শিরোনাম

মিতু হত্যা মামলার খোজে মানবাধিকার কমিশন

এম.এস আরমান, নোয়াখালীঃ গত (১০নভেম্বর’১৯) তারিখে শ্বশুর বাড়ীতে রহস্যজনক ভাবে নিহত মিতু দাসের মামলার খোঁজ খবর নিতে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা ও দাগনভূঞা উপজেলা শাখার দায়ীত্বশীলগণ
১৪ ডিসেম্বর’১৯ দুপুর ১ টায় ফেনী জেলার দাগনভূঞা থানার অফিসার ইনর্চাজ আসলাম সিকদারের চেম্বারে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন মানবাধিকার কমিশনের প্রতিনিধি দল।

জানা যায় নোয়াখালীর কোম্পানীগ‌ঞ্জের দ‌রিদ্র পিতার একমাত্র মে‌য়ে মিতু রানী দাস (১৭) কে তার শশুর বা‌ড়ি‌তে নির্মমভা‌বে হত্যা করা হ‌য়ে‌ছে। ঘটনা‌টি ঘ‌টে‌ছে গত ১০ই ডি‌সেম্বর রোজ-মঙ্গলবার ফেনি দাগনভূঞা উপ‌জেলার উত্তর আলীপুর গ্রামের (বেকের বাজার) হারুন ডাক্তার বা‌ড়ি‌তে।
নিহতের মা রীনা রানী দাস দাগনভুঞা থানায় ৩ জনকে আসামী করে অভিযোগপত্র দাখিল করে। অভিযুক্তরা হলো, নিহতের দেবর শ্যমল চন্দ্র দাস প্রকাশ বাসু, শাশুড়ী সতী রানী দাস ও শশুর কিশোর কুমার দাস।
মঙ্গলবার সকাল ৮ টায় গৃহবধু মিতুকে আহত অবস্থায় ফেনীর কনসেপ্ট হাসপাতালে নিয়ে আসে পরে নিহত অবস্থায় শুশুর বাড়ীর লোকজন তাকে হাসপাতাল থেকে দাগনভুঞার গ্রামের বাড়ী নিয়ে যায়। পরে পুলিশ খবর পেয়ে লাশ থানায় নিয়ে যায়। মে‌য়ে‌টি গত বছর এসএসসি পরীক্ষা সম্পন্ন করার পর প্রায় ১০মাস পূর্বে ফেনীর দাগনভুঞা উপজেলার জায়লস্কর ইউপির (বেকের বাজার) উত্তর আলীপুর গ্রামের হারাধন ডাক্তার ধুপি বাড়ীর কিশোর কুমার দাসের পুত্র ডালিম কুমারের সাথে বিয়ে হয়। বেশকিছুদিন ধরে স্বামী ডালিম বিদেশ থাকার সুবাধে দেবর শ্যামল চন্দ্র দাস নিয়মিত যৌন হয়রানি করে আসছিলো। মে‌য়েটার পৈ‌ত্রিক বা‌ড়ি কোম্পানীগ‌ঞ্জ উপ‌জেলার ১নং সিরাজপুর ইউনিয়‌নের (৪নং ওয়ার্ড), দ‌ক্ষিণ বিরাহীমপুর গ্রা‌মের মোগরাপাড়া এলাকায় নান্টু মাষ্টা‌রের বা‌ড়ি। সে দ‌রিদ্র রন‌জিত চন্দ্র দা‌সের একমাত্র মে‌য়ে। গত বছর তা‌কে জায়গা জ‌মিন বি‌ক্রি ক‌রে বি‌য়ে দেওয়া হয়‌। তার স্বামী ডা‌লিম কুমার দাস বর্তমা‌নে প্রবা‌সে অা‌ছে ব‌লে জানা যায়। ঘটনার পর থে‌কে মে‌য়েটার ঘাতক দেবর পলাতক র‌য়ে‌ছে। প‌রিবার বিষয়‌টি নি‌য়ে রহস্যজনক অাচরন কর‌ছে। তা‌রা বিষয়‌টি‌কে অাত্নহত্যা ব‌লে চা‌লি‌য়ে দি‌তে চা‌চ্ছে। মে‌য়ে‌টির শরী‌রে অাঘা‌তের চিহ্ন পাওয়া গে‌ছে। গরীব বলে মিতু হত্যার বিচার নি‌য়ে সংকায় অা‌ছে প‌রিবার‌টি। জানা গে‌ছে, থানা থে‌কে লাশ অান‌তে তা‌দের দাবীকৃত ১০ হাজার টাকার জন্য সুদের উপর টাকা নি‌য়ে‌ছে।

