এম.কলিম উল্লাহঃ ৯ দফা দাবিতে রোববার ভোর ৬টা থেকে চট্টগ্রাম বিভাগীয় গণ ও পণ্য পরিবহন মালিক ঐক্য পরিষদের ডাকে অনির্দিষ্টকালের জন্য পরিবহন ধর্মঘট চলছে।
গত শুক্রবার ৬ আগস্ট বিকেলে হাটহাজারী বাসস্ট্যান্ডস্থ একটি গেস্ট হাউজে এক জরুরি বৈঠকে ৯ দফা দাবি উত্থাপন করে অনির্দিষ্টকালের জন্য পরিবহন ধর্মঘটের ঘোষনা দেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় গণ ও পণ্য পরিবহন মালিক ঐক্য পরিষদের আহবায়ক মঞ্জুরুল আলম চৌধুরী মঞ্জু।
গণ ও পণ্য পরিবহন মালিক ঐক্য পরিষদের আহবায়ক মঞ্জুরুল আলম বলেন, হয়রানি বন্ধে ৯ দফা দাবিতে ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে গত বুধবার দুপুরে নগরীর মোটেল সৈকতের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলন করি। প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে লিখিতভাবে জানানো হলেও কোন সাড়া পাওয়া যায়নি। উল্টো চাঁদাবাজরা প্রশাসনের সাথে আঁতাত করে আমাদের প্রতিহত করার হুমকি দিয়েছে। তাই আমরা ঘরে বসে থাকতে পারিনা।
আমাদের দাবি না মানায় রবিবার ৮ সেপ্টেম্বর ভোর ৬টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য গণ ও পণ্য পরিবহন বন্ধ রেখে চট্টগ্রাম বিভাগে সর্বাত্মক পরিবহন ধর্মঘট পালিত হচ্ছে। তিনি আরো জানান, নানামুখী হয়রানিতে পরিবহন মালিকরা ক্ষতিগ্রস্ত। কোথাও আইনের তোয়াক্কা নেই। বিআরটিএ’তে কাগজপত্র হালনাগাদ করতে গেলে হয়রানি, সড়কে বিআরটিএ’র ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশের হয়রানিতে পরিবহন মালিকরা অতিষ্ঠ। এখন কোন উপায় না পেয়ে আমাদের রাজপথে নামতে হয়।
৯ দফা দাবিগুলো হলো- গণ ও পণ্য পরিবহনের কাগজপত্র হালনাগাদ করার জন্য জরিমানা মওকুফ করতে হবে। জরিমানা মওকুফের সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত কাগজপত্র যাচাই বাছাইয়ের নামে হয়রানি বন্ধ করতে হবে। বিআরটিএ ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক ভোক্তা অধিকার আইন প্রয়োগ করে গণ ও পণ্য পরিবহনে কোন অতিরিক্ত জরিমানা আদায় করা যাবে না। হাইওয়ে ও থানা পুলিশ কর্তৃক গাড়ি জব্দ ও রিকুইজিশন বন্ধ করতে হবে। চট্টগ্রাম মেট্টো এলাকায় গাড়ির ইকোনোমিক লাইফের অজুহাত দেখিয়ে ফিটনেস ও পারমিট নবায়ন বন্ধ রাখা যাবে না। ট্রাফিক পুলিশ কর্তৃক যান্ত্রিক ক্রুটিযুক্ত গাড়ি ছাড়া অন্যকোন অজুহাত দেখিয়ে গণ ও পণ্য পরিবহন টু বা ডাম্পিং করা যাবে না। ড্রাইভার কর্তৃক চালিত গাড়ির রেকার ভাড়া আদায় করা যাবে না। সহজ শর্তে চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদান করতে হবে।
কাগজপত্র হালনাগাদের ক্ষেত্রে বিআরটিএ’র কার্যক্রমে ভোগান্তি বন্ধ করতে হবে। বৃহত্তর চট্টগ্রাম বিভাগের সড়ক ও মহাসড়কে গ্রাম সিএনজি ও মেট্টো সিএনজি চলাচলের ক্ষেত্রে বিআরটিসি’র সিদ্ধান্ত কার্যক্রম করতে হবে। অননুমোদিত যান চলাচল বন্ধ করতে হবে এবং চাঁদাবাজদের টোকেন বাণিজ্য বন্ধ করতে হবে। সড়ক ও মহাসড়কে যত্রতত্র গাড়ি তল্লাশির নামে যাত্রী হয়রানী বন্ধ করতে হবে। ঢাকা, চট্টগ্রাম মহাসড়কে স্থাপিত ওয়ে স্কেল দুটি পরিচালনার দায়িত্ব দেশপ্রেমিক বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে দিতে হবে এবং সারাদেশে একই নিয়মে ওয়ে স্কেল স্থাপন করতে হবে।
পণ্যের উৎসস্থলে ওজন স্লিপ প্রদান করতে হবে। মহাসড়কে পণ্য চুরি/ডাকাতি রোধকল্পে বর্তমান আইনের পরিবর্তন ঘটিয়ে নতুন আইন প্রণয়ন করতে হবে। মহাসড়ক ও মেট্টো শহর এলাকায় গণ ও পণ্য পরিবহন যত্রতত্র দাঁড় করিয়ে চেকিংয়ের নামে হয়রানী বন্ধ করে নির্দিষ্ট দুটি স্থানে চেকিং পয়েন্ট নির্ধারণ করার জোর দাবি জানান।
এদিকে পরিবহন ধর্মঘটের কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ জনগণ।