শিরোনাম

বাংলাদেশ কুরআন শিক্ষা বোর্ড প্রসঙ্গে মুখ খুললেন সুযোগ্য মহাসচিব আল্লামা নুরুল হুদা ফয়েজী

আ.স.ম. আবু তালেব, ঢাকা বিশেষ প্রতিনিধিঃ

বাংলাদেশের ৬৮ হাজার গ্রামে মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করার প্রত্যয়ে বাংলাদেশ কুরআন শিক্ষা বোর্ড গঠন করেছিলেন হযরত মাওলানা সৈয়দ মুহাম্মদ ফজলুল করীম শায়েখে চরমোনাই (রঃ)। তার ইন্তেকালের পর রূহানী ফায়েজ বরকতে উক্ত শিক্ষা বোর্ডের কার্যক্রম দিন দিন আরো বেড়েই চলেছে আশাতীত ভাবে।

বর্তমান চরমোনাই পীর সাহেব হুজুর হযরত মাওলানা মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম (দাঃ) এর সফল পরিচালনায় বাংলাদেশ কুরআন শিক্ষা বোর্ডের সুনাম সুখ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছে চতুর্দিকে। চরমোনাই পীর সাহেব হুজুরের মুরিদ, ভক্ত, অনুরাগী সহ হক্কানী আলেম ওলামা তাদের মাদ্রাসায় পাঠ্যতালিকায় স্বনামধন্য উক্ত শিক্ষা বোর্ডের সকল পাঠ্য পূস্তক রাখছেন।

বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদদের মতে, মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের মধ্যে বাংলাদেশ কুরআন শিক্ষা বোর্ড অন্যতম। উক্ত বোর্ডের প্রতিটি পাঠ্য পূস্তকই মান সম্মত। দূঃখজনক হলেও সত্যি চরমোনাই পীর সাহেব হুজুরের মুরিদ নামধারী কতিপয় আলেম এই বোর্ডের কোন কোন পাঠ্য পূস্তক পছন্দ না করে অন্য বোর্ডের পাঠ্য পূস্তক পাঠ্য তালিকায় সংযোগ করাতে বিতর্কিত হয়ে তোলেছে বাংলাদেশ কুরআন শিক্ষা বোর্ড।

আমাদের বিশেষ প্রতিনিধি লৌহজং এর বিভিন্ন মাদ্রাসায় সরেজমিনে রিপোর্ট সংগ্রহ করতে গিয়ে উপরোক্ত তথ্য জানতে পারেন।

মাওয়া বাজার আল কারীম শামসুল উলুম মাদ্রাসা দু ‘বছর ধরে প্রতিষ্ঠিত হলেও অধ্যাবধি বাংলাদেশ কুরআন শিক্ষা বোর্ডের অর্ন্তভূক্ত হয়নি। অত্র মাদ্রাসার মুহতামিম হযরত মাওলানা আনোয়ার হোসেন অভিযোগ করে জানান, উক্ত বোর্ডের কোনো কোনো ইসলামী কিতাবের চেয়ে বেফাক বোর্ডের ইসলামী কিতাবের মান উন্নত বিধায় বেফাক বোর্ডের ইসলামী কিতাব তিনি তার মাদ্রাসায় পাঠ্য পূস্তক বানিয়েছেন।

ঘোড়দৌড় বাজারস্থ কাঠের পুলের উত্তর পার্শ্বে ইসলামী আদর্শ কিন্ডার গার্টেন ও ইসলামী আদর্শ নূরানী হাফেজিয়া মাদ্রাসার মুহতামিম হাফেজ অলিউল্লাহ আমাদের ঢাকা বিশেষ প্রতিনিধিকে জানান, ছাত্র/ছাত্রীদের মাদ্রাসামুখী করতেই কৌশলে বাংলাদেশ কুরআন শিক্ষা বোর্ডের আরবী পাঠ্য পূস্তকের পাশাপাশি স্কুলের পাঠ্য পূস্তক পাঠ্যতালিকায় অর্ন্তভূক্ত করা হয়েছে। অত্র উপজেলাধীন বাংলাদেশ কুরআন শিক্ষা বোর্ডের অধীনস্থ আরো কয়েকটি কিন্ডার গার্টেন ও মাদ্রাসাতে পাঠ্যতালিকায় অন্য মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড কিংবা স্কুলের পাঠ্য পূস্তক সংযোগ করা হয়েছে।

শুধু লৌহজংয়ে নয়, বাংলাদেশের বিভিন্ন মাদ্রাসায় এরূপ হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে।

শিক্ষা সেবার নামে কতিপয় মাদ্রাসা এখন ব্যাবসায় পরিণত হয়েছে। জানুয়ারী মাসে মোটা অংকের টাকা দিয়ে ভর্তি হওয়ার পরও আবার রমজানের শুরুতে ভর্তি হওয়া গরীব ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য দুষ্কর ব্যাপার বিধায় অনেক গরীব ছাত্র-ছাত্রীদের পড়া-লেখার পরিসমাপ্তি ঘটেছে। কেউ বা নিরুপায় হয়ে তাদের আদরের সন্তানকে বাধ্য হয়ে স্কুলে ভর্তি করছে।

বাংলাদেশ কুরআন শিক্ষা বোর্ডের অধীনস্থ অনেক মাদ্রাসায় নীতিমালা অনুযায়ী শিক্ষকদের ছুটি কিংবা বেতন ভাতাও দেওয়া হচ্ছেনা বলে তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে।

শায়েখ (রঃ) এর স্বপ্ন বাস্তবায়নে ৬৮ হাজার গ্রামে মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ কুরআন শিক্ষা বোর্ডের কোন বিকল্প নেই বলে ইসলামী বিশেষজ্ঞগণ মনে করেন।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ কুরআন শিক্ষা বোর্ডের মহাসচিব হযরত মাওলানা মুহাম্মদ নুরুল হুদা ফয়েজী পীর সাহেব হুজুর জানান, “বাংলাদেশ কুরআন শিক্ষা বোর্ডের প্রতিটি পাঠ্য পুস্তক মানসম্মত। আমাদের বোর্ডের অধীনস্থ না হয়েও অনেক মাদ্রাসা ও কিন্ডার গার্টেনে আমাদের পাঠ্য পুস্তক পাঠ্যতালিকায় রাখছে। আমাদের বোর্ডের অধীনস্থ হয়ে যে সকল মাদ্রাসাতে আমাদের বোর্ডের পাঠ্য পুস্তকের পাশাপাশি অন্য বোর্ডের পুস্তক কর্তৃপক্ষ পাঠ্যতালিকায় সংযুক্ত করেছে, তারা না বুঝেই করেছে। কর্তৃপক্ষ পুস্তকের মান নিয়ে আলোচনা করতে চাইলে আমাদের সাথে মত বিনিময়ের সুযোগ রয়েছে।”

নিউজটি শেয়ার করুন :