ওলামা কণ্ঠ ডেস্ক: সদর থানা ও রেলস্টেশন বাজারের কয়েকজন বাসিন্দার ভাষ্য, আজ সকাল ছয়টার দিকে হাতে ক্যানুলা লাগানো এক যুবক বাজারের একটি দোকান এসে সিগারেট কেনেন। এরপর তিনি কাঁপতে শুরু করেন। তখন তিনি একটি অটোরিকশায় ওঠার চেষ্টা করেন। কিন্তু করোনা রোগী মনে করে চালক তাঁকে অটোরিকশায় উঠতে দেননি। তাঁর সঙ্গে কেউ না থাকায় এবং হাতে ক্যানুলা থাকার সঠিক কারণ বলতে না পারায় কোনো চালকই তাঁকে গাড়িতে তুলতে রাজি হননি। এভাবে পাঁচ মিনিট কেটে যায়। যুবকটি আস্তে আস্তে মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়েন।
স্টেশন বাজারের ব্যবসায়ী ও বাসিন্দা আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘অজ্ঞাত যুবকের হাতে ক্যানুলা থাকায় আমরা যুবকটিকে করোনা রোগী বলে ভাবছিলাম। তিনি হাসপাতাল থেকে পালিয়েছেন বলে মনে করেছিলাম। তবে কাঁপুনি থাকায় কেউ কেউ তাঁকে মৃগী রোগী মনে করেছিলেন। আমরা তাঁকে হাসপাতালে নেওয়ার চেষ্টা করেছি। কিন্তু কোনো যানবাহনের চালকই তাঁকে গাড়িতে তুলতে রাজি হচ্ছিল না। পুলিশ ও অ্যাম্বুলেন্সকে খবর দেওয়া হয়েছিল। তারা পৌঁছানোর আগেই যুবকটি মারা যান।’
মৃত ব্যক্তির নাম মনিরুল ইসলাম (৩২)। তিনি বৃ-চাপিলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নৈশপ্রহরী ছিলেন। তাঁর বাড়ি জেলার গুরুদাসপুর উপজেলার বৃ-চাপিলা গ্রামে।
নাটোরে করোনা রোগী ভেবে অটোরিকশায় উঠতে না দেওয়ায় পাঁচ মিনিটের মধ্যে মারা গেলেন একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নৈশপ্রহরী। আজ শনিবার সকাল ছয়টার দিকে নাটোর রেলস্টেশন বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
অজ্ঞাত এই যুবকের মৃতদেহ নিয়ে কী করবেন, তা ভেবে পাচ্ছিলেন না স্থানীয় লোকজন। অনেকে ফেসবুকে লাইভ করে মৃত ব্যক্তির ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করেন। খবর পেয়ে পুলিশ যায়। পুলিশ মৃতদেহটি উদ্ধার করে সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। পরে পুলিশ জানতে পারে, ওই যুবকের নাম মনিরুল ইসলাম। তিনি শহরের একটি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। হাসপাতালে তাঁর সঙ্গে থাকা স্ত্রী স্বামীর লাশ শনাক্ত করেন।
নিহত যুবকের স্ত্রীর দাবি, তাঁর স্বামী গতকাল শুক্রবার অসুস্থ বোধ করায় হাসপাতালে ভর্তি হন। সুস্থ হয়ে উঠছিলেন। কাউকে না বলে তাঁর স্বামী হাসপাতালের বাইরে যান। পরে খবর পেয়ে সদর হাসপাতালের মর্গে স্বামীর মৃতদেহ দেখতে পান তিনি।
নাটোর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর আলম বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে যুবকটিকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। পরে তাঁর মরদেহ সদর হাসপাতালের মর্গে নেওয়া হয়। পরে লাশটি স্বজনদের বুঝিয়ে দেওয়া হয়।