মুহাম্মাদ আমানত উল্লাহ, কমলনগর (লক্ষ্মীপুর)
লক্ষ্মীপুরের কমলনগরের মেঘনা নদীর প্রধান শাখা খরস্রোতা ভুলুয়া নদী জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে প্রাণ শক্তি হারিয়ে এখন মরা খালে পরিনত হয়েছে।একসময়ে অথৈই পানি,উত্তাল ঢেউ,তীব্র স্রোতে এ নদীর বুকে শোভা পেতো পাল তোলা নৌকা।আজ সে নদীতে হাটু পানি।প্রমত্তা ভুলুয়া নদী পার হতে এখন নৌকার প্রয়োজন হয়না।হেঁটেই পাড়ি দেওয়া যায়। মৎস্য ভান্ডার নামে খ্যাত এই নদীতে সারা বছর থাকতো নানা প্রজাতির মাছের অবাধ বিচরণ। আর এখন এ নদী গো-চরণ ভুমি।নেই আশেপাশে জেলে পল্লী।মাত্র কয়েক বছরে নদী ভরাট করে ফেলেছেন ভুমি দস্যুরা।
ধু-ধু বালু চরে পরিনত হয়েছে নদী।সেই কারনে ভুলুয়া এখন নদী নয়,সরু খাল।বর্ষা মৌসুমে স্হায়ী জলবদ্ধতায় জমি আবাধ করা যায়না।শুস্ক মৌসুমে পানির অভাবে কৃষকদের হাহাকার।সম্ভাবনাময়ী এই নদী এখন অভিশপ্ত।প্রায় ২০মাইল দীর্ঘ এই নদী কমলনগর উপজেলার মেঘনা নদীর পুর্ব ও দক্ষিণ শাখা চরকাদিরা মৌজার পশ্চিম প্রান্ত থেকে নোয়াখালীর হাতিয়া চ্যানেল সংলগ্ন বাগুয়ার দোনায়।ভূমির উচ্ছতার কারনে গতি হারিয়ে ফেলেছে নদী।বর্ষা মৌসুমে কথিত প্রভাবশালীরা মাছ ধরার জন্য নদীর বিভিন্ন স্হানে বাঁধ দিয়ে পানির প্রবাহ বন্ধ করে দেয়।
স্থানীয় ভূমি দস্যুরা ভুলুয়া নদী দখল করে নদীর দু পাশে গড়ে তুলেছে বিশাল বিশাল মাছের প্রজেক্ট।এতে নদীর দু-পাশ দখল আর দুঃষনে নদী এখন মরা খালে পরিনত হয়েছে।সুত্র জানায় দেড় যুগের বেশী সময় ধরে ভুলুয়া নদীর জলবদ্ধতায় হাজার হাজার একর জমি অনাবাদি থাকায় স্হানীয় কৃষকরা প্রতি বছর ১৮লাখ মন আমন,আউশ ও সম্ভাব্য ইরি ফসল থেকে বঞ্চিত।দেড় যুগের আর্থিক ক্ষতি ১৬কোটি ২০লাখ টাকার মতো। এছাড়া পাট,আখ,ডাল,বাদাম, সয়াবিন,মরিছ তরু-তরকারীর ক্ষতির পরিমাণ এক হাজার কোটি টাকা।
স্হানীয়দের দাবী ভুলুয়া নদী খনন করে সেচ প্রকল্প চালু ও খননকৃত মাটি দিয়ে নদীর তীরে বাঁধ নির্মাণ করে ভুমিহীনদের পুর্নবাসন করা।চর কাদিরা,চরলরেন্স, তোরাবগন্জ, হাজিরহাট ও কালকিনি ইউনিয়নের মধ্যের খাল গুলো কেটে পূর্বের ভুলুয়া নদীর সাথে সংযোগ করা হলে জলবদ্ধতা সমস্যার পুরাপুরি সুরাহ হবে।আর এই জলবদ্ধতা সমস্যার সমাধান হলে ঐ এলাকায় শস্য-শ্যামলে ভরে উঠবে।স্হানীয়দের দাবি অভিশপ্ত ভুলুয়া নদী দখল মুক্ত করে খনন করলে দুইশ ৩০ হাজার একর জমি থেকে আসবে সোনালী ফসল। তেমনি নদী থেকে আসবে রুপালি মাছ।এতে এখানকার অর্থনীতিতে এক বৈপ্লবিক পরিবর্তনের ছোঁয়া লাগবে।
এসব দখলবাজদের কব্জা থেকে ঐতিহ্যবাহী ভুলুয়া নদী উদ্ব্যারে সংশ্লিষ্টদের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেন এলাকাবাসী।