শিরোনাম

দক্ষিণ চট্টগ্রাম পাহাড়ে পেয়ারার বাম্পার ফলন কৃষকের মুখে হাসি

তিতাস আল হোসাইন,বিশেষ প্রতিনিধি চট্টগ্রাম: দক্ষিণ চট্টগ্রামে পাহাড়ে পেয়ারার বাম্পার ফলন এবং দামও ভালো পাচ্ছে।এতে দক্ষিণ চট্টগ্রামে পেয়ারা চাষীদের মুখে হাসি মনোমুগ্ধকর হয়ে উটেছে। বিশেষ করে পটিয়া-চন্দনাইশের দুর্গম পাহাড়জুড়ে সবুজের সমারোহ পেয়ারা আর পেয়ারা।

বিশাল পাহাড়ি এলাকাজুড়ে রয়েছে শত শত পেয়ারা চাষের বাগান। এই ভরা মৌসুমে যেখানে শোভা পাচ্ছে পেয়ারা আর পেয়ারা দেখলে মন ঝুড়িয়ে যায়।পটিয়া- চন্দনাইশ,সাতকানিয়াসহ শত শত পেয়ারা চাষি রয়েছে। তবে পটিয়ার সিমান্ত কাঞ্চননগরের বিখ্যাত পেয়ারা বাগান রয়েছে। সকালে কাকডাকা ভোরেই এখন ব্যস্ততা সময় পার করছে পেয়ারা চাষিরা। তারা পেয়ারা গাছ থেকে পাড়ার জন্য কাজে কামলা নিয়ে গাছে ঝুলনো পেয়ারা কাঞ্চননগরের পাহাড়ি এলাকার বাগান থেকে এখন পেয়ারা সংগ্রহে ব্যস্ত ব্যাপারীরা।

ভোরে পেয়ারা সংগ্রহ করে সকাল ৮টার মধ্যে নিয়ে আসেন দক্ষিণ চট্টগ্রামের সবচেয়ে বড় পেয়ারার বাজার রৌশন হাটে।

এ ছাডাও পটিয়ার পুর্ব অঞ্চল পাহাড়ের শত শত একর জায়গায় পেয়ারা চাষ করে তারা বর্তমান স্বাবলম্বী। তাছাডাও বোয়ালখালী করল ডেঙ্গা পাহাড়ে পেয়ারার বাম্পার ফলন হয়েছে বলে জানান।

গতকাল বৃহস্পতিবার ২৯শে আগস্ট সকাল থেকেই বিকিকিনিতে জমজমাট পটিয়ার কমল মুন্সি হাট,চন্দ্র নাইশের রৌশন হাট,বোয়ালখালী কালাইয়া হাট,সাতকানিয়ার কেরানী হাট, দোহাজারী বাজার,খরনা রাস্তার মাথা,হাসিমপুর,পটিয়ার ভট্টাচার্য হাট,উত্তর শ্রীমাই,দক্ষিণ শ্রীমাই,মোলবী বাজার,দারগা হাটসহ একাধিক স্থানে লাল কাপড়ে মোড়ানো সারি সারি পেয়ারার ভার।বিক্রেতারা জানান,সকাল ১১টা পর্যন্ত চলবে এই পেয়ারা বিকিকিনি।

পটিয়ার কমল মুন্সি হাটে পেয়ারা বিক্রিতা আবুল কাসেম,রমিজ রফিক জানান দক্ষিণ চট্টগ্রামের পাহাড়ে পেয়ারা কুব সুস্বাদু। পেয়ারা রয়েছে প্রচুর ভিটামিন। দক্ষিণ চট্টগ্রামে পেয়ারা দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে। এবার তারা পেয়ারা চাষ করে ফলন ভালো হওয়ায় এবং মুল্য টিক মতন পাওয়ায় তারা আনন্দিত। তবে পেয়ারা সংরক্ষণে একটি দক্ষিণ চট্টগ্রামে হিমাগার নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছে দীর্ঘ দিন। সরকারি ভাবে উদ্যোগ নিয়ে হিমাগার নির্মাণ করলে লক্ষ লক্ষ টাকার পেয়ারা নষ্ট হওয়া থেকে রক্ষা পাবে বলে।অভিমত স্থানীয় পেয়ারা চাষীদের।চন্দনাইশের রসুন হাটে পেয়ারা নিয়ে অপেক্ষা করছেন বিক্রেতারা
স্বাদে-গন্ধে অতুলনীয় হওয়ায় কাঞ্চননগরের পেয়ারার আলাদা কদর রয়েছে। সুস্বাদু এই পেয়ারা সংগ্রহ করতে তাই চট্টগ্রাম নগরের ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি ছুটে আসেন চকরিয়া, বাঁশখালী, আনোয়ারা, সীতাকুণ্ডসহ বিভিন্ন উপজেলার ব্যবসায়ীরা।

এখানে পেয়ারা বিক্রির পদ্ধতিটা একটু ভিন্ন। ডজন কিংবা কেজিতে নয়, এখানে পেয়ারা বিক্রি হয় ভার হিসেবে! বিক্রেতারা কোনো ভারের দাম হাঁকেন একহাজার টাকা, আবার কোনোটির ১ হাজার ৬শ’ টাকা থেকে দুই হাজার টাকা। পেয়ারার সাইজ অনুযায়ী পেয়ারার এই দাম হাঁকেন তারা।বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা ব্যবসায়ীরা দর কষাকষি করে পেয়ারা কিনেন। ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি অনেকে শখ করেও এখানে আসেন কাঞ্চননগরের পেয়ারা স্বাদ পেতে।চলছে কাপড়ের থলিতে পেয়ারা ভরার কাজ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়,শুধু চন্দনাইশ উপজেলার কাঞ্চনাবাদ, ছৈয়দাবাদ ও লালুটিয়া পাহাড়ে ছোট-বড় মিলিয়ে ৮০০থেকে একহাজার পেয়ারা বাগান রয়েছে। এসব বাগানের মোট আয়তন প্রায় ৫শত হেক্টর। এসব বাগানে উৎপাদিত পেয়ারা বিক্রির জন্য নিয়ে যাওয়া হশ দক্ষিণ চট্টগ্রামে রৌশন হাট,কমল মুন্সি হাট সহ বিভিন্ন উপজেলার আশপাশের হাটে।

রৌশন হাটের পেয়ারার ব্যাপারী সাবেক মেম্বার শামসুল আলম,মোঃ ওসমান,বাদল,ফিরোজ জানান, ব্যাপারীরা শ্রাবণ মাস থেকে তিন মাসের জন্য পেয়ারা বাগানগুলো কিনে নেন। বাগানের পরিধি অনুযায়ী দাম নির্ধারিত হয়। তারপর পুরো সিজনে চলে পেয়ারা সংগ্রহ। সূর্য উঠতেই শ্রমিকরা লেগে পড়েন পেয়ারা সংগ্রহের কাজে। সকাল ৮টার মধ্যেই বাজারে নিয়ে আসা হয় ভারভর্তি পেয়ারা। এর মধ্য সারা চট্টগ্রামে পেয়ারা বিক্রিতারা বীর করতে দেখা যায়।এমন কি ঢাকা থেকে পেয়ারা বিক্রি তারা স্থানীয় ব্যাবসায়ীদের আগে থেকে দাদন দিয়ে রাখে পেয়ারা ক্ষয় করে ঢাকা বিক্রি করার জন্য।

নিউজটি শেয়ার করুন :