শিরোনাম

লক্ষ্মীপুরে চালের কৃত্রিম সংকট!

 

রায়পুর (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি :

লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে বাজারে চালের সরবরাহ কমিয়ে কৃত্রিম সংকট তৈরি করা হয়েছে বলে অভিযোগ খুচরা ব্যবসায়ীদের। তারা বলছেন, করোনাভাইরাস আতঙ্ক কাজে লাগিয়ে বড় ব্যবসায়ীরা এ সংকট তৈরি করেছেন। এতে করে উপজেলায় মোটা ও চিকন সব ধরনের চালের দাম কেজিতে বেড়েছে ১৫ থেকে ১৮ টাকা। ফজলুল করিম ও শহি উল্লাহসহ কয়েজন সাধারণ ক্রেতা বলছেন, দেশের কোথাও চালের সংকট নেই। শুধু রায়পুরেই চালের সংকট। গত দুই দিন বাজারে দোকানে চাল পাওয়া যাচ্ছে না। ব্যবসায়ীরা তাদের গোডাউনে চাল মজুত করে রেখেছে। চাল না পেয়ে বাড়ি চলে এসেছি। বাজারে চাল সংকটের বিষয়টি ইউএনও স্যারের কাছে অভিযোগ দিতে এসেছি।

তবে পাইকারি ব্যবসায়ীরা অভিযোগ অস্বীকার করে বলছেন, সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটির কারণে শ্রমিক ও পরিবহন কমে যাওয়ায় মোকাম থেকে পর্যাপ্ত চাল পাঠানো যাচ্ছে না। খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, করোনাভাইরাস আতঙ্ককে পুঁজি করে একশ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী চালের সরবরাহ কমিয়ে সংকট তৈরি করেছেন। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকার সুযোগে তারা দামও বাড়িয়ে দিয়েছেন। এর প্রভাব পড়েছে বাজারে।

রায়পুর শহরের মধ্যবাজারে ঘুরে দেখা গেছে, মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা দরে। একই মানের নাজিরশাইলও কেজি প্রতি একই দামে বিক্রি হচ্ছে। অথচ করোনাভাইরাস আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ার আগে এই দুই ধরনের চাল বিক্রি হতো ৫০ থেকে ৫৫ টাকা কেজি দরে। সরু চালের পাশাপাশি দাম বেড়েছে গরিবের মোটা চালেরও। পাইজাম ও লতা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৬০ টাকা কেজি, যা আগে ছিল ২৬ থেকে ৩২ টাকা কেজি। আর স্বর্ণা বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়, যা আগে ছিল কেজি প্রতি ২৫ থেকে ৩৫ টাকা।

ফজলুল করিম ও শহি উল্লাহসহ কয়েজন সাধারণ ক্রেতা বলছেন, দেশের কোথাও চালের সংকট নেই। শুধু রায়পুরেই চালের সংকট। গত দুই দিন বাজারে দোকানে চাল পাওয়া যাচ্ছে না। ব্যবসায়ীরা তাদের গোডাউনে চাল মজুত করে রেখেছে। বাজারে চাল না পেয়ে বাড়ি চলে এসেছি। চাল সংকটের বিষয়টি ইউএনও স্যারের কাছে অভিযোগ দিতে এসেছি।

খুচরা ব্যবসায়ীদের ভাষ্য, উপজেলা ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার মাধ্যমে কয়েকজন অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে জেল-জরিমানা করার পরেও গত দুই দিন বাজারে চালের সংকট বেড়েছে। তারা বলছেন, জেল-জরিমানায় ক্ষুব্ধ হয়ে বড় বড় ব্যবসায়ী মোকাম থেকে সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছেন।

রায়পুর মধ্য বাজারের চাল ব্যবসায়ী রবিন ভূঁইয়া বলেন,‘নওগাঁ, জয়পুরহাট, নাটোর ও কুষ্টিয়া থেকে চাল সেভাবে আসছে না। যা আসছে তারও দাম বেশি। তাই বেশি দাম দিয়েই কিনতে হচ্ছে আমাদের।’ তা ছাড়া গত দুই দিন গাড়ীও আসছেনা। একই বক্তব্য আরেক চাল ব্যবসায়ী আলী আহাম্মেদের। তিনি বলেন, ‘দেশের চালের সবচেয়ে বড় মোকাম নওগাঁ ও কুষ্টিয়ায়। এই দুই মোকাম থেকে চাল আসা কমে গেলে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে রায়পুরে চালের বাজারে। গত দুই দিনের বেশি সময় চালের স্বাভাবিক সরবরাহ আসছে না। এ কারণে রায়পুরে চালের দাম বেড়েছে।’

রায়পুর বাজার বণিক সমিতির সভাপতি শফিক পাঠান বলেন, ‘করোনাকে পুঁজি করে শহরের কয়েকজন ব্যবসায়ী কাউকে তোয়াক্কা নাা করে তাদের ইচ্ছে মত দাম হাঁকিয়ে চালসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য বিক্রি করছে। প্রশাসনকে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আমি অনুরোধ জানাই।

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক অঞ্জন চন্দ্র পাল বলেন,‘চালের কোথাও কোনও সংকট হওয়ার কথা নয়। নতুন ধানও উঠবে কয়েকদিন পরে।’ কেউ কৃত্রিম সংকট তৈরি করলে তার বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

নিউজটি শেয়ার করুন :