আ সম আবুতালেব, ঢাকা বিশেষ প্রতিনিধি: বিক্রমপুর তথা মুন্সীগঞ্জ বাংলাদেশের একটি অন্যতম ঐতিহাসিক এলাকা। ইতিহাস,ঐতিহ্য,প্রাচীন নিদর্শন আর বহু কীর্তিমান মনীষির স্মৃতিধন্য মুন্সীগঞ্জ জেলা। এ জেলা প্রাচীন বাংলার গৌরবময় স্থান বিক্রমপুরের অংশ, মুন্সীগঞ্জ জেলার প্রাচীন নিদর্শন সমূহের সাথে জড়িয়ে আছে হাজারো বছরের ঐতিহ্য।
সুপ্রাচীন কাল থেকেই এই অঞ্চল বৌদ্ধ জ্ঞান চর্চার জন্য এবং পরবর্তীতে সাংস্কৃতিক প্রভাবের জন্য সুপরিচিত,মুন্সীগঞ্জের প্রাচীন নাম বিক্রমপুর। এ জেলার উত্তরে ঢাকা ও নারায়নগঞ্জ জেলা, দক্ষিণে ফরিদপুর জেলা, পূর্বে মেঘনা নদী ও কুমিল্লা জেলা এবং পশ্চিমে পদ্মা নদী ও ফরিদপুর জেলা অবস্থিত ।জেলার মধ্য দিয়ে পদ্মা,মেঘনা, শীতলক্ষা,ধলেশ্বরী নদী প্রবাহিত হওয়ায় সৌন্দর্য যেনো বেরে গেছে বহুগুণ।
জেলায় রয়েছে কৃতী ব্যক্তিত্ব অতীশ দীপঙ্কর, লেখক ইমদাদুল হক মিলন, চলচ্চিত্র পরিচালক চাষী নজরুল ইসলাম, বিজ্ঞানী জগদীশ চন্দ্র বসু, ইংলিশ চ্যানেল জয়ী সাঁতারু ব্রজেন দাস, ভাষাবিদ লেখক হুমায়ুন আজাদ, লেখক মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজনীতি বিদ চিত্তরঞ্জন দাস, কবি বুদ্ধদেব বসু, ঔপন্যাসিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়। জেলার রয়েছে বেশ কিছু ঐতিহাসিক দর্শনীয় স্থান সমূহ,যেমন ইদ্রাকপুর কেল্লা,বাবা আদম শহীদের মসজিদ,পন্ডিত অতীশ দীপঙ্করের ভিটা, নাটেশ্বরে প্রচীন বৌদ্ধ বিহার,জমিদার যদুনাথ রায়ের বাড়ি বর্তমান বিক্রমপুর যাদুঘর,হাসাড়া দরগা,রামপালের দিঘী,রাজা বল্লাল সেনের ভিটা, হরিশ চন্দ্রের দিঘী, রাজা শ্রীনাথের বাড়ী, স্যার জগদীশ চন্দ্র বসুর বাড়ী, সোনারং জোড়া মঠ,কোদাল ধোয়ার দিঘী,পদ্মা রিসোর্ট,মাওয়া রিসোর্ট,বেজগাও কাঠ টিনের তৈরি তিন তালা ঘর,পদ্মার চর,মাওয়া-শিমুলীয়া ফেরী ঘাট, শ্যামসিদ্ধি মঠ ইত্যাদি।
পর্যটন একটি শিল্প। প্রকৃতি পাগল মানুষ সময়-সুযোগ পেলেই পর্যটনের নেশায় ঘুরে বেড়ায়। তাই পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ পর্যটকের আকর্ষণ বাড়ানোর জন্য সযত্নে রক্ষা করছেন ঐতিহাসিক পুরাকীর্তি, প্রত্ন-নিদর্শনসমূহ, গড়ে তুলছেন নিত্য-নতুন আকর্ষণীয় কীর্তিসমূহ। স্বচক্ষে জ্ঞান আহরণ ও চিত্ত বিনোদনের জন্য মানুষ তাই দেখতে ছুটে যাচ্ছে-আসছে। ভ্রমণের ফলে পরিচিত হচ্ছে ভিন্ন প্রকৃতির সঙ্গে। নিজ দেশ থেকে অন্য দেশে পাড়ি দেওয়া, থাকা-খাওয়া, বিনোদন সবকিছুর খরচ বহন করতে হয় নিজেকেই। তার ব্যয় করা অর্থই হয় অন্য দেশের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের উৎস। কাজেই যেকোনো দেশের জন্য পর্যটন শিল্পে বিনিয়োগ একটি লাভজনক ব্যাপার।
পর্যটকদের যাতায়াত, নিরাপত্তা, থাকা-খাওয়ার সুবিধাসহ সবকিছুর সুবন্দোবস্ত থাকা দরকার।শহর, উপজেলাগুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, পর্যটকদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা ইত্যাদি নিশ্চিত করা গেলে মুন্সীগঞ্জকে পর্যটনের ভালো ভবিষ্যৎ আশা করা যেতে পারে। মুন্সীগঞ্জ জেলাকে পর্যটন নগরী হিসেবে প্রতিষ্টার ব্যপারে পর্যটন কর্পেরেশনে প্রতি দৃষ্টি আকর্ষন চায় স্থানীয় লোকজন।