ডেস্ক রিপোর্ট:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার ইছাপুরা ইউনিয়নের তুলাতলা গ্রামের রাকেশ চন্দ্র দাসের ছেলে শিশু রাতুল দাস (৫) নিখোঁজের ঘটনায় মুক্তিপণ চেয়ে কল রেকর্ড,এর সূত্র ধরে অপহরণকারী চক্রের ৩ সদস্যকে আটক করা হলেও এখন পর্যন্ত উদ্ধার হয়নি শিশু রাতুল চন্দ্র দাস।
পারিবারিক ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়,গত ১৯ আগস্ট সকাল আনুমানিক ১০টার দিকে পাশের বাড়িতে শ্রাধ্যের অনুষ্ঠানে যাওয়ার পর নিখোঁজ হয় শিশু রাতুল চন্দ্র দাস (৫)।নিখোঁজ হওয়ার পর বাড়ির আশেপাশে ও আত্মীয়স্বজনদের বাড়িতে খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে বিজয়নগর থানায় একটি নিখোঁজ জিডি করেন নিখোঁজ রাতুলের বাবা রাকেশ চন্দ্র দাস।জিডি নং ১০০৮।
এরপর চলতি বছরের ৭ সেপ্টেম্বর সকালে ঘুম থেকে ওঠে দেখেন দরজার সামনে একটি চিরকুট পড়ে আছে।যাতে লেখা ছিল, আদাব বাবু আপনার বাচ্চা আমাদের কাছে, বাচ্ছা চান না টাকা।কোন আইনের আশ্রয় নিলে বাচ্চা পাইবেন না।ছয় লাখ টাকা লাগবে।না হয় বাচ্ছার লাশ পাবেন।অন্য কথা ফোনে বলব।রাতুল ভাল আছে।হকার কে দিয়ে নিছি।
পরদিন ৮ সেপ্টেম্বর দূপুর আনুমানিক ২:৪৫ মিনিটে রাকেশের বড় ভাই মামলার ১নং সাক্ষী বিকাশ চন্দ্র দাসের মোবাইল নাম্বার ০১৭০১-০৯০৫৩১ তে অন্য একটি নাম্বার ০১৭১২-৪৪৪৩৩৫ থেকে কল করে বলেন।রাতুল তাদের কাছে আছে।ছেলেকে বাচাঁতে হলে মুক্তিপণ বাবদ ৬ লক্ষ টাকা দাবী করেন তারা।তারা বলেন ছেলে বড় না টাকা বড়।আইনের আশ্রয় নিলে ছেলেকে জানে মেরে ফেলব।পরদিন ৯ সেপ্টেম্বর সকাল ১০;৫৬ মিনিটে আবারও একই নাম্বার থেকে ফোন আসে।ফোন দিয়ে পূর্বের ন্যায় বলে ছেলে তাদের কাছে আছে মুক্তিপণের টাকা দেওয়ার জন্য।
যা বিকাশ চন্দ্র দাসের মোবাইল ফোনে রেকর্ড করা আছে।১০ সেপ্টেম্বর সকাল ঘুম থেকে ওঠে আবারও দরজার সামনে একটি চিরকুট দেখতে পাই।যাতে রাতুলকে ফিরে পাবার জন্য ৬ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দেওয়ার কথা উল্লেখ আছে।অবশেষে নিরুপায় হয়ে রাকেশ চন্দ্র দাস ভৈরব র্যাব ক্যাম্পে আইনি সহয়তা চাইলে, র্যাব সদস্যরা বিস্তারিত জেনে ১২ সেপ্টেম্বর রাতে অভিযান চালিয়ে অপহরণকারী চক্রের ৩ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যান।
আটককৃতরা হলেন তুলাতলা গ্রামের নিখিল দাসের ছেলে শ্রী চরণ দাস(৪০),একই গ্রামের ফরিদ মিয়ার ছেলে শফিকুল ইসলাম (২৮),এবং পার্শবর্তী গ্রামের ইমরান শাহের ছেলে শাহিন মিয়া (১৯)।
সোমবার দূপুরে নিখোঁজ রাতুলের পরিবারের সাথে আলাপকালে,রাতুলের মা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।আদরের সন্তান হারানো মা অশ্রুসিক্ত নয়নে হাত জোর করো মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট ছেলে ফিরে পাওয়ার জন্য আর্জি করেন।তখন যেনো এক আবেগময় মুহুর্তের সৃষ্টি হয়।
রাতুলের বাবা রাকেশ চন্দ্র দাসের সাথে কথা বলে জানা যায়,তিনি বলেন আমরা হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষ,এখানে আমরা সংখ্যালগু। এখন অনেক ভয়ভীতি মধ্য দিয়ে দিন অতিবাহিত করছি।তাদের নামে মামলা দেওয়ায় আমাদেরকে মারার হুমকি দিচ্ছে।মাননীয় সরকার তথা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আকুল আবেদন আমার ছেলেকে ফিরে পেতে আপনারা আমাকে অনুগ্রহ করে সহয়তা করুন।
রাতুলের চাচা মামলার ১নং সাক্ষী বিকাশ চন্দ্র দাস সাংবাদিকদের বলেন,আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীগণ যদি আইনি পক্রিয়ায় আসামিগণকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন,তাহলে হয়তো রাতুলের সন্ধান পাওয়া যেত।কেননা তারা রাতুলকে ফিরিয়ে দেওয়ার মোবাইল ফোনে কথা বলে ৬ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ চেয়েছিল।যা সম্পূর্ণ আমার মোবাইল ফোন রেকর্ড করা আছে।মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট আমাদের বিনীত অনুরোধ আমাদের সন্তানকে ফিরে পাওয়ার জন্য তিনি স্বদয় হবেন।