শিরোনাম

সদর উপজেলা কমিউনিটি পুলিশিং কার্যক্রমে পাল্টে যাচ্ছে গ্রাম অঞ্চলের আইন শৃংঙ্খলা পরিস্থিতি

নিজস্ব প্রতিবেদক: পাড়া মহল্লায় অপরাধ সমস্যা সমাধানে পুলিশ ও জনগণের যৌথ অংশীদারিত্ব প্রতিষ্ঠার এগিয়ে চলা পুলিশিং দর্শনে পাল্টে যাচ্ছে সদর উপজেলার আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি।

সম্প্রতি সময়ে গলাকাটা গুজব ইভটিজিং ও মাদকের বিরুদ্ধে জনসচেতনা সৃষ্টির পাশাপাশি নিজ নিজ এলাকায় চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীদের মাদক সহ আটক করে থানা পুলিশের হাতে তুলে দিয়ে ব্যাপক প্রশংসায় ভাসছে সদর উপজেলার কমিউনিটি পুলিশের সদস্যরা।

মূলত কমিউনিটি পুলিশিং ব্যবস্থা কমিউনিটির সদস্যগণ, সমাজের বিভিন্ন সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এবং পুলিশের অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে অপরাধ প্রতিরোধ ও জনগণের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ের লক্ষ্যে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালিত হয়। কমিউনিটি পুলিশিং মূলত একটি প্রতিরোধমূলক পুলিশি ব্যবস্থা। যার অংশ হিসেবে কমিউনিটি পুলিশিং কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন সদর উপজেলা কমিউনিটি পুলিশিং এর সভাপতি এড. সৈয়দ মোহাম্মদ রেজাউল করিম।

তিনি বলেন, “স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের সাথে একে অপরের পরিপূরক হয়ে সামাজিক দায়বত্বতা থেকে সমাজকে অপরাধমুক্ত করতে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে কমিউনিটি পুলিশিং এর সদস্যরা।”

এ বিষয়ে সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফরিদ উদ্দিন খন্দকার বলেন, “সমাজের অপরাধের কারণগুলো দূর করা পুলিশের একার পক্ষে সম্ভব নয় তাই এই কাজে অন্যান্য ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সাথে অংশীদারিত্ব প্রতিষ্ঠা করা গেলে সমাজ অপরাধমুক্ত করা সম্ভব।”

তিনি আরো বলেন, “কমিউনিটি পুলিশিং এর যাবতীয় কর্মকান্ড অপরাধ প্রতিরোধ তথা অপরাধ যাতে ঘটতে না পারে সেই লক্ষ্যে পরিচালিত হয়। কমিউনিটি পুলিশিং ব্যবস্থার মাধ্যমে পুলিশ জনগণকে নিজেরাই যাতে নিজ নিজ এলাকার অপরাধগুলো প্রতিরোধ করতে পারে তার জন্য জনগণকে আইনী পরামর্শ দেওয়া, অপরাধ সম্পর্কে সচেতন করা, অপরাধকর্ম সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য বা পরামর্শ দেওয়া ইত্যাদির মাধ্যমে ক্ষমতায়ন করে যাচ্ছে।”

সম্প্রতি সময়ে গলাকাটা ছেলেধরা গুজবের বিরুদ্ধে সদর উপজেলা কমিউনিটি পুলিশিং এর সদস্যরা যে ভাবে নিজ নিজ এলাকায় জনসচেতনা সৃষ্টি করেছে তা অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। নব গঠিত সদর উপজেলা কমিউনিটি পুলিশিং একঝাঁক তরুণ সদস্য স্বেচ্ছায় সুন্দর সমাজ নির্মাণে যে ভাবে এগিয়ে আসছে এটি সমাজ পরিবর্তনের অংশ। আইনের সঠিক সেবা নিশ্চিত করতে গতকাল অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কক্সবাজার (সদর সার্কেল) আদিবুল ইসলামের উপস্থিতিতে কক্সবাজার সদর উপজেলার আওতাধীন খুরুশকুল ইউনিয়ন কমিউনিটি পুলিশিং কর্তৃক আয়োজিত “ওপেন হাউস ডে ” খুরুশকুল ইউনিয়ন পরিষদের হলরুমে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

২৯ জুলাই বিকালে কমিউনিটি পুলিশিং খুরুশকুল ইউনিয়ন শাখার সভাপতি বোরহান উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক কাজী তামজিদ পাশার সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফরিদ উদ্দিন খন্দকার, খুরুশকুল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃজসিম উদ্দিন জসিম, কক্সবাজার সদর উপজেলা কমিউনিটি পুলিশিং এর সভাপতি এডঃ রেজাউল রহমান রেজা, কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি অপারেশন এন্ড কমিউনিটি পুলিশিং মোঃ ইয়াছিনসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।

এ বিষয়ে সদর উপজেলা কমিউনিটি পুলিশিং এর সাধারণ সম্পাদক আবদু রাজ্জাক মেম্বার বলেন, “কমিউনিটি পুলিশিং এর কর্যক্রম স্বেচ্ছায় পরিচালিত হয়ে আসছে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে এখানে চাওয়া পাওয়ার কিছুই নেই। তবে সমাজকে দেওয়ার আছে অনেক কিছু। নবীন প্রবীণদের সমন্বয়ে এবার একটি শক্তিশালী কমিটি গঠন করা হয়েছে। বলতে গেলে মেধাবীদের মেধাকে কাজে লাগিয়ে সদর উপজেলা কমিউনিটি পুলিশিং কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে যা ইতিমধ্যে দৃর্শ্যমান হয়েছে।”

তিনি আরো বলেন, “বিভিন্ন সময়ে আমাদের সদস্যরা ইয়াবাসহ মাদক ব্যবসায়ী ও গরু চোর সিন্ডিকেটের সমস্যদের আইনের আওতায় আনতে থানা পুলিশকে সহযোগী করেছে। যা প্রশংসা পেয়েছে সামাজিক পরিমন্ডলে।”

নব গঠিত সদর উপজেলা কমিউনিটি পুলিশিং এর সাংগঠনিক সম্পাদক এইচ এম নজরুল ইসলাম বলেন, “ইতিমধ্যে সদর উপজেলার আওতাধীন ১০ ইউনিয়ন কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং ৬ টি ইউনিয়নের ওয়ার্ড কমিটি গঠনের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বাকি ইউনিয়নের ওয়ার্ড গুলো আগামী মাসের মধ্যে গঠনের কাজ শেষ হবে।

তিনি বলেন, “স্বেচ্ছাসেবি এই কার্যক্রমের মাধ্যমে সমাজের অপরাধগুলো চিহ্নিত করে পুলিশ প্রশাসনকে সহযোগীতা করে একটি সুন্দর সমাজ গড়ার কাজকে এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে আমাদের প্রদান কাজ ও দায়িত্ব। আশাকরি নব গঠিত সদর উপজেলা কমিউনিটি পুলিশিং এর তরুন নেতৃত্বের মাধ্যমে সদর উপজেলার প্রতিটি অলিগলি মাদক ও অপরাধ মুক্ত করতে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখবে।”

নিউজটি শেয়ার করুন :