শিরোনাম

মুফতি রিজওয়ানকে ডিবি পরিচয় তুলে নেওয়া ও জিজ্ঞাসাবাদ: মুফতি আবদুল্লাহ অল্লাহ সালেহী

 

তবে মুরুব্বিগণ যে আমাদের ছায়াদাতা, সেটা আমি বাস্তবে প্রমান পেয়েছি মহাবিপদে। তাদের কুরবানির কথা কথা স্বরণ হলে মনে চায় নিজের জানটা তাদের জন্য কুরবান করে দেই।

ওলামা রিপোর্ট, গাজিপুর: আমার ছোটভাই মুফতী রিজওয়ান রফিকীকে ডি বি পুলিশ পরিচয়ে গত গত (১১ অক্টোবর ১৯ইং) শুক্রবার রাত ৮টায় নিজ প্রতিষ্ঠিত মাদ্রাসা মার্কাযুন নূর বোর্ডবজার, গাজিপুর থেকে তুল নেওয়া হয়।

আমি সে- সময় সাতক্ষীরা কলারোয়ায়। সেদিনেই পরিবারসহ গাজীপুরে রওনা দিছিলাম। গাড়ি ছিলো রাত ৮টায়। গাড়ির গেটের সামনে থাকাকালীন সময়ে খবরটা পেলাম।

সংবাদ পেলাম ৮.২০ মিনিট নাগাত। সাথে সাথে রিজওয়ানের মোবাইলে কল করলাম। রিংও হলো, তবে দ্বিতীয়বার কলটা কেটে দেওয়া হলো তৃতীয়বার মোবাইলটা বন্ধ পেলাম।
সন্ধেহের স্থানটা প্রবল হতে লাগলো,
কয়েকটি কারণে।

এক. মাদ্রাসা প্রাথমিক সাময়িক পরিক্ষার বন্ধ চলছে। দুই. কাহারো সাথে যোগাযোগ করতে না দেওয়া, এমনকি জামা কাপড়ও সে নিতে চাইলে নিতে দেওয়া হয়নি। তিন. তখন তার সাথে আলাপচারিতায় ছিলো বন্ধুবর মুফতি হারুন সে সঙ্গে যেতে চাইলেও তাকে গাড়িতে উঠতে না দেয়া। চার. মোবাইলে রিং হল কেটে দেয়া। পাঁচ. কোন অফিসে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে সেটা তারা বললেও আমরা বুঝতে না পারা। ছয়. থানাতে যোগাযোগ করা হলে তাদের কাছে কোন ইনফরমেশন নেই বলে সাফ জানিয়ে দেয়া।

এমন পরিস্থিতিতে সব থেকে বড় সন্ধেহ ছিলো যে, সন্ত্রাসী সংগঠন হিজবুত তওহীদের সন্ত্রাসী বাহিনীর কোন ষড়যন্ত্রের শিকার হলো কি না?
কারণ ইতিপূর্বে তারা বিভিন্নভাবে তাকে হয়রানি করে আসছিল।

আমি সাথে সাথে ফেবুতে স্টাটাস দিলাম ছোট ভাইকে ডিবি পরিচয়ে তুলে নেওয়া হয়েছে। মোবাইলটা রিং হয়ে বন্ধ। মুহুর্তেই খবরটা ভাইরাল হলো।

ডিবি অফিস ওয়ারলেস গেট, গাজিপুরে রাতেই দুইজনকে পাঠানো হয়। তারা সেখানে সারা রাত নির্ঘুমে কাটিয়েও কোন তথ্য না পেয়ে বাদ ফজর চলে আসে। অফিস থেকে জানালেন অফিসারগণ সকাল ১০টায় আসবেন।

তখন এসে আপনারা যোগাযোগ করুন। তবে রাতের মধ্যেই আমরা অনেকাংশে নিশ্চিত হই যে, সে প্রশাসনের হেফাজতে আছে। বাট কোথায় আছে, সেটা অজ্ঞাত।
পরের দিন ঘটনাক্রমে তাকে আমি ডিবি অফিসের ভিতর থেকে স্বচক্ষে দেখে নিশ্চিত হই। আলহামদুলিল্লাহ।

পরক্ষণেই বন্ধুবর মুফতি অাবুল কালাম তাইয়্যেবী ও মুফতি আনোয়ার শাহ এর আবেগ আর প্রচেষ্টায় সরাসরি সাক্ষাৎ পাই।
শুকরিয়া প্রিয় আহবাবগণ তোমাদের জাযা মালিক দেবেন। তাকে মুক্ত করার জন্য আমাদের সকল সহ- পাঠীদের নিজ নিজ অ্যাংগেল থেকে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত ছিলো।

কতো বন্ধু যে কতো মুরুব্বিদের দ্বারস্থ হয়েছেন, আমারও অজানা ছিল। তবে মুরুব্বীগণ যে বাবার ভুমিকায় শুরু থেকেই নেমে পড়েছেন, সেটার কিঞ্চিত জানা হয়েছে মুক্তির পর। এখনও যে কতো মুরুব্বিদের প্রাণপন কুরবানীর কথা লুকিয়ে আছে একমাত্র গায়েবের মালিকই জানেন।

স্বচক্ষে দেখলাম- কোন মুরুব্বি জাহেরান পাশে, কোন মুরুব্বী বাতেনান পাশে, কেউবা চোখের অশ্রু, কেউ আবার আদ-দুনিয়া বিল ওয়াসায়েল লা বিল ফাজায়েলের ভূমিকায়। তবে মুরুব্বিগণ যে আমাদের ছায়াদাতা, সেটা আমি বাস্তবে প্রমান পেয়েছি মহাবিপদে।
তাদের কুরবানির কথা কথা স্বরণ হলে মনেচায় নিজের জানটা তাদের জন্য কুরবান করে দেই।

তবে এখানে আরেকটি কথা সকলের জন্য জানা জরুরী। আমাদের আক্বাবির ও আসলাফগণের মূল কাজ ছিলো ফেরাক্বে বাতেলার মোকাবেলা করা, আর এর গায়েবী সাহায্যকারী আল্লাহ নিজেই।
যার বাস্তব প্রমাণ গতকালে ছোটভাইয়ের কাংক্ষিত মুক্তি।

পরিশেষে ডি বি পুলিশ কর্মকর্তারদের কৃতজ্ঞতা স্বীকার না করলে নয়। ভাই রফিকীকে নেওয়ার পর তারা তাদের দায়িত্ব পালন করেছেন শতভাগ ন্যায়, নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সাথে। তাকে কোনরূপ হয়রানি বা হেনস্থার চেষ্টা তারা করেননি।

নিবিড় পর্যবেক্ষণের পর (১৩ অাক্টোবর ১৯ইং) দুপুর ১২ টার দিকে তারা তাকে স্ব-সম্মানে আমাদের হাতে সোপর্দ করেন। ধন্যবাদ দেশের অতন্দ্র প্রহরী গোয়েন্দা ডিপার্টমেন্ট গাজিপুরকে ও দেশের মর্দে মুজাহিদদের- কে।

নিউজটি শেয়ার করুন :