আনোয়ার হোসেন টিটু, বরিশাল বিশেষ প্রতিনিধি: আজ (৬ আগস্ট ১৯ইং) মঙ্গলবার, বিকেলে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগরীর উদ্যোগে ভারতের বিজেপি সরকার কর্তৃক সংবিধান পরিবর্তন করে কাশ্মীরীদের ন্যায্য অধিকার কেড়ে নেয়ার প্রতিবাদে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাব চত্ত্বরে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম বলেছেন, “ভারতবর্ষ যখন স্বাধীন হয় তখন বৃটিশ সরকার নিয়ম করে দিয়েছিল কাশ্মীর একটি স্বাতন্ত্র দেশ, এখানকার জনগণ সর্বাদিক থেকে স্বাধীন। এমনকি এখানে কেউ জমিজমা ক্রয়, বহিরাগতরা নাগরিকত্বও নিতে পারবে না। কিন্তু মোদি সরকার ৩৭০ ধারা পরিবর্তন করে নতুন করে সঙ্কট সৃষ্টি করেছে। কিন্তু ভারতের সংবিধানের ২-এর ক-খ ধারায় উল্লেখ আছে, কোনো দেশকে কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে নিতে হলে প্রেসিডেন্ট অর্ডিনেন্স জারি করবে, এবং কাশ্মীরের জনগণের মতামত নিবে। কিন্তু এখানে তা করা হয়নি। সম্পূর্ণ অবৈধভাবে তাদের মৌলিক অধিকার কেড়ে নিয়েছে।”
তিনি বলেন, “কাশ্মীর সঙ্কট শুধু কাশ্মীরেরই নয়, এ সঙ্কট বাংলাদেশেরও। এজন্য বাংলাদেশের জনগণকে প্রতিবাদমুখর হতে হবে।”
তিনি বলেন, “পাকিস্তানীরা যেভাবে আমাদের অধিকার কেড়ে নিয়েছিল, অনুরূপভাবে কাশ্মীরীদের অধিকারও মোদি সরকার কেড়ে নিয়েছে। সেখানে ১৪৪ ধারা জারি করেছে, স্কুল-কলেজ বন্ধ এমনকি ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়ে এক ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করে রেখেছে।”
মুফতী ফয়জুল করীম আরও বলেন, “আমরা ভারতবিরোধী নই, ভারতের নীতি-নৈতিকতা ও আদর্শের বিরোধী। মোদির এ অন্যায়ের বিরুদ্ধে ভারতের সর্বস্তরের জনগণ এবং বুদ্ধিজীবীগণ প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছেন, মোদির এই নীতি ভারতের গণতন্ত্রকে গলা কাটার শামিল এবং এতে করে ভারতই টুকরো টুকরো হবে।”
তিনি বলেন, “মোদি মুসলমানদের অধিকার কেড়ে নিয়ে তাদের উপর জুলুম নির্যাতন চালাচ্ছে। কাশ্মীর সাতচল্লিশের পর থেকে অগ্নিগর্ভ। বারবার রক্ত ঝরছে সাধারণ মানুষের। কাশ্মীরের আপামর জনতার মতামতকে উপেক্ষা করে ভারতের সংবিধান পরিবর্তনের মাধ্যমে নতুন সংকট সৃষ্টি করছে। এই সংকট নিরসনে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।”
আজ মঙ্গলবার বিকেলে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগরীর উদ্যোগে ভারতের বিজেপি সরকার কর্তৃক সংবিধান পরিবর্তন করে কাশ্মীরীদের ন্যায্য অধিকার কেড়ে নেয়ার প্রতিবাদে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাব চত্ত্বরে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ পূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি মাওলানা ইমতিয়াজ আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভপূর্ব সমাবেশে বক্তব্য রাখেন দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, প্রচার সম্পাদক মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম, মুফতি দেলাওয়ার হোসাইন সাকী, মাওলানা এবিএম জাকারিয়া, মাওলানা আরিফুল ইসলাম, এড. এবিএম শেহাবুদ্দীন শেহাব, ফজলুল হক মৃধা, মুফতী ফরিদুল ইসলাম, ছাত্রনেতা শরীফুল ইসলাম রিয়াদ, নূরুল ইসলাম নাঈম প্রমুখ।
মুফতি ফয়জুল করীম আরও বলেন, “কাশ্মীরের মুসলিম রাজনৈতিক নেতাদের গ্রেফতার, গৃহবন্দি, সৈন্য সমাবেশের মাধ্যমে কাশ্মীরে মারাত্মক ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়েছে। হাজার হাজার মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ে পালিয়ে যাচ্ছে। জনগণের মৌলিক অধিকার চরম হুমকির মুখে। মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। এ ব্যাপারে বিশ্বনেতাদের উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন।”
পরে একটি বিশাল মিছিল জাতীয় প্রেসক্লাব কদম ফোয়ারা হয়ে পল্টন মোড়ে এসে সমাপ্ত করা হয়।
কর্মসূচি : কাশ্মীরীদের ন্যায্য অধিকার কেড়ে নেয়ার প্রতিবাদে ৯ আগস্ট জেলায় জেলায় বিক্ষোভ ও মসজিদে মসজিদে দোয়া কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।