শিরোনাম

রামগতি ইউপি চেয়ারম্যান’র বিরুদ্ধে ভাইয়ের জমি দখলের অভিযোগ

রামগতি-কমলনগর প্রতিনিধিঃ

লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার ২ নং চরবাদাম ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ নেতা সাখাওয়াত হোসেন জসিমের বিরুদ্ধে তারই জেঠাতো ভাই আলী হায়দার চৌধুরী গংদের জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রামগতি উপজেলার চরবাদাম ইউনিয়নের কেরামতিয়া বাজার সংলগ্ন পুর্বচরসীতা মোজার ২৭৯/৫৮৮/৬৩৯ নং খতিয়ানের ১২ একর জমি জসিম চেয়ারম্যান ও তার বড় ভাই নুরুল আমিন গংরা দখল করার চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করেন তারা। এব্যাপারে ভুক্তভোগী আলী হায়দার গং বিজ্ঞ সহকারী জজ আদালত রামগতি লক্ষ্মীপুরে একটি মামলা দায়ের করেন।

মামলার এজহার থেকে জানাযায়, ৫৫/৩১নং পুর্ব চরসীতা মৌজার ৫৮৮নং দিয়ারা খতিয়ানের দাগ সমুহের অন্দরে বাদীগন চরনেয়ামত মোজা ও পুর্ব চরসীতা মৌজার (৪৮১+৪১৯+৬১৯.৭৫) ১৫.২৭৭৫
সাবেক ২৫৮৬/২৮৯/৭২১০/৭২১১ ও ৭৪৭৬ দাগ মৌরশের আমল থেকে প্রায় ৪০ বছর ধরে নাল ভুমি হিসেবে চাষাবাদ করে আসছেন।ঐ ভূমিতে বাদী নিজে মালিক হিসেবে ভোগদখলও করে আসছেন।

সরেজমিনে গিয়ে এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগী আলী
হায়দার চৌধুরী ও তার ছেলে জুলফিকার আলী চৌধুরী বলেন আমার বাবার চাচাতো ভাই নুরুল আমিন ও সাখাওয়াত হোসেন জসিম। জসিম এক সময়ে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জেএসডির চরবাদাম ইউনিয়ন সভাপতি ছিলেন। সময়ের ব্যবধানে হঠাৎ আওয়ামীলীগের টিকিট নিয়ে চরবাদাম ইউপি চেয়ারম্যান হয়ে স্রোতের ধারায় গাঁ ভাসিয়ে উঠে। এরপর আর তাকে পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।

চেয়ারম্যান হয়ে তিনি নিজস্ব গেরিলা বাহিনী গঠন করে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেন। সম্প্রতি ক্ষমতার অপব্যবহার করে নামে- বেনামে সরকারী প্রকল্প আত্মসাৎ করা সহ নিরীহ চাচতো ভাইয়ের জমি দখলের অপচেষ্টাও চালিয়ে চাচ্ছেন বলে জানান তারা। চেয়ারম্যানের নানা অপরাধ আর ক্ষমতার অপব্যবহারের প্রতিবাদ করলেই নেমে আসে হামলা মামলা সহ নানা নির্যাতন। কেউ তার ভয়ে মুখ খোলার সাহস পায়না।
জসিম এলাকার চেয়ারম্যান হওয়ায় ক্ষমতার দাপট খাটিয়ে তাদের ওয়ারিশী সম্পত্তি জোরজবর দখল করে নেওয়ার পায়তারা করছে, ও নানা ভাবে তাদের কে প্রাণনাশের হুমকি ধমকিও দিয়ে আসছে। তারা আরো বলেন আমরা নিরিহ মানুষ। চেয়ারম্যানের ভয়ে আতংকে দিনাতিপাত করছি।

আমাদের ৪০ বছরের দখলীয় সম্পত্তি জাল জালিয়াতি করে চেয়ারম্যান প্রভাব খাটিয়ে ছিনিয়ে নেওয়ার পায়তারা করছে।কথায় কথায় বহিরাগত অস্রধারী সন্রাসী ও লাঠিয়াল বাহিনী নিয়ে আমাদের সম্পত্তি দখল করার জন্য চেষ্টা চালায়। ভুক্তভোগী জামাল উদ্দীন আহমেদ আপেল জানায়,ঐ জমিতে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে চেয়ারম্যান জসিম বহিরাগত লাঠিয়াল বাহিনী নিয়ে গত শুক্রবার ২৮ আগষ্ট আমন ধানের বীজ রোপন করতে গেলে আমরা তখন তাকে বাধা দিয়েছিলাম।পরে খবর পেয়ে রামগতি থানা পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

জুলফিকার আলী চৌধুরী জানান আমার চাচা আমাদের পৈত্রিক সম্পত্তি জোর দখল করে নেওয়ার চেষ্টা করছে। আমরা ন্যায্য পাওনা বুঝে পেতে চলতি আগষ্ট মাসের ২৪ তারিখে বিজ্ঞ সহকারী জজ আদালত রামগতি লক্ষ্মীপুরে বিবাদী গোলাম রহমান গংদের বিরুদ্বে একটি মামলা করি।(মামলা নং ৪২/২৪/৮/২০২০) পরে বিজ্ঞ সহকারী জজ আদালত ঐ জমিতে বিবাদীগনের বিরুদ্বে অস্হায়ী নিষেধাজ্ঞা জারী করেন।

এরপরে আমার চাচা সাখাওয়াত হোসেন জসিম ও নুরুল আমিন গংরা চলতি মাসে তারাও আমাদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করলে আদালত ঐ জমির উপর ১৪৪ ধারা জারি করেন। কিন্ত আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জসিম চেয়ারম্যান বহিরাগত লাঠিয়াল বাহিনী ও অস্রধারী সন্রাসী নিয়ে নিষেধাজ্ঞা জমিতে আমন ধানের বীজ রোপন করতে যায়। এতে আমরা বাধা দিই। বর্তমানে ঐ জমিতে নিষেধাজ্ঞা এখনও বলবত রয়েছে বলে দাবি করেন তারা

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত সাখাওয়াত হোসেন জসিম চেয়ারম্যান বলেন এই জমি গুলো আমাদের ওয়ারিশি সম্পত্তি। কাগজ পত্রে আমরা মালিক।এখানে তাদের কোন জমি নেই। আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ঐ জমিতে গেলেন কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন আমি ওসি সাহেবের সাথে আলাপ করেই গেছি।

রামগতি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ সোলাইমান জানান বিষয়টি নিয়ে উভয় পক্ষের আদালতে মামলা আছে। ঐ জমিতে ১৪৪ ধারা জারী রয়েছে।এলাকায় শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে পুলিশ সজাগ রয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন :