আ স ম আবু তালেব, ঢাকা বিশেষ প্রতিনিধি: মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার ২ জন ব্যক্তি প্রাণঘাতী নভেল করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে রাজধানী ঢাকায় করুণ মৃত্যু ঘটেছে। জানা যায়, তাদের একজনের নাম হারুন বেপারী (৬২)। অত্র উপজেলার কনকসারসথইউনিয়নস্থ নাগেরহাট গ্রামে তার বাড়ি।
অপর জন হলেন আব্দুল ওহাব দেওয়ান (৬০)। তার বাড়ি একই ইউনিয়নের কনকসার গ্রামে। উভয়ের বাড়ি সংলগ্ন ১০ টি বাড়ি লৌহজং উপজেলা প্রশাসন লকডাউন ঘোষণা করেছেন। আইইডিসিআর মৃত্যু ব্যক্তিদের নমুনা পরীক্ষা করে করোনা ভাইরাসের পজিটিভ পেয়েছেন বলে মৃতদের স্বজনেরা জানিয়েছেন।
গত রোববার করোনায় মৃত হারুন বেপারীর লাশ গ্রামের বাড়ি নাগেরহাটে এনে গোসল করিয়ে হলদিয়া ইউনিয়নের সাতঘড়িয়া কবরস্থানে দাফন করা হয়। যিনি গোসল করিয়েছেন ও জানাযায় শরীক হয়েছেন তারা প্রত্যেকেই করোনার ঝুঁকিতে আছেন বলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার শামীম আহমেদ জানিয়েছেন।
অপরদিকে সর্বনাশা করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত ব্যক্তি ওহাব দেওয়ান গত শুক্রবার ঢাকা থেকে লৌহজংয়ে গ্রামের বাড়ি এসে গরীব- অসহায় আত্মীয় স্বজনদের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী দান করে এই দিনই ঢাকায় ফিরে সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হন।
করোনা ভাইরাসের উপসর্গ থাকা সত্বেও তিনি কোন চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করেননি। যার ফলে ওহাব দেওয়ানের গত সোমবার মৃত্যু ঘটে। আইইডিসিআর মরহুমের ঢাকার বাসায় এসে নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে গিয়ে করোনা ভাইরাসের পজেটিভ রিপোর্ট দেয়। ওহাব দেওয়ানকে ঢাকায় দাফন করা হয়েছে।
নভেল ভাইরাস করোনায় ওহাব দেওয়ানের মৃত্যুতে লৌহজংয়ের সর্বত্র আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। কেননা তিন দিন পূর্বে ওহাবের নিকট থেকে ত্রাণ সামগ্রী নেওয়া লোকজন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন কিনা এ স্থানীয়দের মনে বারবার উদয় হচ্ছে। করোনায় আক্রান্ত হয়ে দুজনের মৃত্যুর ঘটনার প্রেক্ষিতে লৌহজং উপজেলা প্রশাসন মৃত ওহাব দেওয়ানের কনকসারের ৭ প্রতিবেশীর বাড়িকে যথাক্রমে এ মাসের ১৮ ও ১৬ তারিখ পযর্ন্ত লকডাউন ঘোষণা করেছেন।
গত মঙ্গলবার দুপুর উপজেলা চেয়ারম্যান জনাব ওসমান গণি তালুকদার , লৌহজং থানা নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব কাবিরুল ইসলাম খান, মৃতদের গ্রামের বাড়িতে সরেজমিনে গিয়ে উক্ত ঘোষণা দেন। প্রতিবেশীদের নির্ধারিত সময়ের পূর্বে বাড়ির বাইরে বের না হতে সতর্ক করে দেন। ও লকডাউন শেষ না হওয়া পযর্ন্ত অবরুদ্ধের খাদ্য সামগ্রী সহ যে কোন সহযোগীতা করার আশ্বাস দেন তারা।
এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তারা জনাব ডাক্তার মোহাম্মদ শামীম আহমেদ, কনককসার ইউপি চেয়ারম্যান জনাব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ, উপজেলা বিআরডিবির চেয়ারম্যান মুনির হোসেন মোড়ল, লৌহজং থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সেলিম রেজা, পরিদর্শক (অপারেশন) হাফিজুর রহমান, ইউনিয়ন পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক শিমুল কুমার দে ও স্বাস্থ্য কর্মী দিলীপ কুমার প্রমূখ।