শিরোনাম

[১]ইশাছাত্র আন্দোলন’র নেতা কর্মীদের কারাবরণ কাহিনী-ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে যেমন ছিলেন তাঁরা

২১ নভেম্বর ১৯৯৯ জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম উত্তর গেইটে পূর্ব নির্ধারিত সমসাময়িক ইস্যুতে ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের বিক্ষোভ মিছিলে যোগদান করেন নেতাকর্মীরা। মিছিল পল্টন, প্রেসক্লাব, হাইকোর্ট ঘুরে জিরো পয়েন্ট আসা মাত্র পুলিশ মিছিলে বাধা প্রদান করে।

উত্তাল জনতার গতি থামাতে না পেরে মিছিলে অতর্কিত হামলা চালায় পুলিশ। মুসুল্লিদের ওপর টিয়ার সেল ও লাঠিচার্জ করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এক পর্যায়ে পুলিশ জনতার সংঘর্ষে অসংখ্য মানুষ আহত হয়। মুহুর্তের মধ্যে এলাকার দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ আহতদের চিকিৎসা সেবা প্রদানে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। রাত ২ টার পর পুরানা পল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঘিরে ফেলে পুলিশ। কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অবস্থানরত সকল নেতৃবৃন্দকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায় মতিঝিল থানায়।

অফিস থেকে গভীর রাত্রে যাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়:

১) মাওলানা গাজী আতাউর রহমান
তৎকালীন কেন্দ্রীয় সভাপতি: ইশা ছাত্র আন্দোলন।

২) অধ্যাপক সৈয়দ বেলায়েত হোসেন
তৎকালীন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক, ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন

৩) শাহ ইফতেখার তারিক
তৎকালীন সেক্রেটারি জেনারেল, ইশা ছাত্র আন্দোলন

৪) রশিদ আহমদ ফেরদৌস
তৎকালীন জয়েন্ট সেক্রেটারি, ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন, ঢাকা মহানগর

৫) মুফতি মোস্তফা কামাল
তৎকালীন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক, ইশা ছাত্র আন্দোলন

৬) মাওলানা আইনুদ্দীন আল আজাদ
তৎকালীন কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণ সম্পাদক, ইশা ছাত্র আন্দোলন

৭) মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম
তৎকালীন কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক, ইশা ছাত্র আন্দোলন

৮) কাওছার অব্দে রাব্বী
তৎকালীন কেন্দ্রীয় অর্থ সম্পাদক, ইশা ছাত্র আন্দোলন

৯) মাওলানা মোঃ কামাল উদ্দিন
তৎকালীন কেন্দ্রীয় ছাত্র কল্যাণ সম্পাদক, ইশা ছাত্র আন্দোলন

১০) মাওলানা মুহাম্মাদ নেছার উদ্দীন
তৎকালীন কেন্দ্রীয় সদস্য, ইশা ছাত্র আন্দোলন

১১) মাওলানা মোঃ খলীলুর রহমান
তৎকালীন প্রশিক্ষণ সম্পাদক, ইশা ছাত্র আন্দোলন, ঢাকা মহানগর উত্তর

১২) শহিদুল ইসলাম কবির
তৎকালীন সাংগঠনিক সম্পাদক, ইশা ছাত্র আন্দোলন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ

১৩) রেদওয়ানুল বারী
তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক, ইশা ছাত্র আন্দোলন, নোয়াখালী জেলা

বাদ ফজর তৎকালীন আমির পীর সাহেব চরমোনাই (রহ) স্বশরীরে থানায় গিয়ে গ্রেফতারকৃত নেতৃবৃন্দের খোঁজ খবর নেয়। লেখক মাওলানা সাইফুল ইসলাম, তখন রাজধানীর ইসলামপুর ইসলমিয়া মাদরাসায় অধ্যায়নরত ছিলেন। ২২ নভেম্বর ১৯৯৯ তাঁর মূল ক্লাশগুলো শেষ করে চলে আসেন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পল্টন অফিসে। তিনি রাতেই সংবাদ পেয়েছিলেন কেন্দ্রীয় কার্যালয় অভিযানের।

আমি মাওলানা সাইফুল ইসলাম, মাওলানা সাইফুদ্দিন ইয়াহিয়া ও
অধ্যাপক ফজলুল হক মৃধা সহ ৩ জন চলে গেলাম মতিঝিল থানায় (বর্তমান পল্টন থানা)। ডিউটি অফিসারকে বললাম গতকাল রাতে চরমোনাইর পীর সাহেবের অফিস থেকে যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের জন্য কিছু খাবার নিয়ে আসছি। এবং তাদের সাথে দেখা করবো। পুলিশ কর্তৃপক্ষ আমাদের জানালেন অপেক্ষা করতে হবে, আমি ওসি সাহেবের অনুমতি নিয়ে আসছি।

ওসি সাহেবের নির্দেশে বিউটি অফিসার এসে আমাদের ৩ জনের বিস্তারিত নাম ঠিকানা লিপিবদ্ধ করে গ্রেফতার দেখিয়ে থানা হাজতে পাঠিয়ে দিলেন। আগের রাতে গ্রেফতারকৃত নেতৃবৃন্দ আমাদের ৩ জনকে দেখে হেসে ফেলেন!

লেখক মাওলানা সাইফুল ইসলাম, পরিচালক: আহবান শিল্পীগোষ্ঠী, কেন্দ্রীয় প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক: জাতীয় ওলামা-মাশায়েখ আইম্মা পরিষদ।

চলবে….

নিউজটি শেয়ার করুন :