মিতুর মা রীনা রানী কান্না জনিত কণ্ঠে জানান, আমার মেয়েকে তার দেবর শ্যামল প্রতিনিয়ত ব্লাক মেইল করতো। গতকাল তাকে নির্যাতন করেই হত্যা করা হয়েছে। নিহত মিতু’র ভাই মিশু চন্দ্র দাস জানান, এটি আত্মহত্যা না পরিকল্পিত হত্যাকান্ড। এ লোমহর্ষকর বর্ণনা দিতে গিয়ে সে বার বার কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। সে জানায়, তার বোন‌কে বি‌য়ের পরপরই দেবর শ্যামল চন্দ্র দাস যৌন হয়রানী ক‌রে আসছিল। আমরা তার স্বামী ডালিমকে অবহিত কর‌লে, সে আমার বোনকে বলে তুমি সৎ থাকলেই হবে। কিন্তু মঙ্গলবার সকাল ৮টায় আহত অবস্থায় আমার বোনকে হাসপাতা‌লে নি‌লে তারা মৃত ঘোষণা ক‌রে। তার শরীরে আঘাতের ছিন্ন রয়েছে। তা‌কে নির্যাতন ক‌রেই হত্যা করা হ‌য়ে‌ছে। আমি তাদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।

দাগনভুঞা থানার অফিসার ইনচার্জ আসলাম উদ্দিন জানান, ভিকটিম মিতু হাসাপাতালে মারা যায়, একটি অভিযোগ পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে। লাশ ময়নাতদন্ত শে‌ষে ধমীয় রী‌তি অনুযায়ী সৎকার করা হয়েছে।

অফিসার ইনর্চাজ আসলাম সিকদারের সাথে মামলার বিভিন্ন বিষয়ে আলাপ করা হয়
উনি মানবাধিকার কমিশনের প্রতিনিধি দলকে আসস্থ করে বলেন আমরা সকল থানায় ম্যাসেজ পাঠিয়ে দিয়েছি।
দোষী কোন প্রকারে বাঁচতে পারবে না তাকে ধরা দিতে হবে। আমরা আসমীদের গ্রেপ্তারে সব ধরনের ব্যবস্থা করেছি। ময়না তদন্তের রিপোর্ট আসার পর আরো কঠোর ব্যবস্থা নিবো।

এসময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন দাগনভূঞা উপজেলা শাখার সভাপতি আবু কায়েস রিপন,বসুর হাট পৌরসভা সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন বেলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক মহিবুর হক নাহিদ, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মো:গিয়াস উদ্দিন রুবেল, দপ্তর সম্পাদক মোহাম্মদ সায়েম ইব্রাহীম কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা শাখার প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ইমাম হোসেন খাঁন,
মানববার্তা পত্রিকার উপ সম্পাদক কিরন মিজি, গাইডেন্স ডিজিটাল সাইনের মালিক এমরান হোসেন পাটোয়ারী,বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন বসুর হাট পৌরসভা শাখার সদস্য তাজুল ইসলাম সাজু, নুর নবী রাকিব,
কার্তিক মজুমদার, আবু ছায়েদ মিঠু প্রমূখ।

নিউজটি শেয়ার করুন :