শিরোনাম

ছাত্রলীগের শিবির ফেনিক ও আমাদের ভবিষ্যত

 

ওলামা কন্ঠ ডেস্ক:  সম্প্রতি জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য বিরোধী আন্দোলন এর শিক্ষার্থী -শিক্ষকদের জামাআত শিবির এর ষড়যন্ত্র আখ্যা দিয়ে আন্দোলনকারীদের উপর ছাত্রলীগের নির্মম হামলার সাথে আবারো আলোচনায় ছাত্রলীগের শিবির ফেনিক।

আমরা যতদূর জানি উপাচার্য বিরোধী আন্দোলন এ সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছে স্বাধীনতার স্বপক্ষে শিক্ষকদের যে পরিষদটি তা,যেখানে আনু মুহাম্মাদ, ফেরদাউস স্যারদের মতো বাম ঘরানার শিক্ষক, ছাত্রলীগের লাথিতে তলপেটে আঘাত পাওয়া শিক্ষার্থী ছন্দা ও ক্যাম্পাসে একজন সাংস্কৃতিক কর্মী হিসেবে পরিচিত,যতদূর জানি সে ও বাম ঘরানার একজন কর্মী সেখানে ছাত্রলীগ তাদের শিবির বলে আখ্যা দিয়েছে।

শুধু কি জাহাঙ্গীরনগর এর ঘটনা?
আমরা দেখতে পেলাম আবরার হত্যাকাণ্ডে আবরার কে ও শিবির বলা হলো,রাজশাহী পলিটেকনিক এর সম্মানিত অধ্যক্ষ ফরিদ স্যার কে তারা জামাআত আখ্যা দিলো।স্বয়ং নোয়াখালী সরকারী কলেজে জাতীয় শিক্ষা দিবসে চরমোনাই পীরের ছাত্র সংগঠন ইশা ছাত্র আন্দোলন এর আলোচনা সভায় শিবির বলে হামলা করার পরিকল্পনা করা হলো(যদিও সেখানে ক্যাম্পাসের এক শিবির কর্মীর ই ইন্ধন ছিল।

সারাদেশে যখন কোটাবিরোধী আন্দোলন হয় সেখানে ও শিবিরের ধোঁয়া তুলে ছাত্রলীগ হামলা করলো।যখন নিরাপদ সড়কের দাবীতে শিক্ষার্থীরা মাঠে নামলো সেখানে ও তারা শিবিরফোবিয়া ছড়িয়ে হামলা করে।দেশব্যাপী প্রায় সকল ক্যাম্পাসে যারাই ছাত্র অধিকারের বিষয়ে কোন দাবী তুলে সেখানে তারা শিবির বলে ঐ আন্দোলনগুলো দমিয়ে দেয়।

প্রায় সকল ক্ষেত্রে তারা শিবির ফেনিক বলে শ্লোগান তুলে কারণ কি? কারনগুলো যদি এমন হয় প্রথমত, স্বয়ং আওয়ামীলীগ থেকে হয়ত তাদের সে লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে শিবির হলে হত্যা বৈধ। দ্বীতিয়ত, তারা হয়তো বুজাতে চাচ্ছে শিবির এ দেশে তাদের জন্য কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বী!!

কিন্ত এখন কথা হলো,শিবির কখনো তাদের নেতাকর্মীদের মুক্তি আন্দোলন ব্যাতীত কোন আন্দোলন সংগ্রামে জোরদার ভূমিকা না রাখলেও প্রায় আন্দোলন এ তাদের অংশগ্রহণ নিয়ে আলোচনা হয় কেন?তারাতো রাজনৈতিক ভাবে কখনো স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন করেনি বরং স্বৈরাচারদের সহযোগী ছিল,তারাতো কখনো দেশীয় স্বার্থ নিয়ে সংগ্রাম করেনি তাহলে দেশের সাধারণ মানুষের দাবীর মধ্যে তাদের অংশগ্রহণ খোঁজা হয় কেন?

দুটি কারণ হতে পারে এক- এইযে শিবির ফোবিয়া এটা ছাত্রলীগ আওয়ামীলীগে অনুপ্রবেশ কারী জামাআত শিবির দের একটি আর্টিফিশিয়াল ভাবে তৈরী যা সাধারণ মানুষের মাঝে জামায়াত শিবির কে জিইয়ে রাখার একটা মাধ্যম। দুই- আওয়ামীলীগের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত হয়তো রয়েছে জামায়াত শিবিরের উপর হামলা ও হত্যার বৈধতা নিয়ে।

উপরিউক্ত দুটির যেকোন একটি সত্যি হলে ও আমাদের ভবিষ্যত শংকিত রয়েছে, প্রথমটা সত্য হলে যে শংকা টা তা হলো,দেশের স্বাধীনতা, সংগ্রাম, দেশপ্রেম, সামাজিক সমস্যা সহ নাগরিকের মৌলিক অধিকার আন্দোলন এ পূর্বে জামায়াত শিবিরের কোন অংশগ্রহণ না থাকায়,বর্তমান ও সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া ইস্যুভিত্তিক নাগরিকের দাবী দাওয়া সম্মিলিত যৌক্তিক আন্দোলন গুলো শিবির অজুহাতে ভেস্তে যাচ্ছে, আমরা যদি খেয়াল করি বিএনপির ভোটের অধিকার বিষয়ে সবগুলো মিছিল মিটিং শিবিরের ষড়যন্ত্র বলে ভেস্তে দেওয়া হয়েছে, আমরা দেখলাম কোটা বিরোধী আন্দোলন কে কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করা হয়েছিল।

দেখলাম নিসচার আন্দোলনকারী বাচ্চাদের উপর কেমন হামলা করা হলো।তাদের আন্দোলন কে থামিয়ে দেওয়া হলো।এভাবে প্রায় জনগন বান্ধব সকল আন্দোলন ক থামিয়ে দেওয়া হলো। ২য় টি সত্য হলে,আমার দেশ একটা একটা নরকে পরিণত হয়ে যাবে।যে কাউকে ব্যাক্তিগত স্বার্থে হত্যা করে জামায়াত শিবির বলে চালিয়ে দেওয়া হবে,এমনকি আওয়ামীলীগের ছেলেদের হত্যা করে ও বলা হবে জামায়াত শিবির।

যেমনটা আবরার এর ক্ষেত্রে ঘটলো,তারা আবরার কো শিবির বললো,আর আবরার এর পরিবারের ভাষ্য তারা আওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িত,যেমনটা আজ জাহাঙ্গীর নগরে ঘটলো,আওয়ামীপন্হী শিক্ষক পরিষদের নেতাদের আজ জামায়াত শিবির বলে হামলা করা হলো।এভাবে দেশের নানা প্রান্তে সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করে জামায়াত শিবির বলে চালিয়ে দেওয়া হবে।আত্মরক্ষার জন্য অন্যরা ও তখন অস্ত্র হাতে নিয়ে দেশটাকে রক্তের নদীতে পরিণত করে ফেলবে।

সর্বোপরি, এইযে শিবির ফেনিক তা আমাদের জন্য আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য হুমকিস্বরুপ।

নিউজটি শেয়ার করুন :