আ স ম আবু তালেব, ঢাকা বিশেষ প্রতিনিধি:
মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ে এখন বন্যার পানি না থাকলেও থাকছে ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনের চোখের পানি।এরিমধ্যে নদী গর্ভে চলে গেছে অসংখ্য লোকজনের ফসলী জমি সহ ঘরবাড়ী ও গাছপালা। গত কয়েক দিন ধরেই ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে জেলার লৌহজং উপজেলার খিদিরপাড়া ইউনিয়নের কোল ঘেষা পদ্মার শাখা ডহরী-তালতলা (গোরগঞ্জ) নদীর তীরবর্তী এলাকার গ্রামগুলোয়।
হুমকীর মুখে রয়েছে খলাপাড়া গ্রামের একটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি মসজিদ ও খেলার মাঠ। অপর দিকে একই ইউনিয়নের ফুলকুচি গ্রামের দুটি মসজিদ, একটি মাদ্রাসা, একটি কমিউনিটি ক্লিনিক, একটি কবরস্থান, বাজারসহ ৩টি গ্রামের বেশকিছু স্থাপনা। আর ভাঙ্গনরোধে স্থায়ী বাধ নির্মাণের দাবী জানিয়েছেন জনপ্রতিনিধিসহ এলাকাবাসী। পদ্মা কখনো প্রমত্তা, কখনো রাক্ষুসে। আবার কখনো বা সর্বনাশা তবে এর শাখা নদী গোরগঞ্জ ও তান্ডব নীলায় এর থেকে কম নয়। গত কদিন ধরেই নদীতে প্রচন্ড স্রোত থাকায় রাক্ষুসে হয়ে উঠেছে (গোরগঞ্জ) নদী।
এরি মধ্যে নদী গর্ভে চলে গিয়েছে প্রায় ৭ একর ফসসি জমি ও ১৫টি বসত বাড়ি। বিগত কয়েক বছরে এ নদী গিলে নিয়েছে প্রায় ৭০ একর আবাদী জমিসহ অসংখ্য পরিবারের গাছপালা ও ঘরবাড়ি। নতুন করে আবারো দেখা দিয়েছে নদী ভাঙ্গন। ভাঙ্গনে সব হারিয়ে ইতিমধ্যে অন্যত্র চলে গেছে প্রায় ৫০টি পরিবার। ভাঙ্গন আতঙ্ক বিরাজ করছে খিদিরপাড়া ইউনিয়নের ফুলকুচি, রসকাঠী, বাসুদিয়া, খলাপাড়া গ্রামের অসংখ্য পরিবারের মাঝে। ভাঙ্গনের কবলে পড়ে যে কোন সময়ে নদী গর্ভে বিলীন হতে পারে ফুলকুচি দারুল উলুম হাফিজিয়া মাদ্রাসা, মসজিদ, কবরস্থান, বাজার ও কমিউনিটি ক্লিনিকসহ প্রায় শতাধিক পরিবারের ঘরদুয়ার।
গেলো কদিনের ভাঙ্গনের কবলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে খলাপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়, বাসুদিয়া পাকা রাস্থাসহ বেশ কিছু এলাকা। হুমকীর মুখে রয়েছে ইউনিয়ন পরিষদের ভবনটিও। নদী ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্ত ফুলকুচি গ্রামের হাজী আব্দুল হক, মো. মাকছুদ রানা ও শরিফ উদ্দিন বাবুসহ এলাকাবাসীরা বলেন, তাদের বহু জায়গা জমি কেড়ে নিয়েছে এ গোরগঞ্জ নদী। এ ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে স্থায়ী কোন ব্যবস্থা গ্রহন না করা হলে এ নদীর হাত থেকে করা যাবেনা এই ইউনিয়নের ৩টি গ্রামের কয়েক হাজার পরিবারের ভিটেমাটি।
এ ব্যাপারে লৌহজং উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবীর বলেন, খিদিরপাড়া ইউনিয়নের পাশ দিয়ে একটি খাল গিয়েছে মূলত পদ্মা নদীর শাখা এটি গোরগঞ্জ নদী। পদ্মা নদী থেকে ডহরী হয়ে তাল তলা গিয়ে এ নদী বুড়িগঙ্গায় মিসেছে। বর্ষার পানির স্রোতের কারণে হয়তো বা কিছু অংশে ভাঙ্গন থাকতে পারে। তবে আমাদের পদ্মা নদীর মূল শাখার সাথে যেহেতু খিদিরপাড়া ইউনিয়নের সংযোগ নেই সে হিসেবে সহজেই এ ভাঙ্গন প্রতিরোধ করা সম্ভব। আর মূল পদ্মার পাশ দিয়ে একটি এলাকা নির্ধারণ করে ইতিমধ্যে উধ্বতন কতর্ৃপক্ষ বরাবর নদী শাসনের জন্য একটি প্রকল্প প্রস্তাব প্রেরণ করা হয়েছে। যার কার্যক্রম চলমান। ভবিষ্যতে লৌহজং উপজেলা পদ্মা নদীর ভাঙ্গন থেকে মুক্ত হবে।
এদিকে এ ব্যাপারে খিদিরপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাজী মো. আনোয়ার হোসেন বেপারী সাথে কথা হলে তিনি বলেন, এটি পদ্মার একটি শাখা নদী। এটিতে প্রচুুর স্রোত থাকে এবং প্রতি বছরী এই শাখা নদীটি ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়। এ ভাঙ্গন রোধের জন্য সরকার যদি পরিকল্পনা নেয় তবে ভাঙ্গন রোধ করা সম্বব। একটা স্থানী বাঁধের ব্যবস্থা করা হলে, তাহলে মনে হয় আমারা ভাঙ্গন থেকে রক্ষা পাবো।