লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি : করোনাভাইরাস প্রতিরোধে লক্ষ্মীপুরে অঘোষিত লকডাউন চলছে। গৃহবন্দি হয়ে পড়েছেন হাজার হাজার শ্রমজীবি। এ অবস্থায় কর্মহীন হয়ে পড়া শ্রমজীবিদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে অনেকেই খাবার পৌঁছে দিচ্ছেন। তবে সেটি মফস্বল শহরেই সীমাবব্ধ। প্রত্যন্ত অঞ্চলের অসহায় মানুষগুলোর কাছে পৌঁছাচ্ছে না খাদ্য সামগ্রী।
সদর উপজেলার চররুহিতা ইউনিয়নের চরমন্ডল গ্রামে দুই শতাধিক পরিবার এখনো খাদ্যসামগ্রী পায়নি। খুব কষ্টে দিন কাটাচ্ছে ওই গ্রামের দাসপাড়া ও হুলি রাস্তার মাথার বাসিন্দারা। জানা গেছে, ওই গ্রামের হাতে গুণা কয়েকজনকে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সরকারি ত্রাণ দেওয়া হয়েছে।
কিন্তু গ্রামটিতে এখনো পর্যন্ত এমপি, জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, রাজনীতিবিদ কিংবা কোন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের খাবার পৌঁছায়নি। এতে খাদ্য সংকট বিরাজ করছে গ্রামটিতে। এ সংকটের কথা অনেক সামাজিক লজ্জায় প্রকাশও করতে পারছে না। ভোট চাইতে আসা জনগণের ওপর ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠছেন শ্রমজীবিরা।
এদিকে করোনাভাইরাসের সম্পর্কে বিস্তারিত না জানলেও দোকানপাট ও কাজকর্ম বন্ধ রেখে বাড়িতে অবস্থান করছে গ্রামের বাসিন্দারা। তা সত্ত্বেও তাদের কোন খোঁজ নিচ্ছে না জনপ্রতিনিধিরা।
অভিযোগ রয়েছে, চররুহিতা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির পাটওয়ারী ওই এলাকায় নাম মাত্র ত্রাণ বিতরণ করেছেন। তাও সরকারি না বলছেন নিজের উদ্যোগে। তাহলে সরকারি বরাদ্ধ কোথায় ? এসমন প্রশ্ন সাধারণ জনগণের।
অন্যদিকে সদর উপজেলার এ গ্রামটি পড়েছে লক্ষ্মীপুর-২ (রায়পুর) সংসদীয় আসনে। কিন্তু ওই আসনের সংসদ সদস্য কাজী শহীদ ইসলাম পাপুল কোথায় আছেন কেউই জানেন না। এছাড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা যুবলীগের সভাপতি একেএম সালাহ উদ্দিন টিপু শুরু থেকে এখনো পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি ত্রাণ বিতরণ করেছেন। তার উদ্যোগে লক্ষ্মীপুর পৌরসভায় অর্ধেক দামে ভ্যানে করে আলু-পেঁয়াজ বিক্রি করছেন যুবলীগের নেতাকর্মীরা। কিন্তু চরমন্ডল গ্রামের তার খাদ্য সামগ্রী পৌঁছায়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চর মন্ডল গ্রামের এক চা দোকানি বলেন, প্রশাসনের কথামত দোয়ানদান বন্ধ রাইখছি। আঙ্গো আয়-রুজি বন্ধ অই গেছে। হোলাহাইন লই অন কষ্টে আছি। কেউ আঙ্গোরে সায্য করেনো। আশহাশের কেউই হাইছে কিনা হেডাও জানি না।
চররুহিতা ইউনিয়নের ২নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য নুরে আলম পাটওয়ারী জানান, এ এলাকায় ইউনিয়ন পরিষদ থেকে অল্প কিছু খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। পরে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে আমার কাছে তালিকা চেয়েছে। আমি ২০৬ জনের নাম দিয়েছি। কিন্তু এখনো কোন ব্যবস্থা হয়নি। কবে হবে তাও বলা যাচ্ছে না।