শিরোনাম

জাটকা শিকারের উৎসব রায়পুরে, প্রশাসন চুপ!

 

জেলা প্রতিনিধি লক্ষ্মীপুর :
জাটকা ধরায় নিষেধাজ্ঞা চলছে মেঘনায়। কিন্তু লক্ষীপুরের বিভিন্ন মাছঘাটে দেখা গেছে জাটকা বিক্রির ধুম। মৎস্য বিভাগ আর কোস্টগার্ডের দায়সারা কাজকেই দোষারোপ করছেন সচেতন মহল।

এদিকে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব কমাতে লক্ষীপুরে লকডাউন চলছে। সঙ্গরোধে থাকতে বলা হয়েছে মানুষজনকে। বাজারে গেলেও নিরাপদ দূরত্বে থাকার জন্য বলা হয়েছে। হাটবাজারে দোকানের সামনে সুরক্ষা বৃত্তও এঁকে দিয়েছে প্রশাসন। কিন্তু কে শুনে কার কথা!

জেলার রায়পুর উপজেলার উত্তর চরবংশী খাসেরহাট বাজারে মঙ্গলবার (১৪ এপ্রিল) সকালের চিত্র ছিল জমে উঠা মেলার মতো। এক জনের গায়ের সঙ্গে অন্যজনের গা লেগে আছে। মনে হচ্ছে যেন প্রশাসনের অনুমতি পেয়ে জাটকার মেলা চলছে। জাটকা শিকারে নিষেধাজ্ঞা আর করোনা ক্রান্তিকালে সঙ্গরোধে থাকতে হলেও ইউনিয়ন পরিষদ প্রশাসন এনিয়ে কোন উদ্যোগ নিচ্ছেন না বলে অভিযোগ রয়েছে। মেঘনা উপকূলীয় এলাকার প্রত্যেকটি ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসন জাটকা সংরক্ষণে দায়িত্ব পালনের কথা ছিল। কিন্তু এখানে চিত্র ভিন্ন। প্রশাসনও চুপচাপ রয়েছে।

অভিযোগ রয়েছে, কোস্টগার্ডের দায়সারা কাজের কারণে চরভৈরবের রুহুল আমিন মেম্বারের তত্ত¡াবধানে একটি সিন্ডিকেট মাছ শিকারে কাজ করছে। এই সিন্ডিকেটে রায়পুরের মেঘনা নদীর চরগজারিয়া গ্রামের রুবেল মাঝি ও শাহ আলম মাঝি জড়িত রয়েছে। নদীতে মাছ শিকারের পর একটি ভাগ কোস্টগার্ডকে দেওয়া হয় বলে স্থানীয়রা দাবি করছেন।

এ ব্যাপারে এক দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, সরকারি নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন নদীতে মাছ শিকারের দায়ে কারাদন্ড বা অর্থদন্ড এবং উভয় দন্ড দেওয়ার বিধান রয়েছে। সেক্ষেত্রে সরকারি নিষেধাজ্ঞা জারি করতে মৎস্য বিভাগ, কোস্টগার্ড, পুলিশ প্রশাসনের পাশাপাশি নদী এলাকার ইউপি প্রশাসনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু এ দায়িত্ব কেউই ঠিক মতো পালন করছে না। সবাই দায়সারাভাবে কাজ করছে। চলতি পথে কাউকে মাছ ধরতে দেখা গেলে শুধু তাদের জন্যই ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

উত্তর চরবংশী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল হোসেন বলেন, ‘খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থল গিয়েছি। কিন্তু কাউকে খুঁজে পায়নি। জেলেরা ভোরে মাছ বিক্রি করে পালিয়েছে। ইউপি মেম্বার ও চৌকিদারদের নিয়ে বৈঠক করবো এ ব্যাপারে সতর্ক থাকার জন্য। চাঁদপুরের চর ভৈরবের রুহুল আমিন মেম্বারসহ একটি সিন্ডিকেটের নৌকা রায়পুরে ঢুকে মাছ শিকার করে।

জানতে চাইলে রায়পুরের হায়দরঞ্জ ক্যাম্পের কন্টিজেন্ট কমান্ডার (সিসি) আবদুর রহমান বলেন, ‘জাটকা সংরক্ষণে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। কার নৌকা কখন মাছ শিকার করতে যায়, সেটা আমরা জানি না। অভিযান চালিয়ে যাকেই নদীতে দেখতে পায়, সঙ্গে সঙ্গে তাদের আটক করা হয়। বাজারে জাটকা বিক্রি ও করোনা প্রাদুর্ভাব কমাতে সঙ্গরোধ নিশ্চিতে আমরা ছাড়াও পুলিশ প্রশাসন কাজ করা কথা রয়েছে।’

নিউজটি শেয়ার করুন :