নিজস্ব প্রতিবেদক:
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদের (ডাকসু) সহ-সভাপতি (ভিপি) নুরুল হক নুর ও তার সহযোগীদের ওপর হামলার ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাবেক ডাকসু নেতারা। অবিলম্বে এ হামলায় জড়িতদের গ্রেফতার ও আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি জানিয়েছেন ৯০ এর ডাকসু ও সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যের নেতৃবৃন্দ।
৯০ এর ডাকসু ও সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যের নেতৃবৃন্দ আমানউল্লাহ আমান, হাবিবুর রহমান হাবীব, খায়রুল কবির খোকন, ফজলুল হক মিলন, নাজিম উদ্দিন আলম, মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, সাইফ উদ্দিন আহমেদ মনি, খন্দকার লুৎফর রহমান, সালাহউদ্দিন তরুণ, আসাদুর রহমান আসাদ এক যুক্ত বিবৃতিতে বলেন, ‘শত সংগ্রামের ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে ছাত্র আন্দোলনের সু-মহান ঐতিহ্যের ধারক ডাকসু ভবনেই গতকাল ছাত্রলীগ সভাপতি সঞ্জিত চন্দ্র দাস ও সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনের নেতৃত্ব ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা দফায় দফায় নারকীয় তাণ্ডব চালিয়েছে।
সন্ত্রাসীদের নির্মম নিষ্ঠুর হামলায় ডাকসু ভিপি নুর সহ ২৬ জন ছাত্রকর্মী আহত হয়েছেন এবং এদের একজন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আশঙ্কাজনক অবস্থায় লাইফ সাপোর্টে চিকিৎসাধীন রয়েছেন, যা খুবই উদ্বেগজনক।’
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘বিরোধী পক্ষ ও ভিন্নমতকে নিষ্ঠুরভাবে দমন-নির্মূল করার হীন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যের অংশ হিসেবেই গতকালের এ ন্যাক্কারজনক নারকীয় সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে যা গোটা জাতিকে হতভম্ব ও বিস্মিত করেছে। এর আগেও একই গোষ্ঠী কর্তৃক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলসহ অন্যান্য ভিন্ন মতাবলম্বী ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীদের ওপর উপর্যুপরি সন্ত্রাসী হামলা পরিচালিত হয়েছে।’
তারা বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পবিত্র অঙ্গনে ভাষা-স্বাধীনতা-গণতন্ত্র সংগ্রামে নেতৃত্বদানকারী প্রতিষ্ঠান ডাকসু ভবনে সরকার দলীয় নেতাকর্মীদের এ সন্ত্রাসী তাণ্ডব ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং ডাকসুর সুমহান ঐতিহ্যে কালিমা লেপন করেছে। যা ৭১ এর পাক-হানাদার বাহিনীর বর্বরতাকেই কেবল মনে করিয়ে দেয়।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, প্রশাসন ও প্রক্টরের ন্যক্কারজনক ভূমিকায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক শিক্ষার পরিবেশ, সকল গণতান্ত্রিক সংগঠনের স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনা এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্য রক্ষায় বর্তমান ভিসি প্রশাসন ও প্রক্টর চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের নিরাপত্তার বিধান না করে ভিসি-প্রক্টর সরকারি ছাত্রসংগঠনের সন্ত্রাসীদের প্রত্যক্ষভাবে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে দেশবাসীর কাছে নিজেদের পদের ভাবমূর্তি ও সম্মানকে কলঙ্কিত করেছেন।’ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের নিরাপত্তা বিধান এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ রক্ষায় ব্যর্থতার দায়ে নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে এ দলকানা ভিসি ও প্রক্টরের পদত্যাগ দাবি করেন।
ছাত্র সমাজ ও দেশবাসীকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও ডাকসুর সুমহান ঐতিহ্য রক্ষায় সর্বোপরি শিক্ষাঙ্গন ও দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে স্বৈরাচারী কর্তৃত্ববাদী সরকারের পতনে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে শামিল হওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন ডাকসুর সাবেক নেতৃবৃন্দ।
উল্লেখ্য, ডাকসু সহ-সভাপতি নুরুল হক নুর ও তার অনুসারীদের ওপর ফের হামলা চালিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের একাংশের নেতাকর্মীরা। হামলায় অন্তত ৩২ জন আহত হন। রোববার বেলা পৌনে ১টার দিকে এ হামলা চালানো হয়। এতে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরাও অংশ নেন বলে জানা গেছে।