শিরোনাম

প্রধানমন্ত্রীর কাছে মাদরাসা খুলে দেওয়ার আবেদন জানান: হা. মাও. তৈয়ব, চট্টগ্রাম

 

বিষয়: নুরানি মাদরাসা, হিফজখানা ও ইয়াতিম খানাসহ সকল প্রাইভেট মাদরাসা আগামী ০৫ মে থেকে খুলে দেয়া এবং মাদরাসার বিল্ডিং ভাড়া ও শিক্ষক-কর্মচারীদের মাসিক বেতন বাবৎ বিশেষ প্রণোদনা প্রদানের আবেদন।

বরাবর
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার।

মাধ্যমে: বিভাগীয় কমিশনার, চট্টগ্রাম।

মুহতারমা,
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।
যথাবিহিত সম্মান প্রদর্শনপূর্বক বিনীত আরজ এই যে, আপনি করোনা ভাইরাসের এই মহা সংকট মোকাবিলায় যে অসীম ধের্য, সাহস ও দৃঢ়তার সঙ্গে সমন্বিত পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন তা সত্যিই প্রশংসনীয়।

করোনা মহামারির ভয়াবহ প্রাদুর্ভাবের কারণে সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী গত ১৭ মার্চ থেকে বাংলাদেশের নুরানি মাদরাসা, হিফজখানা ও ইয়াতিম খানাসহ প্রায় ৫০ হাজার প্রাইভেট মাদরাসা বন্ধ রয়েছে।

মাননীয় মমতাময়ী নেত্রী,
আপনি অবশ্যই অবগত আছেন যে, সরকারি কোন অনুদান ছাড়া সম্পূর্ণ শিক্ষার্থীদের বেতন ও দানশীল ব্যাক্তিদের অনুদান নির্ভর এসব প্রাইভেট মাদরাসা বাংলাদেশের শিক্ষা ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রাখার পাশাপাশি দেশের বেকার সমস্যা দুরীকরণে ১০ লক্ষাধিক মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে।

এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষা গ্রহণ করছে প্রায় ৫০ লাখের বেশি শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে অধিকাংশ শিক্ষার্থীই মাদরাসার হোস্টেলে অবস্থান করে পড়া লেখা করে। তারা মাদরাসা ক্যাম্পাসের বাইরে যাওয়া আসা বা বাইরের কারো সাথে দেখা সাক্ষাৎ করার সুযোগ পায়না। কিন্তু মাদরাসা বন্ধ থাকায় এই বিপুল সংখ্যক বাধ্য হয়ে শিক্ষার্থী বাসা বাড়িতে চলে যায়।

সম্মানিত অভিভাবকদের অভিযোগ তারা তাদের বাচ্চাদের পড়াশোনায় যেমন বসাতে পারছেন না তেমনি এই দীর্ঘ সময় ঘরে আটকিয়ে রাখতেও অপারগ হয়ে পড়েছে। শিক্ষার্থীরা বাইরে-রাস্তায় ঘোরাঘুরি করছে, সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলছেনা।

বিশেষ করে যেসব শিক্ষার্থী হিফজখানায় পড়তো তারা কুরআন মাজিদের হিফজ ভুলে যেতে বসেছে। আর ইয়াতিম শিক্ষার্থীরা যাদের মাদরাসার হোস্টেলে থাকা ছাড়া আর কোথাও আশ্রয় নেই তারা বেশি সমস্যায় পড়েছে। শিক্ষার্থীরা বাইরে ঘোরাঘুরির কারণে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি যেমন বাড়ছে তেমনি তাদের পড়ালেখার অপূরণীয় ক্ষতি সাধিত হচ্ছে।

তাছাড়া ভাড়া ঘর/বিল্ডিংয়ে পরিচালিত সম্পূর্ণ শিক্ষার্থীদের বেতন-খোরাকী নির্ভর এসব প্রাইভেট মাদরাসা বিগত ২ মাস যাবৎ বন্ধ থাকায় মাদরাসার বিল্ডিং ভাড়া এবং শিক্ষক কর্মচারীর বেতন প্রদানে সম্পূর্ণ অপারগ হয়ে পড়েছে। বেতন না পেয়ে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারীরা অর্থনৈতিক মহা সংকটে পড়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে।

এভাবে চলতে থাকলে বাংলাদেশের নুরানি মাদরাসা, হিফজখানা ও ইয়াতিম খানাসহ প্রায় ৫০ হাজার প্রাইভেট কাওমি মাদরাসা বন্ধ হয়ে যাবে। এতে প্রায় ১০ লক্ষ শিক্ষক কর্মচারী বেকার হওয়ার পাশাপাশি প্রায় ৫০ লক্ষ শিক্ষার্থীর পড়া লেখা বন্ধ হয়ে যাওয়ার বিরাট আশংকা তৈরি হয়েছে।

প্রাইভেট মাদরাসা সমূহের এই মহা সংকট থেকে উত্তরণের জন্য প্রাইভেট মাদরাসা সমূহ খুলে দিলে সকল স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রতিষ্ঠান পরিচালনার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে আমরা বদ্ধপরিকর।

উল্লেখ্য যে, চট্টগ্রাম মহানগরীতে পাঁচ শতাধিক প্রাইভেট মাদরাসায় শিক্ষক কর্মচারীর সংখ্যা সাড়ে বার হাজার এবং শিক্ষার্র্থীর সংখ্যা প্রায় এক লক্ষ। চট্টগ্রাম মহানগরীর প্রাইভেট মাদরাসার বিল্ডিং ভাড়া ও শিক্ষক কর্মচারীর বেতন বাবৎ বিশেষ প্রণোদনা প্রদানে মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর বিশেষ সুদৃষ্টি কামনা করছি।

অতএব, আগামী ০৫ মে হতে দেশের নুরানি মাদরাসা, হিফজখানা ও ইয়াতিম খানাসহ প্রাইভেট মাদরাসা সমুহ খুলে দিয়ে ১০ লক্ষ শিক্ষক কর্মচারীকে বেকারত্বের হাত থেকে রক্ষা করার এবং ৫০ লক্ষ শিক্ষার্থীর পড়াশোনা অব্যাহত রাখার এবং প্রাইভেট মাদরাসা সমূহের বিল্ডিং ভাড়া ও শিক্ষক কর্মচারির মাসিক বেতন বাবৎ বিশেষ প্রণোদনা প্রদানের জন্য জোর আবেদন জানাই।

নিবেদক:
(আলহাজ মাওলানা হাফেজ মুহাম্মদ তৈয়ব)

♦ সভাপতি, চট্টগ্রাাম প্রাইভেট মাদরাসা এসোসিয়েশন।
♦ চেয়ারম্যান: তা’লীমুল কুরআন কমপ্লেক্স, চট্টগ্রাম।
♦ সভাপতি: হুফ্ফাজুল কুরআন ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ (চট্টগ্রাম বিভাগ)
♦ চেয়ারম্যান: আন্তর্জাতিক হাফেজে কুরআন সংস্থা বাংলাদেশ।
♦ সভাপতি : আন্তর্জাতিক কেরাত সম্মেলন সংস্থা

নিউজটি শেয়ার করুন :