খুলনার আকাশ মেঘে আচ্ছন্ন হয়ে রয়েছে। ঝড়ের প্রভাবে শুরু হয়েছে বৃষ্টিপাত।

আজ শুক্রবার (৮ নভেম্বর) দুপুর থেকে কোথাও গুঁড়িগুঁড়ি আবার মাঝারি বৃষ্টি শুরু হয়েছে। ভোর থেকে মোংলা সমুদ্র বন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদফতর। খুলনায়ও চলছে একই সংকেত। ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ বঙ্গোপসাগর থেকে উত্তর-পশ্চিম উপকূলের দিকে এগিয়ে আসছে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদ। তাদের মতে, ঘূর্ণিঝড়টি শনিবার (৯ নভেম্বর) মধ্যরাতের দিকে বাংলাদেশের খুলনা-বরিশাল অঞ্চলের ওপর আঘাত হানতে পারে। তবে উপকূলে আঘাত হানার আগে কিছুটা দুর্বল হয়ে যেতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে আরও জানানো হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’-এর কারণে সাগর উত্তাল হয়ে উঠেছে। বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত নৌযানগুলোকে সাগরে চলাচল না করে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

এদিকে, ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের মোকাবিলায় খুলনা জেলা সদরসহ ৯ উপজেলায় কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। সরকারি-বেসরকারি ৩৩৮টি সাইক্লোন শেল্টার প্রস্তুত করা হয়েছে। নদী তীরবর্তী শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের পাকা ভবনগুলো প্রস্তুত করা হয়েছে। স্থানীয় জেলেদেরকে নদীতে মাছ ধরা থেকে বিরত ও চরে বসবাসকারীদের নিরাপদে সরে আসার জন্য বলা হচ্ছে। সার্বিক পরিস্থিতি মোকাবিলায় মেডিকেল টিমও প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কৃষকরা ক্ষেতে আধাপাকা ধান নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। জমির সব ধান এখনো পাকেনি। উপায় না পেয়ে আধাপাকা ফসল তোলা হচ্ছে বলে খবর পাওয়া গেছে। ঝড়-তুফান হলে বেশি ক্ষতির আশঙ্কায় কৃষকরা আগাম ফসল তুলছেন।

খুলনা আঞ্চলিক আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র আবহাওয়াবিদ আমিরুল আজাদ বলেন, খুলনাসহ আশপাশের উপকূলীয় অঞ্চলের আকাশে সকাল থেকে হালকা মেঘ ও গুমোট আবহাওয়া বিরাজ করছে। ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাবে দুপুর থেকে শুরু হয়েছে বৃষ্টিপাত। ঘূর্ণিঝড়ের অগ্রভাগ থেকে ভেসে আসা মেঘের থেকেই এখন উপকূলীয় অঞ্চলে বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে ‘বুলবুল’ উপকূলীয় অঞ্চল অতিক্রম করার সময় বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১২০ কি.মি. হতে পারে। বুলবুল এখন অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে।
আবহাওয়ার সর্বশেষ ১৭নং বুলেটিন অনুযায়ী ঘূর্ণিঝড়টি চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর থেকে ৬৯৫, কক্সবাজার থেকে ৬৪৫, মংলা থেকে ৫৮৫ ও পায়রা থেকে ৫৭৫ কি.মি. দূরত্বে অবস্থান করছে।

খুলনা জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আজিজুল হক জোয়ার্দ্দার বলেন, বিকেল ৪টায় খুলনা সার্কিট হাউজে ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাব মোকাবেলা ও সকল কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি সভা আহ্বান করেছে জেলা প্রশাসন। ইতোমধ্যে সরকারি-বেসরকারি ৩৩৮টি সাইক্লোন শেল্টার প্রস্তুত করা হয়েছে। উপকূলীয় দাকোপ ও কয়রা উপজেলার ২৪ হাজার সিপিপি স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন :