শিরোনাম

সময়ের সাহসী সংবাদপত্র দৈনিক ওলামা কন্ঠ (পর্ব-৮)

 

যুগোপযোগী অন্যতম জনপ্রিয় সংবাদপত্রের নাম দৈনিক ওলামা কন্ঠ। অবশেষে আপনাদের আকাঙ্ক্ষার অবসান ঘটিয়ে গত দুই জানুয়ারী থেকে সাপ্তাহিক ভাবে প্রকাশিত হতে যাচ্ছে এ সংবাদপত্রটি। সম্পাদক মহোদয় সহ মেধাবী সাংবাদিকদের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফসল দৈনিক ওলামা কন্ঠ। শীর্ষস্থানীয় অনেক সংবাদপত্রের পরিবারের নিকট দৈনিক ওলামা কন্ঠ এখন ঈর্ষণীয় ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে।

এক ঝাঁক মেধাবী সৎ ও সাহসী সাংবাদিকদের কলম যুদ্ধে এক এক করে মুখোশ উম্মোচিত হয়ে পড়ছে অপশক্তির। এতে সমাজ তথা সর্বত্র হতে বাধ্য পরাস্ত। তাদের লেলিহান দৃষ্টিকে আমি কখনো পরোয়া করিনি।

১৯৮৬ ইং সালের একটি ঘটনা। সবে মাত্র এস. এস. সি. পাশ করে রাজধানী ঢাকার মতিঝিল শাপলা চত্বরের নিকটবর্তী একটি ভবনের সাত তলা থেকে প্রকাশিত “দৈনিক বতর্মান বাংলা” সংবাদপত্রের রিপোর্টার হিসেবে নিয়োগ পেলাম। লৌহজংস্থ মাওয়ার একটি মৎস্য আড়ৎের ম্যানেজারও ছিলাম। হঠাৎ একদিন সকালে সম্পাদক মহোদয়ের একটি চিঠি হাতে নিয়ে জনৈক মুরব্বী আমাকে বাড়িতে না পেয়ে সরাসরি মৎস্য আড়ৎে এসে আমাকে খুঁজে বের করলেন। সালাম বিনিময়ের পর একটি চিঠি আমার হাতে গুঁজে দিলেন। চিঠি আদ্যোপান্ত পড়ে বুঝতে পারলাম সম্পাদক মহোদয় জটিল ব্যাপার সহজ করতেই মুরব্বীকে আমার নিকট পাঠিয়েছেন। তার বাড়ি শরীয়তপুর। সম্পর্কে সম্পাদক মহোদয়ের ঘনিষ্ঠ আত্মীয়।

তার আদরের একটি মাত্র ছেলে প্রেম করে অত্র উপজেলাস্থ শিমুলিয়া গ্রামের জনৈক প্রভাবশালী ব্যক্তির মেয়েকে বিয়ে করার পর প্রায় এক মাস ঘর সংসারও করে। প্রভাবশালী পিতার ছলচাতুরি বুঝতে না পেরে তার ছেলের সুন্দরী বধূ কান্না করে মৃত্যু শয্যায় শায়িত পিতাকে লৌহজংস্থ শিমুলিয়া গ্রামে এক নজর দেখতে গিয়ে আর ফিরে আসেনি। পরবর্তীকালে জানা যায়, মেয়েকে কৌশলে ফিরিয়ে নিতেই মেয়ের বাবা চিত্রাভিনেতা এ টি এম শামসুজ্জামানের মতোই অভিনয় করে জয়ী হয়েছিলেন।

কাজ পরিসমাপ্তির পর মাওয়া বাজার থেকে পাঁচ কেজি রসগোল্লা কিনে দু’ জনেই রিক্সা যোগে অনেক খুজাখুজিঁর পর পেয়ে গেলাম তার পুত্র বধূর কাঙ্ক্ষিত বাড়ি। অকস্মাৎ আমাদের দু’ জনকে দেখে হতবাক হয়ে গেল উপস্থিত বাড়ির লোকজন। পুত্র বধূর প্রভাবশালী পিতা ফিসফিসিয়ে কানে কানে দু’ জন লোককে কি যেন বলল। তারপর আমাদের ঘরে বসিয়ে বিস্কুট খেতে ও চা পান করতে দিল এবং দুপুরে পেট ভরে দাওয়াত না খেয়ে যেতে নিষেধ করল।

খাবারের পর্ব শেষ হওয়ার পরপরই হঠাৎ লৌহজং থানার সাতজন পুলিশ এসে হাজির হলো পুত্র বধূর বাড়িতে। বুঝতে আর দেরী হলো না আমাদের পুলিশে ধরিয়ে দিতে এবারও ছলচাতুরির আশ্রয় নেয়া হয়েছে। পুলিশ আমাদের গ্রেপ্তারের কথা শুনিয়ে তাদের মাঝখানে রেখে হাটতে নির্দেশ দিল। পরিচয় গোপন করে নির্দেশানুযায়ী হাটতে হাটতে সাতঘড়িয়া কবরস্থান সংলগ্ন রাস্তায় একটি টেম্পু দেখতে পেলাম। আমাদের টেম্পুতে ওঠিয়ে সরাসরি লৌহজং থানায় নিয়ে গেল।

ওসি সাহেবের কক্ষে ঢুকতেই আমার প্রেস কার্ডটি প্রদর্শন করে পূণরায় পকেটে ঢুকিয়ে ফেললাম। ওসি সাহেব এবার নড়েচড়ে বসে জনৈক দারোগাবাবুকে আমাদের জন্য চা বিস্কুট আনার নির্দেশ দেওয়ায় ঘর্মাক্ত পুলিশগণ আশ্চর্যভাবে তাকিয়ে রইল। চা বিস্কুট খাবার পরে আমকে পুত্র বধূর বিয়ের ব্যাপারে কি করা যায় তা সমাধান দেওয়ার সবিনয় অনুরোধ জানাল। এক পর্যায়ে পুত্র বধূর পিতার এক কথায় উত্তেজিত হয়ে প্রেমিক পুত্রের পিতা পুত্র বধূকে বাড়িতে নিয়ে যেতে অসম্মতি প্রকাশ করল। বেঁধে গেল চরম হট্টগোল।

ওসি সাহেবের নিকট থেকে বিদায় নিয়ে দু’ জনে রিক্সায় ওঠে বসে শুনতে পেলাম পুত্র বধূর পিতা বলছে” খামাকা কতগুলো টাকা গচ্চা দিলাম”! এবার চুপচাপ দু’ জনে ফিরে গেলাম যার যার বাড়ি। সঙ্গে থাকুন এবং জানতে থাকুন…. এরপর কি ঘটবে?

 

লেখক-

আ.স.ম.  আবু তালেব

নিউজটি শেয়ার করুন :