শিরোনাম

কমলনগরে ইউপি নির্বাচনকে ঘিরে দলীয় মনোনয়ন পেতে প্রার্থীদের দৌড়ঝাঁপ

আমানত উল্যাহ,কমলনগর (লক্ষ্মীপুর)

আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে নির্বাচনী হাওয়া বইতে শুরু করেছে।নির্বাচন কমিশন নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা না করলেও আগাম প্রস্তুতি হিসেবে স্ব স্ব ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে দলীয় প্রতীক নৌকা পেতে সম্ভাব্য প্রার্থীরা ও সদস্য পদে একইভাবে দলীয় আনুকূল্য পেতে সংশ্লিষ্টরা দলের স্থানীয় নেতৃবৃন্দের কাছে নিজের পক্ষে মনোনয়ন নিশ্চিত করতে শুরু করেছেন দৌড়ঝাঁপ। অনেকেই ঢাকায় গিয়ে দলের হাইকমান্ড সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য নানা তদবির-সুপারিশ শুরু করেছেন।এদিকে দলীয় প্রার্থীর বাহিরে অন্য দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা এলাকায় জনগন ও ভোটারদের নিকট দোয়া ও সহযোগীতা কামনা করে নিরবে প্রচারণা চালাতে দেখা গেছে।

নিকট অতীতের নির্বাচন অভিজ্ঞতা থেকে অনেকেই মনে করছেন দলীয় হাইকমান্ডের কাছে সমর্থন আদায় করতে পারলে নৌকা প্রতীক নিয়ে ও অন্যান্য পদে দলীয় আনুকূল্য পেলে বিজয় সুনিশ্চিত। তাই এ দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা সুকৌশলে দৌড়ঝাপ শুরু করে দিয়েছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা উর্ধ্বতন নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণের মাধ্যমে নিজ নিজ পক্ষে শক্তিশালী সমর্থক বলয় তৈরি করে দলীয় মনোনয়ন নিশ্চিত করতে ব্যস্ত রয়েছেন। এছাড়া সম্ভাব্য প্রার্থীরা আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু করতে না পারলেও নানা বিয়ের অনুষ্ঠান,সামাজিক আচার অনুষ্ঠানে অনুদান দিয়ে জনগণের কাছাকাছি থাকার চেষ্টা করছেন।

আবার অনেকেই মনোনয়ন ক্রয় করতে মোটা অংকের টাকা জোগাড়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। তারা মনে করেন যে, মোটা অংকের টাকা দিয়ে মনোনয়ন ক্রয় করে নৌকার টিকেট বাগিয়ে নিতে পারলেই বিজয় সুনিশ্চিত। এমন ভাবনা থেকেই তারা টাকার জোগাড়ে ব্যস্ত হয়ে গেছেন।
তবে একটি নিরপেক্ষ ভোট পর্যবেক্ষণ সূত্র মতে, উপজেলার চরকাদিরা সহ অন্যান্য ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে জেতার জন্য কেবল নৌকা প্রতীক নির্ভরতা যথেষ্ট নয়। প্রার্থীর ন্যুনতম গ্রহণ যোগ্যতা, অতীত কর্মকাণ্ড নিয়ে ব্যক্তি ইমেজের ভোট ব্যাংক ফ্যাক্টর হবে।

কমলনগর উপজেলার ৯ টি ইউনিয়নের মধ্যে চরফলকন, হাজিরহাট ও তোরাবগঞ্জ ইউনিয়নে নির্বাচন হয়ে গেছে। অবশ্য এ তিনটিতেই নৌকা প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান হয়েছেন তারা। বাকিগুলোর মধ্যে চরকালকিনি, সাহেবেরহাটে আইনি জটিলতার কারণে নির্বাচন হচ্ছেনা। বাকী ৪ টি ইউনিয়ন যথাক্রমে পাটারীরহাট, চরকাদিরা, চরমার্টিন ও চরলরেন্স ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। পুরো উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় জমে উঠেছে ভোটারদের মাঝে নির্বাচনী আলোচনা। কে মনোনয়ন পাচ্ছেন আবার কে পাচ্ছেন না এসব নিয়ে চলছে নানা বিশ্লেষণ।

সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে প্রাথমিক ভাবে যাদের নাম বলাবলি চলছে, তাদের মধ্যে পাটারিরহাট ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান ও কমলনগর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট নুরুল আমিন রাজু এবারও নৌকা প্রতীক পেতে শতভাগ আশাবাদী। তার সঙ্গে নৌকা প্রতীক পেতে আওয়ামী লীগ নেতাদের কাছে দৌড়ঝাঁপ করছেন সাবেক চেয়ারম্যান রাশেদ বিল্লাহ আলমগীর।

চরকাদিরা ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান হোসেন হাওলাদার, আওয়ামীলীগের সমর্থনে সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ভিপি নুরুন্নবী চৌধুরী,সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আশ্রাফ উদ্দিন রাজন রাজু , নুরুল ইসলাম সাগর, ওমর ফারুক ভুইয়া, ইব্রাহিম বাবুল মোল্লা, জয়নাল আবেদীন মেম্বার ও মিয়া মোঃ মনিরুল ইসলাম রিপু।

চরমার্টিন ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান ইউছুফ আলী মিয়া এবারও নৌকার জন্য ছুটছেন। এখানে তার সঙ্গে নৌকা প্রতীক পেতে জোর লবিংয়ে এগিয়ে চলেছেন ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি প্রার্থী ও ক্লিন ইমেজের নেতা, ব্যবসায়ী মোঃ আব্বাস উদ্দিন, সাবেক যুবলীগ নেতা জিয়া উদ্দিন ফারুক,

চরলরেন্স ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান আহসান উল্যাহ হিরন এবারও নৌকার প্রত্যাশা করছেন। তবে এ ইউনিয়নে উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি মাস্টার একেএম নুরুল আমিনের নিজের ইউনিয়ন এবং সাবেক চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি। তার প্রার্থীতা এবারও সুনিশ্চিত মনে করছেন ঘনিষ্ঠ সূত্র। গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার জন্য তার পদত্যাগ জনিত কারণে উপনির্বাচনে হিরন চেয়ারম্যান হয়েছিলেন।

কমলনগর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মাস্টার নুরুল আমিন ও সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট একেএম নুরুল আমিন রাজু বলেন, দলের জন্য ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়ন করা হবে।পাশাপাশি ব্যক্তি ইমেজ সহ মাঠের রাজনীতিতে জন সম্পৃক্ততা দেখা হবে। জনবিচ্ছিন্ন কাউকে মনোনয়ন সুপারিশ করা হবে না।

অপরদিকে এবারের স্থানীয় ইউপি নির্বাচনে আঞ্চলিক ও রাজনৈতিক দলগুলো নিরপেক্ষ ভূমিকা বজায় রাখলে তৃণমূল পর্যায়ের ইউনিয়ন পরিষদে সঠিক ও স্বচ্ছ জনপ্রতিনিধি ঠাঁই পেতে পারেন বলে মনে করেন সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ।

নিউজটি শেয়ার করুন :