শিরোনাম

রামগতিতে কৃষকের ৪৭ বছরের মালিকানা জমি জবর দখলের চেষ্টা

আমানত উল্যাহ,রামগতি-কমলনগরঃ

লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চর পোঁড়াগাছা ইউনিয়নের আজাদনগর গ্রামের এক কৃষকের পঞ্চাশ বছরের ভোগদখল কৃত ও মালিকীয় জমি জবর দখল করে নেয়ার অপচেষ্টা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।এ ঘটনায় রামগতি সহকারী জজ আদালত লক্ষ্মীপুর বরাবর কৃষক আজিজুল হক বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়,কৃষক আজিজুল হক রামগতি থানা অন্তর্গত চরকলাকোপা মৌজার ৮৭ নম্বর খতিয়ান মুলে ২ একর ৪৬ জমি ৫-৮-১৯৭৩ ইং তারিখে ৮৪২৭ নম্বর ছাপ কবলা দলিল মুলে প্রিয়লাল কূরীর থেকে খরিদ সুত্রে মালিক হয়ে ভোগদখল করে আসছে। বিগত ২২ জানুয়ারী ২০০৪ সনে স্থানীয় মকবুল আহম্মেদের পুত্র হেলাল উদ্দিন,ভোলা জেলার বাসিন্দা আবুল কাশেমের পুত্র ইসমাইল হোসেন,মহিবুল হক তালুকদারের পুত্র বেলায়েত হোসেন মিলে উক্ত জমির ৫৩২ নম্বর খতিয়ান মুলে ভুয়া দলিল তৈরি করে গোপনে জমা-খারিজ ও নাম জারি করিয়ে নেয়।

পরে বিষয়টি জানত পেরে অবৈধভাবে সৃজনকৃত ৫৩২ নম্বর খতিয়ান ও চক্রান্তকারি হেলাল উদ্দিন, ইসমাইল হোসেন, আহাম্মদ উল্লাহ,বেলায়েত হোসেন ও তার স্ত্রী খাদিজা বেগমের বিরুদ্ধে গত ২৬ সেপ্টেম্বর ১৯ ইং তারিখে রামগতি সহকারী জজ লক্ষ্মীপুর বিজ্ঞ আদালতে মামলা করে কৃষক আজিজুল হক। মামলার বিবাদীগণ কৃষক আজিজুল হক গংদেরকে উক্ত জমি থেকে বেদখল করতে সৃজনকৃত ভূয়া দলিল মূলে আদালতে পাল্টা মামলা দায়ের করে।

এ বিষয়ে কৃষক আজিজুল হকের পুত্র গিয়াস উদ্দিন বলেন,১৯৭৩ ইং সনে খরিদ সূত্রে প্রিয়লাল কূরীর থেকে ২ একর ৪৬ জমি ক্রয় করে তার পিতা আজিজুল হক।সেই থেকে আজ ৪৭ বছর আমরা একান্নভূক্ত পরিবার ওই জমিতে দখল পুর্বক চাষাবাদ ও মাছের প্রজেক্ট করে মৎস্য চাষ করে আসছি।

এবং নিয়মানুযায়ী দালিলিক প্রমাণাদিও আছে। বর্তমানে ঐ জমির একাংশে আজিজুল হক ও গিয়াসউদ্দিন গংদের মাছের প্রজেক্ট রয়েছে।অন্য অংশে ধান চাষ করেন তারা। এদিকে প্রতিপক্ষরা উক্ত জমি নিয়ে আদালতে একটি দেওয়ানি মামলা করে বিষয়টি গোপন রাখা সহ ওই জমির প্রকৃত মালিক ও দখলে আছে জানিয়ে রামগতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর জমি পরিমাপ করে মালিকানা বুজিয়ে দেয়ার আবেদন করেন। নির্দেশ পেয়ে উপজেলা ভূমি অফিসের (সার্ভেয়ার) মো:সাখাওয়াত হোসেন গত ২২( সেপ্টেম্বর) মঙ্গলবার উক্ত জমি পরিদর্শন করেন।

এসময় কয়েকশ গ্রামবাসী জড়ো হয়ে সার্ভেয়ারকে বলেন, প্রকৃত জমির মালিক কৃষক আজিজুল হক গং।তাছাড়া বিগত ৫০ বছর ধরে ভোগ দখলেও রয়েছেন তারা। এসময় গ্রামের কয়েকজন নিরপেক্ষ লোকজনের স্বাক্ষ প্রমান গ্রহন করেন সার্ভেয়ার মো:সাখাওয়াত হোসেন।তাতে কয়েকজন বয়স্ক লোক জানান দীর্ঘ অনেক বছর থেকে এই জমি আজিজুল হক গংরা চাষাবাদ করতে দেখেছেন তারা।এ বিষয়ে জানতে চাইলে কৃষক আজিজুল হক বলেন,খরিদসূত্রে ২ একর ৪৬ জমির প্রকৃত মালিক আমি। এ জমি নিয়ে চক্রান্তকারীরা আদালতে একটি মিথ্যা মামলা করেছে। এ নিয়ে আদালতে দেওয়ানী মামলা চলমান মুহুর্তে কি কারনে জমি পরিদর্শন চলছে কিছুই বুজে উঠতে পারছিনা।

এ বিষয়ে প্রতিপক্ষদ্বয়ের সাথে একাধিকবার চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি। উপজেলা ভূমি অফিস( সার্ভেয়ার) মো: সাখাওয়াত হোসেন বলেন,ইউএনও’র নির্দেশ পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। রামগতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)আবদুল মোমেন বলেন,ভোগদখলকৃত জমির জটিলতা নিরসন ও পরিমাপ বিষয়ে সহায়তা চেয়ে লিখিত আবেদনের প্রেক্ষিতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জানানোর জন্য সার্ভেয়ারকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। রিপোর্ট পেলে ব্যাবস্থা নেয়ার বিষয়ে জানান তিনি।

নিউজটি শেয়ার করুন :