ইখতিয়ার উদ্দীন আজাদ, বিশেষ সংবাদদাতা: অবশেষে বহুল আলোচিত ও রহস্যজনক মাদ্রাসা ছাত্রী আমেনা খাতুনের মৃত্যুর এক দিন অতিবাহিত হবার পরই শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের চাপে পুলিশ অভিযুক্তদের আটক করতে বাধ্য হন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলায় ষষ্ঠ শ্রেণির এক মাদ্রাসা ছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠেছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এ বিষয়ে নিহত ওই ছাত্রীর মা সেলিনা খাতুন বাদী হয়ে নবীনগর থানায় মাদ্রাসার অধ্যক্ষসহ ছয়জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেছেন। পুলিশ গ্রেপ্তারকৃতদের মঙ্গলবার আদালতে প্রেরণ করেছে।
জানা গেছে, নবীনগরের পার্শ্ববর্তী বাঞ্ছারামপুর উপজেলার কাঞ্চনপুর গ্রামের সৌদী প্রবাসি মমিনুল ইসলামের একমাত্র কন্যা আমেনা খাতুন (১২) নবীনগর উপজেলার সলিমগঞ্জে অবস্থিত জান্নাতুল ফেরদাউস মহিলা মাদ্রাসায় ষষ্ঠ শ্রেণিতে অধ্যয়ণ করতো। এলাকাবাসি জানান, ২০১৫ সালে প্রতিষ্ঠিত ওই মাদ্রাসায় প্রায় ২০০ ছাত্রী লেখাপড়া করতো। এদের মধ্যে যেই ৫০ জন ছাত্রী ওই মাদ্রাসার আবাসিক হোস্টেলে থেকে লেখাপড়া করতো, নিহত ছাত্রী আমেনা ছিলো তাদেরই একজন।
নিহতের মা সেলিনা খাতুনের অভিযোগ, ঘটনার দিন গত সোমবার সন্ধ্যায় জানতে পারি সলিমগঞ্জের ওই মাদ্রাসায় চতুর্থ তলার চিলি কোঠায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় আমার মেয়ের লাশ ঝুলে রয়েছে। পরে সেখানে ছুটে যাই।
পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি, মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মোস্তফা (৪০) বিকেলে আমার মেয়েকে ধর্ষণ করলে আমার মেয়ের ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়। পরে কয়েকজনের সহযোগিতায় আমার মেয়ের লাশটিকে চারতলার চিলিকোঠে নিয়ে ওড়নায় পেচিয়ে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রাখা হয়।
এ খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে উত্তেজিত জনতা ওই মাদ্রাসা প্রাঙ্গনে জড়ো হতে থাকে। পরে নবীনগর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
পরে নবীনগর থানার ওসি রনোজিত রায় ও বাঞ্ছারামপুর থানার ওসি সালাউদ্দিন চৌধুরী ঘটনাস্থলে ছুটে যান। পুলিশ নিহত ছাত্রীর লাশ উদ্ধার করে নবীনগর থানায় নিয়ে আসে। এ ঘটনায় পুলিশ অভিযুক্ত অধ্যক্ষ মাওলানা মোস্তফা (৪০) এবং ওই মাদ্রাসার শিক্ষক মাওলানা আনোয়ার হোসেন (৩০) মাওলানা আল আমীন (২৮) ও হাফেজ মো. ইউনুছ মিয়া (৬০) নামে এজাহারভুক্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করে।
নবীনগর থানার ওসি রনোজিত রায় বলেন, ‘নিহত ছাত্রীর লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় নিহত ছাত্রীর মা বাদী হয়ে মাদ্রাসার অধ্যক্ষসহ ছয়জনকে আসামি করে মামলা করেছেন। পুলিশ অধ্যক্ষসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে হাজির করেছে।’