আ স ম আবু তালেব, ঢাকা বিশেষ প্রতিনিধি:
মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ের শিমুলিয়া ফেরিঘাটে মানুষের ঢল নেমেছে। এ যেন ঈদ শেষে কর্মস্থল ঢাকায় ফিরার প্রতিযোগিতায় নেমেছে তারা। প্রাণঘাতী নভেল করোনার এই মহামারীতে তাদের মধ্যে নেই আতঙ্কের কোনো লেশমাত্র।
রোববার সকাল থেকে শত শত যাত্রী গাদাগাদি দক্ষিণবঙ্গের এ নৌরুটে শিমুলিয়াঘাটে ছুটে আসেন। পোশাক কারখানা খোলার পর ঈদের কেনাকাটায় শপিং মল ও বিপনি বিতান খুলে দেওয়ায় দক্ষিণ বঙ্গের জেলাগুলো থেকে যাত্রীরা ছুটে যাচ্ছেন রাজধানীসহ আশপাশের নারায়নগঞ্জ ও গাজীপুরে। লকডাউন ভেঙে করোনার ভয়কে উপেক্ষা করে ফেরিতে ঘেঁষাঘেঁষি করে উদ্দেশে ছুটছে এসব মানুষ। এতে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির আশঙ্কা থাকলেও গত ১৪ দিন ধরে একই চিত্র দেখা যাচ্ছে ফেরিঘাটে।
ঘাটে বাস না থাকায় যানবাহনের জন্য শত শত লোকের অপেক্ষা। পরস্পরের সঙ্গে ঘেঁষাঘেঁষি করে তারা ছুটছেন যানবাহনের খোঁজে। বাস না পেয়ে পিকআপ ভ্যান, নছিমন করিমন, অটোরিকশা, মাইক্রোবাস, ইয়েলোক্যাব, রেন্ট এ কারসহ বন্ধ থাকা উবার ও পাঠাও-এর শত শত মোটরসাইকেল ও গাড়িতে অফ লাইনে তারা ঢাকায় ফিরছেন। এতে যাত্রীদের কয়েকগুণ ভাড়া বেশি খরচ হচ্ছে।
আজ ১৪তম দিনেও দেখা গেছে মানুষের ঢাকামুখী চলাচল আরো বেড়েছে। প্রথমদিকে পোশাককর্মীরা ঢাকামুখী হলেও সরকার মার্কেট খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলে নানা শ্রেণির মানুষ ঢাকা অভিমুখে ছুটতে শুরু করে। এরপর ঢাকার মার্কেট সমিতিগুলো মার্কেট না খোলার সিদ্ধান্ত নিলেও কর্মমুখী মানুষ ঢাকার দিকে ছুটছে শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি নৌরুট দিয়ে।
মাওয়া নৌ পুলিশ ফাঁড়ি ইনচার্জ পরিদর্শক সিরাজুল কবির জানান, আজ রোববার সকাল থেকে মানুষের ঢল নেমেছে শিমুলিয়া ঘাটে। তারা ফেরিতে ঘেঁষাঘেঁষি করে কাঁঠালবাড়ি ঘাট থেকে ফেরিতে করে শিমুলিয়া ঘাটে এসে নামছে। এতে করোনা সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা থাকলেও তাদের মধ্যে কোনো ভয় কাজ করছে বলে মনে হয়নি। আসলে লোকজন বুঝতে পারছে না করোনা কত মারাত্মক। এই মরণব্যাধিকে পাত্তা না দিয়ে তারা ছুটছে ঢাকার দিকে। ঘাটের অবস্থা দেখলে মনে হয় যেন ঈদ শেষে কর্মস্থলে ফিরছে মানুষ।
মাওয়া ট্রাফিক জোনের টিআই হিলাল উদ্দিন বলেন, লোকজনের ঢাকামুখী ফেরা জেনো বন্ধ হচ্ছে না। প্রতিদিনই শত শত যাত্রী ঢাকার দিকে ছুটছে দক্ষিণবঙ্গ থেকে। আজ মনে হচ্ছে মানুষের ঢল যেন আরো বেড়েছে। ফেরি সংখ্যা বাড়লেও মানুষের ঘেঁষাঘেঁষির যেন শেষ নেই। ঘাটে বাস না থাকলেও বিভিন্ন লোকাল পরিবহনে গ্রামের ভেতর দিয়ে ভেঙে ভেঙে ঢাকায় ফিরছেন এসব মানুষ।
বিআইডাব্লিউটিসি’র শিমুলিয়া ঘাটের এজিএম মো. শফিকুল ইসলাম জানান, বর্তমানে ১২টি ফেরি চলাচল করছে। ফেরির সংখ্যা বাড়লেও কমেনি ঢাকামুখী যাত্রীর সংখ্যা।