শিরোনাম

বিশ্বের আলোড়িত ন্যায়ের প্রতীক ছিলেন সুলতান কাবুস বিন সাইদ

 

ওমানের প্রেসিডেন্ট সুলতান কাবুস বিন সাইদ(১৯৪০-২০২০) ১৯৪০ সালের ১৮ নভেম্বর সালালাহর জুফারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা: সুলতান সাইদ বিন তাইমুর ও মাতা: শাইখা মাজনুন আল-মাশানির একমাত্র পুত্র ছিলেন।
গত ১০ই জানুয়ারী ২০২০তিনি ইন্তেকাল করেন।

তিনি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা সালালাহ ও ভারতের পুনেতে লাভ করেছেন। পুনেতে তিনি ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি শঙ্কর দয়াল শর্মার ছাত্র ছিলেন। ১৬ বছর বয়সে তিনি ইংল্যান্ডে পড়াশোনার জন্য যান।[৩] ২০ বছর বয়সে তিনি রয়েল মিলিটারি একাডেমি স্যান্ডহার্স্ট‌ে যোগ দেন। স্যান্ডহার্স্ট থেকে স্নাতক হওয়ার পর তিনি ব্রিটিশ সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। তাকে ১ম ব্যাটেলিয়ন ক্যামেরনিয়ান্স (স্কটিশ রাইফেল)-এ নিয়োগ দেয়া হয়। তিনি জার্মানিতে একবছর দায়িত্বপালন করেছেন। সামরিক দায়িত্বপালনের পর কাবুস ইংল্যান্ডের অধ্যয়ন করেন। সালালাহতে ফিরে আসার পর তিনি ইসলাম এবং দেশের ইতিহাসে উপর পড়াশোনা করেছেন।

তার বাবা সাইদ বিন তাইমুর একটি সফল অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত এর পর তিনি দেশের রাজত্বে রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে ক্ষমতা লাভ করেন,
তিনি আরবের বহুল ধনী আল সাইদ বংশের ১৪তম প্রজন্মের সন্তান। তার আসল নাম সুলতান কাবুস বিন সাইদ আল সাইদ। তিনি ২৩জুলাই ১৯৭০ থেকে১০শে জানুয়ারী ২০২০ পর্যন্ত ওমানের দীর্ঘ ৪৯বছর রাজকীয় দেশ শাসন করেন।
মৃত্যুকালে তার বয়স ছিলেন ৭৯বছর, তার দাম্পত্য সঙ্গী ছিলেন সাইয়্যিদা নাওয়াল বিনতে তারিক (১৯৭৬-১৯৭৯), তার কোন সন্তানাদি বা উত্তরাধিকারী ছিলেন না কেউ।

৭০এর পূর্বে ওমান মাস্কাট বা ওমান নামে পরিচিত ছিলো দেশটি ১৯৭০সালে ক্ষমতা লাভ পাওয়ার পর রাষ্ট্রের নাম ঘোষণা করেছিলেন সুলতানাত অব ওমান। তার শাসন ছিলো ন্যায়পরায়ন ও সুন্দর বিচক্ষণতা, ওমানে সার্বভৌম রাজতন্ত্র ব্যবস্থা ছিলো,ওমানে ক্ষমতার পৃথকীয়করণের ব্যবস্থা নেই সমস্ত ক্ষমতা সুলতানের হাতে,সুলতান ছিলো সশস্ত্র বাহিনীসমূহের প্রাধন এছড়াও তিনি প্রতিরক্ষামন্ত্রি পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ কেন্দ্রীয় ব্যাংক এর চেয়ারম্যান হিসেবে দক্ষতারসহীত দায়িত্ব পালনে ছিলেন, ১৯৯৬সালের আইন ১৯৭০সাল থেকে রাজকীয় মাধ্যমে প্রচলিত ছিলো,সুলতান নিজেই বিচারক নিয়োগসহ সাজা রদ হ্রাস করতেন।

তিনি বৈদেশিক সাম্প্রতিক বজায় রাখতেন ওমানের রাজকীয় নিরপেক্ষ নীতি বজায় রেখে ইরান,যুক্তরাজ্য যুক্তরাষ্ট্র সহ পশ্চিমা দেশগুলোর সাথে সুন্দর প্রীতিময় সম্পর্ক বজায় রেখেছেন।
আরবদেশ গুলোর মধ্য অন্যতম শান্তিপ্রিয় দেশ নামে পরিচিতি করছেন তিনি, সুলতান কাবুস ছিলেন আরবের সর্বোচ্চ দীর্ঘ ক্ষমাতাধর বাদশা, তার দেশ পরিচালনা নিয়ম নীতি ছিলো বহিঃবিশ্বে প্রশংশিত।

মুসলিম দেশ ওমান ওমানের সংখ্যালগু ছাড়াও বহু বিদেশীর ববসবাস। ওমানের জনসংখ্যা ৪৫ লক্ষ তার মধ্যে ৭লাখের উর্ধ্বে বাংলাদেশি প্রবাসীসহ প্রায় ১৫ লক্ষ লোক ওমানি নাগরিক নন। এরা মূলত ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও ইরান থেকে আগত বিদেশী শ্রমিক কর্মী।

এদেশের শাসন নীতি সবার জন্য সমান, এদেশে প্রবাসীরা শান্তিতে বসবাস করে এদেশর আইনশৃঙ্খলাবাহিনী সুন্দর আচরণ ব্যবহারে সব দেশীয় প্রবাসী সন্তোষ, সুলতানের এমন সুন্দর রাষ্ট্র পরিচালনায় দেশের নাগরিকসহ দেশিবিদেশী সর্বস্তরের লোকের মুখে প্রশাসিত সুলতান বিন কাবুস, তাকে সম্মান করে সবাই ডাকেন বাবা সুলতান কাবুস, এই নিরলস দেশ ও জাতীর ভালোবাসার পাত্র সুলতান বিন কাবুস গত ১০ই জানুয়ারি শুক্রবার ৭৯তম বয়সে ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলে দেশে বয়ে আনে শোকের মাতম।তিনি আরব বিশ্বে দীর্ঘ দিন রাজত্ব করা বাদশা, সুলতান কাবুস বিন সাইদ।

লেখক-
আমির বিন সুলতান

নিউজটি শেয়ার করুন :