শিরোনাম

সিঙ্গাপুরে ভূমিষ্ঠ শিশু উদ্ধার করে প্রশংসায় ভাসছেন দুই বাংলাদেশি

নিজস্ব প্রতিবেদক:

পাটোয়ারী ও মোস্তফা কামাল নামের দুই বাংলাদেশি সিঙ্গাপুরে ময়লার স্তূপ (ডাস্ট চেম্বার) থেকে সদ্য ভূমিষ্ঠ একটি শিশু উদ্ধার করে প্রশংসায় ভাসছেন। সম্প্রতি সিঙ্গাপুরের বেদোক নর্থ স্ট্রিটের ব্লক ৫৩৪ এর কাছাকাছি ময়লা ফেলার চেম্বার থেকে শিশুর কান্নার শব্দ শুনতে পান ওই দুই বাংলাদেশি। তারা সুপারভাইজারের সহযোগিতায় শিশুটির জীবন বাঁচান।

শামীম পাটোয়ারী বলেন, ‘ডাস্ট চেম্বার থেকে হঠাৎ শিশুর কান্নার শব্দ শুনতে পাই। প্রথমে বুঝে উঠেতে পারিনি। ভেবেছিলাম খেলনা শিশুর আওয়াজ। পাশের সহকর্মীকে জিজ্ঞেস করা মাত্রই সেও বলে আমিও কান্না শুনতে পাচ্ছি। কাছে গিয়ে দেখি মোড়ানো একটি পত্রিকার ভেতর থেকে শব্দ আসছে। এরপর কাগজ খুলে দেখি প্লাস্টিকের ব্যাগে রক্তে ভেজা একটি শিশু’।

মোস্তফা কামাল বলেন, ‘ব্যাগের ভেতর থেকে কান্নার শব্দ আসছিল, যা দেখে আমরা ভয় পেয়ে যাই। পরে সঙ্গে সঙ্গে আমাদের সুপারভাইজারকে খবর দিই। সুপারভাইজারসহ আমরা ব্যাগটি খুলি’।

দ্রুত শিশুটিকে হাসপাতালে নেয়া হয়। এ খবর তাৎক্ষণিক দেশটিতে ছড়িয়ে পড়ে। সিঙ্গাপুরের জাতীয় পত্রিকায় নিউজও হয়। সিঙ্গাপুরিয়ানরা বাংলাদেশিদের কাজের প্রশংসা করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লেখালেখি করেন। অভিবাসী শ্রমিক কেন্দ্রের চেয়ারম্যান ইয়ে গুয়াত কাওয়াং দুই বাংলাদেশিকে মহৎ কাজের জন্য ‘এমডব্লিউসি’ পুরস্কার প্রদান করেন। পাশাপাশি দু’জনকে ৫শ ডলারের ভাউচার দেন।

ইয়েও বলেন, ‘তাদের এমন মহৎ কাজ দেখে আমরা অনুপ্রাণিত হয়েছি। তাই তাদের কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ আমাদের সামান্য উপহার। আশা করি বাংলাদেশিরা তাদের এমন মহৎ কাজ সবসময় করে যাবে। এ সময় তিনি অভিবাসী শ্রমিকদের প্রশংসা করেন।

তিনি বলেন, এজাতীয় কর্মকাণ্ড আমরা দেখতে চাই না। ময়লার স্তূপে সদ্য ভূমিষ্ঠ শিশুকে ফেলা যাওয়া সত্যিই অমানবিক। আমরা মনে করি এই পুরস্কারের উদ্দেশ্য কেবল এমন মহৎ কাজের জন্য নয়, অন্যকেও ভালো কাজে উদ্বুদ্ধ করা।

পুরস্কার পেয়ে শামিম ও মোস্তফা বলেন, বিদেশিদের কাছ থেকে পুরস্কার পেয়ে সত্যিই নিজেকে সম্মানিত বোধ করছি। কিছু পাবার আশায় ভালো কিছু করা যায় না। আমরা ভালো কিছু করেছি এবং একটি শিশুর জীবন বাঁচিয়েছি। বাচ্চাটির জীবন বাঁচিয়ে এখন খুব ভালো লাগছে।

এর আগে সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশি রাজীব কর্মস্থলের গাড়ি পার্কিং করার সময় মানিব্যাগসহ ১০ হাজার ডলার কুড়িয়ে পান, যা বাংলাদেশি টাকায় ৬ লাখের বেশি। রাজীবের এই সততার খবর সিঙ্গাপুরের কয়েকটি জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। তাকে ‘বাংলাদেশি হিরো’ বলে আখ্যায়িত করা হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন :