শিরোনাম

বর্তমান সমাজে বিয়ে মানেই বউ হাজার মানুষকে দেখানো! ইসলাম মেনে ইরফান-মীম’র বিবাহ

ডেস্ক রিপোর্ট:

বর্তমান সমাজে বিয়ে মানেই বউ হাজার মানুষকে দেখানো। সামনে সেজেগুজে বসে থাকবে। আর যাদের সাথে দেখা দেওয়া হারাম, তারা এসে নতুন বউয়ের রুপ সৌন্দর্য দেখে মজা নিবে সেটা মেনে নেওয়া যায় না বা ইসলাম সমর্থন করে না। বর্তমান কুসংস্কারকে পিছানে ফেলে ইসলামী শরীয়াত মোতাবেক বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন “এমবি” এর শিক্ষার্থী মোহাম্মদ ইরফান হাওলাদার। অথচ তিনি কোন আলেম বা মাদ্রাসার শিক্ষার্থীও নন।

দম্পতি (বরের সাথে মীম বেগম)

তিনি বাংলাদেশ আমেরিকা আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যায়নরত। পেশাগত ইস্তাম্বুল ফাউন্ডেশন ফর সাইন্স এন্ড কালচার’র বাংলাদেশ প্রতিনিধি। তাঁর জীবন সঙ্গিনীর নাম মোসাম্মৎ মীম বেগম। বাবার নাম মোহাম্মদ ইসমাইল হাওলাদার। জেলা, শরীয়তপুর। ১৮ তারিখে মুসলীমদের ধর্মীয় এবাদত খানা মসজিদে বিয়ে হয়ে। পরে নিকটস্থ কমিউনিটি সেন্টারে বিবাহের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করা হয়।

বর বলেছেন, মীমের সাথে (মেয়ে) আমি যখন প্রথম কথা বলি তখনি আমরা দুজন একতম হই যে, আমাদের পরিবার যতই জোড়াজুড়ি করুক আমরা নিজেদের সাধ্য মতো ইসলামী রীতি মেনে চলবো। একে অপরকে এবিষয়ে সহযোগিতা করবো।

মীম (মেয়ে) যখন আমাকে বললো আমি বিয়েতেও নিকাব ও বোরখা পরবো, তখনই আমি সিদ্ধান্ত নেই তাকে বিয়ে করার। এজন্য আমাদের বিয়ে-বউভাত অনুষ্ঠানে মীমের জন্য কোন দামী শাড়ী কেনা হয়নী, সবচেয়ে দামী ব্রান্ডের দুটা বোরখা কিনা হয়েছে।

আমার বাবা-মা আগে থেকেই জানতো যে আমি বিয়েতে বউকে বোরখা পরাবো। তারা এটাও জানে এবিষয়ে জোড়াজুড়ি করলে আমি বিয়ে ক্যান্সেল করে দিবো। সেজন্য বাবা-মা কোন বাধা দেয়নি। তবে এক-দুজন আত্মীয় আমাকে বলেছে আমাদের গ্রাম ও বংশের মধ্যে আমাদের বিয়েটা হচ্ছে তাদের দৃষ্টিতে নরমাল বিয়ে।

কিন্তু সমস্যা বাধে বিয়ের দিন। কাছের কিছু আত্মীয় বউকে বলে কালকে বউভাতে যেহেতু মহিলা-পুরুষ আলাদা তাহলে তুমি হিজাব পরবে কিন্তু মুখ খোলা রাখবে। বিষয়টি আমাকে জানায় সে কি করবে। তাদের কথা অমান্য কিভাবে করবে। কিন্তু বউ কিছুতেই এমনটা করতে চায় না। আমি ওকে বলি কেউ এসে যদি তোমাকে নেকাব খুলতে বলে তাহলে তুমি বলবে ইরফান নেকাব খুলতে নিষেধ করেছেন।

আমার কিছু আত্মীয় আমাকে জিজ্ঞেস করলো তুমি বউকে জোড় করে বোরখা পরাচ্ছ? নতুন বউকে জোড় করে ইসলামিস্ট বানাচ্ছ? তখন বললাম যা হয়েছে সব  দুজনের সম্মতিতে হয়েছে। তারা বললো দরকার ছিল কি একদিনে এতো!

বউভাতের দিন কয়েকজন মহিলা আত্মীয় নেকাব খুলার জন্য টানাটানি করে। এটা শুনে আমার মন ভীষণ খারাপ লাগলো এবং ভাবলাম এটা কোন ধরনের ভদ্রতা একজন নারীর নেকাব খুলতে তারা জোড়াজুড়ি করে। নারী হয়ে কিভাবে অন্য নারীকে এভাবে সবার সামনে পন্যের মতো উপস্থাপন করতে উদ্যত হয়।

যারা সাধারণ পরিবার থেকে দ্বীন পালনে চেষ্টা করে তারা চাইলেই আল্লাহর রহমতে সবাইকে মানিয়ে ইসলামী রীতি মেনে বিয়ে করতে পারে। তবে উভয়ের চেষ্টা ও ইচ্ছে থাকতে হবে। আলহামদুলিল্লাহ আমার পেরেছিলাম।

নতুন দম্পতি সকলের কাছে দোয়া চেয়েছেন। আর সকল ভাইবোনকে দ্বীন-ইসলাম ও শরিয়াত মেনে বিয়ে করার তৌফিক দিন, আমিন।

বিবাহের আগে ও পরে:

✓ তাদের বিয়েতে কোন গায়ে হলুদ হয়নি।
✓ মসজিদে বিয়ে হয়েছে ও খুরমা খেজুর বিতরণ।
✓ (মেয়ে) মীম বোরখা-নেকাব নিজের ও বরের ইচ্ছামতেই পরেছে।
✓ মীমকে (মেয়ে) বিয়ের আগে বরের বাবাও দেখতে পারেনি।
✓ বউভাত অনুষ্ঠানে মহিলা-পুরুষদের বসার জন্য আলাদা ফ্লোর ছিলো।
✓ আলাদা ভাবে কোন ফটোগ্রাফার ছিলো না।
✓ বউভাত অনুষ্ঠানে মহিলা-পুরুষ আলাদা হবার পরেও নেকাব খুলা হয়নী।
✓ মহিলারা ছিলো তারা মুখ খোলা ছবি ফেসবুকে পোস্ট করবে, সেজন্য নেকাব পরা ছিলো।
✓ ১০০% ইসলামী বিয়ে তা কিন্তু না, এটা শুধুই মন্দের ভালো।

 

নিউজটি শেয়ার করুন :